৬ দিন ধরে বিদ্যুৎহীন বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ

মেহেন্দিগঞ্জে গজারিয়া নদীর তলদেশে বৈদ্যুতিক ক্যাবল মেরামতে কাজ করছেন ডুবুরিরা। ছবি: সংগৃহীত

গজারিয়া নদীর তলদেশের বিদ্যুতের কেব্‌ল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় টানা ছয় দিন ধরে বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন রয়েছে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা। এতে উপজেলার প্রায় চার লাখ বাসিন্দা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। বিদ্যুৎ না থাকায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা; ভেঙে পড়েছে স্বাস্থ্যসেবা, পানি সরবরাহ, স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য ও মোবাইল যোগাযোগব্যবস্থা।

পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, গত সপ্তাহে মঙ্গলবার রাতে একটি মালবাহী জাহাজের নোঙরের আঘাতে কেব্‌লটি ছিঁড়ে যায়। এরপর থেকেই পুরো উপজেলা অন্ধকারে রয়েছে।

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি) সূত্র জানায়, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলাটি নদীবেষ্টিত ও মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় ২০০৪ সালে নলবুনিয়া এলাকায় গজারিয়া নদীর তলদেশ দিয়ে কেব্‌লের মাধ্যমে বিদ্যুৎ-সংযোগ দেওয়া হয়।

বিদ্যুৎ না থাকায় উপজেলার ১৭টি ইউনিয়নের বাসিন্দারা বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সংকটে পড়েছেন। ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে গেছে। বন্ধ হয়ে আছে ব্যাটারিচালিত যানবাহন। হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোর পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। রেফ্রিজারেটর না চলায় ইনসুলিন, টিকা ও অ্যান্টিবায়োটিকের মতো জরুরি ওষুধপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

উপজেলার ৫০ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা কার্যক্রমও প্রায় ভেঙে পড়েছে। মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ইন্টারনেট যোগাযোগও প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। স্থানীয় বাজার ও দোকানপাটে বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে আছে।

সঞ্জীব কর্মকার নামের একজন স্থানীয় ব্যবসায়ী বলেন, 'ভেবেছিলাম কয়েক ঘণ্টার মধ্যে বিদ্যুৎ চলে আসবে, কিন্তু পাঁচ দিন পেরিয়ে গেছে। জীবন অসহনীয় হয়ে উঠেছে।'

মেহেন্দিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহাম্মদ মফিজুল ইসলাম বলেন, 'গজারিয়া নদীর নিচের সাবমেরিন কেব্‌লটি সম্ভবত কোনো নৌযানের নোঙরের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। গত ২৬ আগস্ট থেকে ১৭টি ইউনিয়নের বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ আছে। ডুবুরিরা এরই মধ্যে ত্রুটি শনাক্ত করেছেন এবং মেরামতের কাজ চলছে। মেরামত সম্ভব না হলে নতুন কেব্‌ল স্থাপন করতে হবে।'

পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী যোগ করেন, ডুবুরিরা টানা চার দিন ধরে কাজ করছেন, কিন্তু সাড়ে চার কিলোমিটের বেশি প্রশস্ত এই নদীতে প্রবল স্রোত থাকায় মেরামতকাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

Farewell

Nation grieves as Khaleda Zia departs, leaving a legacy of unbreakable spirit

8h ago