একাংশে বিদ্যুৎহীন শেবাচিমে মোমের আলোয় অস্ত্রোপচার

মোমের আলোয় রোগীকে ইনজেকশন দিচ্ছেন নার্স। ছবি: সংগৃহীত

২ সপ্তাহেরও বেশি সময় আগে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের আঘাতে বিকল হয়ে পড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ঠিক না হওয়ায় বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে মোমের আলোয় অস্ত্রোপচারের কাজ চলছে। এমন পরিস্থিতিতে এক্স-রে, সিটিস্ক্যান ও আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষাও করাতে হচ্ছে বাইরে থেকে।

হাসপাতাল পরিচালনায় সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে হাসপাতালের সার্জারি ও রেডিওলজি বিভাগ পুরোপুরি বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। মেডিসিন বিভাগের কিছু অংশ এখনো বিদ্যুৎহীন। ফলে রেডিওলজি বিভাগের সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে। পাশাপাশি সরবরাহ ব্যবস্থা পুরোপুরি ঠিক না হওয়ায় হাসপাতালের ৪টি অস্ত্রোপচার কক্ষ জেনারেটর দিয়ে চললেও আরও ৪টি ছোট অস্ত্রোপচার কক্ষে চার্জার লাইট, টর্চ ও মোম ব্যবহার করে কাজ চালানো হচ্ছে।

এসবের বাইরে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে গত ৯ নভেম্বর হাসপাতালের মিডিসিন বিভাগের আউটডোর, টিকাদান কেন্দ্র ও গাইনি বিভাগের বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ হয়ে।

২ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে হাসপাতালের একাংশ বিদ্যুৎহীন। ছবি: সংগৃহীত

সার্জারি ইউনিটে কর্মরত নার্স মিতা বাড়ৈ এ বিষয়ে বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় রাতের দিকে রোগীদের ইনজেকশন দিতে অসুবিধা হয়। টর্চ ও মোমবাতি জ্বালিয়ে সব কাজ করতে হয় আমাদের। এমনকি মিনি অপারেশন থিয়েটারে অপারেশনের কাজও চলছে মোমবাতি জ্বালিয়ে।

সার্জারি ইউনিটে ভর্তি এক রোগী জানান, 'সন্ধ্যা থেকেই ইউনিটটি পুরোপুরি অন্ধকার হয়ে যায়। মোবাইলে চার্জ দিতে পারি না।'

হাসপাতালের উপপরিচালক মনিরুজ্জামান শাহীনের ভাষ্য, হাসপাতালের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন ৫০ বছরের পুরোনো। সরবরাহ লাইনে ত্রুটি থাকায় গত ৩ বছরে এখানে ছোট-বড় ৩টি অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। কর্তৃপক্ষকে বারবার অবহিত করা সত্ত্বেও সমস্যার সমাধান হয়নি।

হাসপাতালের পরিচালক সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ দফায় সমস্যা শুরু হয়ছে গত ২৪ অক্টোবর থেকে। আমরা অতিরিক্ত জেনারেটর ব্যবহার করছি। কিন্তু তা দিয়ে হাসপাতালের পুরো এলাকা কাভার করা সম্ভব না।'

হাসপাতালের বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনটি ৫০ বছরের পুরোনো। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, 'জেনারেটর দিয়ে জেনারেল অপারেশন থিয়েটারে জরুরি অপারেশনের কাজ চলছে। কিন্তু মিনি অপারেশন থিয়েটারে চার্জার লাইট ব্যবহার করতে হচ্ছে।'

উদ্ভূত সমস্যার সমাধানে গত ১ নভেম্বর গণপূর্ত বিভাগের কেন্দ্রীয় ও বরিশাল অফিসে চিঠি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে হাসপাতালের পরিচালক বলেন, 'আমরা বিষয়টি বিভাগীয় কমিশনারকেও অভিহিত করেছি। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সুরহা হয়নি। আর সরববরাহ লাইন পরিবর্তনের জন্য অন্তত ১০টি চিঠি দিয়েছি।'

এ ব্যাপারে বরিশাল গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল ইসলাম বলেন, 'আন্ডারগ্রাউন্ডে পানি চলে আসায় পুরোনো বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন বিকল হয়ে পড়েছিল। এটি ঠিক করতে ৩০ লাখ টাকার বাজেট বরাদ্দ হয়েছে। ঢাকা থেকে ক্যাবল চলে এলেই কাজ শুরু হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

4h ago