বছরব্যাপী চেষ্টার পর মিয়ানমার সামরিক জান্তার শক্ত ঘাঁটির পতন

সাগাইং প্রদেশের বুদালিন টাউনশিপের এই থানাটিকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছিল জান্তা। ছবি: সংগৃহীত
সাগাইং প্রদেশের বুদালিন টাউনশিপের এই থানাটিকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছিল জান্তা। ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সাগাইং প্রদেশের বুদালিন টাউনশিপের একটি থানা ছেড়ে পালিয়েছে। প্রায় এক বছর ধরে স্থানীয় বিদ্রোহীদের হামলার মুখে 'দুর্গ' ও শক্তিশালী ঘাঁটি হিসেবে বিবেচিত এই স্থাপনার পতন হয়েছে।

মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতির এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানা গেছে।

কুতাউ গ্রামের গ্রাম প্রতিরক্ষা পুলিশের আওতাধীন থানাটিকে ঘিরে বাংকার ও পরিখা খুঁড়েছিল মিয়ানমারের সামরিক জান্তা। বিভিন্ন রকম প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা বসিয়ে এই থানাকে শক্তিশালী ঘাঁটি ও দুর্ভেদ্য দুর্গ হিসেবে গড়ে তোলে তারা। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।

সম্প্রতি বিদ্রোহী গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্স (পিডিএফ) এই দুর্গের পতন ঘটিয়েছে।

এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে শুরুতেই দুর্গে নতুন করে সেনা, রসদ ও অন্যান্য উপকরণ আসার সবগুলো পথ দখল করে নেয় তারা। অকার্যকর হয়ে পড়ে জান্তার সরবরাহ শৃঙ্খল। খাদ্য ও রসদের অভাবে এক পর্যায়ে বাধ্য হয়ে ঘাঁটি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় জান্তার সদস্যরা।

সাগাইং প্রদেশের বুদালিন টাউনশিপের এই থানাটিকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছিল জান্তা। ছবি: সংগৃহীত
সাগাইং প্রদেশের বুদালিন টাউনশিপের এই থানাটিকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছিল জান্তা। ছবি: সংগৃহীত

চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের পথে থানায় তিন দফা হামলা চালায় পিডিএফের সেনারা। জান্তার একদল সেনা পেছন দিক থেকে বিদ্রোহীদের ওপর হামলা চালানোর চেষ্টা করলেও তারা পরাস্ত হয়।

পিডিএফের বুদালিনভিত্তিক মনিওয়া জেলা ব্যটালিয়ন ২০'র মুখপাত্র এসব তথ্য দেন।

সেপ্টেম্বরে থানায় আটকে পড়া সহযোদ্ধাদের নিরাপদে বের করে নিয়ে আসার জন্য জান্তা সরকার ৮৫ সদস্যের একটি উদ্ধারকারী বাহিনী পাঠায়। তবে বিদ্রোহীদের হামলায় তাদের প্রায় সবাই নিহত হয়েছেন বলে মুখপাত্র জানান।

সর্বশেষ প্রাদেশিক রাজধানী মনিওয়া থেকে ৪৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত উত্তর-পশ্চিম কমান্ড থেকে জান্তা সদস্যরা বেসামরিক মানুষদের মানব-ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে থানা থেকে অস্ত্র ও সহযোদ্ধাদের উদ্ধার করতে আগায়।

বুধবার সরকারের এই দুর্গের পতনের পর সেখানে মাত্র ৩০ জন সেনা ও পুলিশ সদস্যকে খুঁজে পাওয়া যায়। বাকিরা সবাই নিহত হয়েছেন অথবা পালিয়ে গেছেন।

থানা থেকে এক ডজন মোটরসাইকেল, একটি গাড়ি ও অন্যান্য সামরিক উপকরণ আটক করেছে পিডিএফের সদস্যরা।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে,। পালিয়ে যাওয়ার আগে সামরিক জান্তা পুরো থানাজুড়ে ভূ-মাইন স্থাপন করে যায়।

পিডিএফের এক সূত্র জানান, 'শেষ পর্যায়ে এসে আর তীব্র যুদ্ধ করার প্রয়োজন হয়নি। তেমন কোন সমস্যা ছাড়াই আমরা এই ঘাঁটি দখল করে নিয়েছি, যা একটি ভালো খবর। এখন জান্তার সদস্যরা কুতাউ থেকে সরে গেছে। এই অঞ্চলকে ঘিরে সামরিক অভিযান চালানো এখন আরও সহজ হবে।'

সাগাইং প্রদেশের বুদালিন টাউনশিপের এই থানাটিকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছিল জান্তা। ছবি: সংগৃহীত
সাগাইং প্রদেশের বুদালিন টাউনশিপের এই থানাটিকে শক্ত ঘাঁটি হিসেবে গড়ে তুলেছিল জান্তা। ছবি: সংগৃহীত

বিদ্রোহীরা জানান, জান্তা ২০০ বেসামরিক মানুষকে অপহরণ করে তাদেরকে দিয়ে অস্ত্র ও গোলাবারুদ বহন করেছে। থানা ছেড়ে বুদালিনের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে তাদেরকে দিয়ে সব ধরনের কায়িক শ্রমের কাজ করিয়ে নেয় জান্তা।

পরবর্তীতে তাদেরকে মুক্তি দেওয়া হয়।

বিদ্রোহী গোষ্ঠীরা আরও জানিয়েছে, কাছাকাছি আরও কয়েকটি অবস্থান থেকে জান্তাকে তারা বিদায় করেছে।

সাগাইংয়ের দুর্গ থেকে বিতাড়িত হলেও জান্তার ২০০ সদস্য বুদালিনের সরকারি প্রশাসন বিভাগের আশেপাশে অবস্থান গ্রহণ করেছে।

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu election sees spontaneous turnout of voters

Ducsu election is being held at eight centres of the campus with nearly 40,000 registered voters and 471 candidates vying for 28 central posts.

2h ago