হামাসকে ‘স্বাধীনতাকামী’ বলায় হারেৎজ বর্জনের হিড়িক

পত্রিকার স্ট্যান্ডে অন্যান্য পত্রিকার সঙ্গে হারেৎজের কপি। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
পত্রিকার স্ট্যান্ডে অন্যান্য পত্রিকার সঙ্গে হারেৎজের কপি। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

গভীর সংকটে পড়েছে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎজ। সম্পাদক ও প্রকাশক অ্যামোস শকেনের এক মন্তব্যের জেরে ইসরায়েলে গণহারে বয়কটের মুখে পড়েছে এই অনলাইন ও প্রিন্টভিত্তিক গণমাধ্যম।

আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে অপর ইসরায়েলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট।

প্রলাশক শকেন তার এক লেখায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠন হামাসের কর্মীদের 'স্বাধিনতাকামী যোদ্ধা' বলে অভিহিত করায় ইসরায়েলিদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়। ইসরায়েলের সকল স্তরের মানুষ এই পত্রিকা বর্জন করতে শুরু করেন।

যারা এর প্রিন্ট ও অনলাইন সংস্করণে সাবস্ক্রাইব করেছিলেন, তারা গণহারে এই সাবস্ক্রিপশন বাতিলের আবেদন জানাতে শুরু করেন।

এই বিরুপ প্রতিক্রিয়ার মুখে শকেন তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয়েছেন। নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে নতুন বিবৃতি দিয়েছেন। কিন্তু তাতেও খুব একটা লাভ হয়নি।

বৃহস্পতিবারের পত্রিকায় এই বিতর্কিত মন্তব্য ছাপা হলে একাধিক সরকারি মন্ত্রণালয় থেকে সাবস্ক্রিপশন বাতিলের অনুরোধ আসে। প্রায় প্রতিটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে ১২ থেকে ১৫ বা তার চেয়েও বেশি সংখ্যক সাবস্ক্রিপশন করা ছিল। শুধু পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকেই ৯০টি সাবস্ক্রিপশন বাতিলের অনুরোধ এসেছে।

রোববার হারেৎজের অভ্যন্তরীন বৈঠকে সাবস্ক্রিপশন বাতিলের 'অস্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি' ও 'দ্রুতগতিতে বিজ্ঞাপন আয় হারানোর' বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা ও উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়।

সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে প্রিন্ট সংস্করণে। পুরনো অনেক গ্রাহক তাদের হকারকে এই পত্রিকা আর না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন। সব মিলিয়ে পত্রিকার পরিচালনা পর্ষদ বেশ উদ্বেগের মুখে পড়েছে।

হারেৎজ পড়তে পড়তে হেঁটে যাচ্ছেন এক পাঠক। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
হারেৎজ পড়তে পড়তে হেঁটে যাচ্ছেন এক পাঠক। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

শুধু সাবস্ক্রিপশনে না, বিজ্ঞাপনের দিক দিয়েও বড় আকারে ক্ষতির শিকার হয়েছে হারেৎজ। সরকারি ও বেসরকারি, উভয় উৎস থেকেই কমেছে বিজ্ঞাপন এবং আগামীতে কমতে থাকবে।

পত্রিকার অভ্যন্তরীণ সূত্রেরা জানান, 'এ ধরনের ঘটনা নজিরবিহীন।'

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ার পেছনে পত্রিকাটির অন্যতম স্বত্তাধিকারী লিওনিড নেভেজলিনের এক বিবৃতি বড় ভূমিকা রেখেছে বলে বিশ্লেষকরা মত দেন।

পেশায় ব্যবসায়ী লিওনিড নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে বলেন, 'এই পত্রিকার প্রকাশক হিসেবে অ্যামস শকেন ৭ অক্টোবরের ঘটনা ও চলমান যুদ্ধ নিয়ে যে মতামত প্রকাশ করেছেন, তার সঙ্গে পুরোপুরি দ্বিমত প্রকাশ করছি। লন্ডনে সম্পরতি হারেৎজ সম্মেলনে তিনি যে বিবৃতি দেন, তা বিস্ময়কর, অগ্রহণযোগ্য এবং অমানবিক। তিনি সেই ভয়ানক দিন ও চলমান যুদ্ধে প্রাণ হারানো এবং জিম্মি হওয়া মানুষের পরিবারের সদস্য এবং সার্বিকভাবে, সমগ্র ইসরায়েলি জনগোষ্ঠির প্রতি চরম অবমাননাকর আচরণ করেছেন।'

 

Comments