বাশার-পরবর্তী সিরিয়ায় যা ঘটতে পারে

বাশার আল আসাদের পতন
বাশারের পতনের পর বিদ্রোহীদের সঙ্গে জনতার উল্লাস। ছবি: রয়টার্স

ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে চেপে সিরিয়া ছেড়ে পালিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এটা এখন পুরনো খবর। আন্তর্জাতিক মহলসহ সবার চিন্তায় এখন সিরিয়ার ভবিষ্যত। সবাই জানতে চাইছেন, কি হতে চলেছে দেশটিতে। 

আজ রোববার এ বিষয়ে বিবিসি, আল জাজিরা ও সিএনএনে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সব মহল থেকে শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তর এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও জনগণের সুরক্ষার বিষয়টির ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। 

শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরে সহায়তা করবেন প্রধানমন্ত্রী

সিরিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল-জালালি জানিয়েছেন, সরকার 'জনমানুষের বেছে নেওয়া নেতৃত্বের সঙ্গে সহযোগিতা' করার জন্য প্রস্তুত। আজ সকালে পূর্বে ধারণকৃত বার্তায় তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, 'মানুষের বেছে নেওয়া যেকোন নেতাকে সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত। আমরা সরকারী কার্যক্রমের সুষ্ঠু ও নিয়মতান্ত্রিক হস্তান্তরে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতা করতে চাই। সরকারী কোনো সেবা যাতে বিঘ্নিত না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে।'

তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে সুরক্ষিত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এগুলো জনগণের সম্পদ।

'আমি আমার বাড়িতেই আছি। কোথাও যাইনি, যেতে চাইও না। আমি চাই শান্তিপূর্ণভাবে সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে কার্যক্রম অব্যাহত থাকুক। দেশের সব জনগণ সুরক্ষিত ও নিরাপদে থাকুক।'

বিদ্রোহীদের নেতা গোলানি যা বললেন

বিদ্রোহীদের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া
বিদ্রোহীদের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

বাশারকে উৎখাতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখা বিদ্রোহী দল হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতা একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি সরকারী প্রতিষ্ঠানের কোনো ক্ষতি না করার জন্য বিদ্রোহীদের নির্দেশ দেন।

বিদ্রোহীদের নেতা আবু মোহাম্মদ আল-গোলানি টেলিগ্রাম বার্তায় বলেন, 'দামেস্কে অবস্থানরত সব যোদ্ধাকে বলছি, সরকারী প্রতিষ্ঠানের দিকে আগাবেন না। এটা পুরোপুরি নিষিদ্ধ। আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের আগ পর্যন্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী এগুলোর দেখভাল করবেন। আকাশে গুলি ছোড়াও নিষেধ।'

গত বৃহস্পতিবার সিএনএনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোলানি সিরিয়ার ভবিষ্যত নিয়ে তার দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তারিত আকারে তুলে ধরেন। সেখানে তিনি প্রথমবার তার আসল নাম আহমেদ আল-শারআ নামে নিজেকে জনসম্মুখে পরিচয় দেন।

সিরিয়ার বিরোধী দলের বক্তব্য

আসাদের পতনের পর বিজয়োল্লাসে বিদ্রোহী ও সাধারণ জনতা। ছবি: এএফপি
আসাদের পতনের পর বিজয়োল্লাসে বিদ্রোহী ও সাধারণ জনতা। ছবি: এএফপি

সিরিয়ার বিরোধীদলের অঙ্গসংগঠন দ্য অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব পলিটিকাল অ্যাফেয়ারস আসাদ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে।

বিরোধী দল জানায়, 'সিরিয়ার স্বাধীনতা অর্জন দেশটির সন্তানদের জন্য বিজয়, যারা এই ভূখণ্ড ও জনগণকে একাত্ম করতে নিজেদের জীবন দান করেছেন।'

'এই মাহেন্দ্রক্ষনে সিরিয়ার সামাজিক ঐক্যবদ্ধতাকে আরও শক্তিশালী করে তোলা ও সমাজের ন্যায়বিচার ও সম্মানের মূলনীতিগুলোকে সমুন্নত রাখতে প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের বিষয়টি আবারও প্রকাশ করছি', যোগ করে বিরোধীরা।

যেভাবে পতন হল বাশারের

আসাদের পতনের পর বিজয়োল্লাসে বিদ্রোহী ও সাধারণ জনতা। ছবি: এএফপি
আসাদের পতনের পর বিজয়োল্লাসে বিদ্রোহী ও সাধারণ জনতা। ছবি: এএফপি

হায়াত তাহরির আল-শাম ও তুরস্কের সমর্থনপুষ্ঠ বিদ্রোহিরা আসাদের সরকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে ২৭ নভেম্বর উত্তরের আলেপ্পো শহরে বড় আকারে আগ্রাসন শুরু করে।

অল্প সময়ের মধ্যেই তিন গুরুত্বপূর্ণ শহর আলেপ্পো, হামা ও হোমস শহরের পতন ঘটে। বিশেষত, হোমসের পতনে দিশেহারা হয়ে পড়েন আসাদ।

হোমসের পতনেই আসাদের নিয়তি নির্ধারণ হয়। কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই অঞ্চলের মধ্য দিয়েই আসাদের মূল শক্তির কেন্দ্র থেকে দামেস্কের যোগাযোগ ছিল। হোমস হাতছাড়া হওয়ায় রুশ মিত্রদের নৌ ও বিমানঘাঁটির সঙ্গে দামেস্ক কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।

বিদ্রোহীদের আগ্রাসনে এই শহরগুলো থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় সরকার। এরপর বিদ্রোহীরা রাজধানী দামেস্ক দখল করে নেয়। দামস্কের দিকে এইচটিএসের সেনাদের এগিয়ে আসার খবরে ব্যক্তিগত উড়োজাহাজে চেপে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট বাশার।

Comments

The Daily Star  | English

Dozens of zombie firms still trading as if nothing is wrong

Nearly four dozen companies have been languishing in the junk category of the Dhaka Stock Exchange (DSE) for at least five years, yet their shares continue to trade on the country’s main market and sometimes even appear among the top gainers. 

6h ago