চীন সীমান্তের ২ সড়ক বিদ্রোহীদের দখলে, হুমকির মুখে মিয়ানমারের অর্থনীতি

তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি, আরাকান আর্মি এবং মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি দাবি করেছে যে তারা চীনের সঙ্গে মিয়ানমারের সংযোগকারী বেশ কয়েকটি সামরিক পোস্ট এবং মূল রাস্তা দখল করেছে। ছবি: রয়টার্স

মিয়ানমারের শান রাজ্যের ৩টি জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী দীর্ঘদিন দেশটিতে ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের বিরোধিতা করে আসছে। সম্প্রতি বিদ্রোহীরা জান্তা সরকারের বেশ কয়েকটি সামরিক চৌকি, সীমান্ত পারাপার এবং রাস্তা দখল করে নিয়েছে।

এএফপি জানায়, বিদ্রোহীরা কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ ২টি রাস্তা অবরুদ্ধ করে রেখেছে। ওই সীমান্ত পারাপার ও রাস্তা ব্যবহার করে চীনের সঙ্গে স্থল বাণিজ্যের বেশিরভাগ পরিচালিত হয়।

দুই সপ্তাহ ধরে উত্তর শান রাজ্যজুড়ে সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের লড়াই চলছে। জাতিসংঘ জানায়, সংঘর্ষে প্রায় ৫০ হাজার লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ২০২১ সালে ক্ষমতা দখলের পর থেকে সেনা সরকারের কাছে এটাই সবচেয়ে গুরুতর সামরিক চ্যালেঞ্জ।

আরাকান আর্মি, মায়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি এবং তায়াং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির যোদ্ধারা ২৭ অক্টোবর তাদের আক্রমণ শুরু করার পর থেকে উত্তর শান রাজ্যের রাজধানী মিউজ অঞ্চল থেকে পণ্য পরিবহন বন্ধ হয়ে গেছে।

রাস্তা বন্ধ থাকায় ইতোমধ্যেই এর প্রভাব বাজারে পড়তে শুরু করেছে। পাশাপাশি জান্তা সরকারও সেখানে সৈন্য পাঠাতে পারছে না।

চীনের সীমান্তবর্তী মিউজ শহরের একজন বাসিন্দা এএফপিকে বলেছেন, '২৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে আমরা কোনো মালবাহী ট্রাককে পারাপার করতে দেখিনি। কোনো বাণিজ্য ক্রসিং চালু নেই। শহর থেকে নিয়মিত কামান ও গুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে।'

ওই সড়ক দিয়ে দিনে কয়েকশ ট্রাক ফল ও সবজি নিয়ে মিয়ানমার থেকে চীনে যায়। পাশাপাশি চীন থেকে ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, ওষুধ ও ভোগ্যপণ্য মিয়ানমারে আসে।

প্রায় ১৬০ কিলোমিটার (১০০ মাইল) দূরে লাশিও শহরেও এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। সেখানকার এক বাসিন্দা বলেন, 'আগে এক বস্তা চালের দাম ছিল ১ লাখ ৬০ হাজার কিয়াট (৭৬ ডলার)। এখন এর দাম ১ লাখ ৯০ হাজার কিয়াট। যদি সংঘাত চলতে থাকে, তাহলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হবে।'

চীনের ইউনান প্রদেশের সীমান্তের আরেকটি কেন্দ্র চিনশওয়েহাও বিদ্রোহীদের দখলে রয়েছে। গত সপ্তাহে, এমএনডিএএ সীমান্ত গেটে তাদের পতাকা উত্তোলনের ভিডিও পোস্ট করেছে। সামরিক সরকার পরে স্বীকার করে যে তারা শহরটির নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে।

দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত মিয়ানমারের প্রতিবেশীদের সঙ্গে সীমান্ত বাণিজ্যের ৫.৩২ বিলিয়ন ডলারের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি চিনশওয়েহা এবং মিউজ ক্রসিং থেকে এসেছে।

Comments

The Daily Star  | English

'Shoot directly': Hasina’s order and deadly aftermath

Months-long investigation by The Daily Star indicates state forces increased deployment of lethal weapons after the ousted PM authorised their use

1d ago