সিরিয়ায় আবারও ২ গোষ্ঠীর সংঘাত, ২৪ ঘণ্টায় নিহত ৪

সিরিয়ার দক্ষিণাঞ্চলের দ্রুজ অধ্যুষিত সওয়েইদা প্রদেশে আবারও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘাত দেখা দিয়েছে। এক দিনেই নিহত হয়েছেন চার ব্যক্তি।

আজ রোববার একটি যুদ্ধ পর্যবেক্ষক সংস্থার বরাত দিয়ে এএফপি এই তথ্য জানিয়েছে। 

গত মাসে এ অঞ্চলে আলোচনার ভিত্তিতে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা এলেও আবারও সহিংসতার ছড়িয়ে পড়ার তথ্য পাওয়া গেছে।

সওয়েইদা শহরের ড্রোন-চিত্র। ফাইল ছবি: রয়টার্স
সওয়েইদা শহরের ড্রোন-চিত্র। ফাইল ছবি: রয়টার্স

জুলাইতে সুন্নি বেদুঈনদের সঙ্গে সহিংসতায় জড়ায় স্থানীয় দ্রুজ যোদ্ধারা। পরবর্তীতে সুন্নিদের সহায়তায় এগিয়ে আসে সরকারী বাহিনী এবং স্থানীয় সশস্ত্র গোত্র।

এক সপ্তাহব্যাপী সহিংসতায় এক হাজার ৪০০ ব্যক্তি নিহত হন। এরপর আনুষ্ঠানিক যুদ্ধবিরতি চালুর পরও ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি অস্থিতিশীল ছিল বলে জানিয়েছে সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস নামের নিরীক্ষক সংস্থা।

আজ রোববার আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। 

পর্যবেক্ষক সংস্থা জানায়, 'সওয়েইদার পশ্চিম শহরতলীর তাল হাদিদ এলাকার কাছে স্থানীয় গোষ্ঠীদের মধ্যে সংঘাত দেখা দিলে' সিরিয়ার সরকারী নিরাপত্তা বাহিনীর তিন সদস্য নিহত হন। 

পাশাপাশি এক 'স্থানীয় যোদ্ধা' নিহতের তথ্যও জানায় সংস্থাটি।

পর্যবেক্ষক সংস্থা জানিয়েছে, অপেক্ষাকৃত উঁচু অবস্থানে থাকা তাল হাদিদ ওই অঞ্চলের একটি 'গুরুত্বপূর্ণ নিয়ন্ত্রণকেন্দ্র'। যে পক্ষের হাতে এর নিয়ন্ত্রণ থাকে, তারা আশেপাশের এলাকার ওপর ভালো করে নজর রাখতে পারে।

থাআলা শহরের আশেপাশেও সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে।

সিরিয়ান ওয়ার মনিটর জানিয়েছে, সেখানে সরকারী বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকা থেকে কামানের গোলা ও অন্যান্য ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়। এ সময় সওয়েইদা শহরের বিভিন্ন অংশে বিস্ফোরণ ও গোলাগুলির শব্দ পাওয়া যায়।

সিরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম সানা প্রভাবশালী ধর্মীয় নেতা হিকমাত আল-হিজরির প্রতি অনুগত দ্রুজ গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছে। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, দ্রুজ যোদ্ধারা তাল হাদিদে সরকারী বাহিনীর ওপর বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়ে এক নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে হত্যা ও আরও কয়েকজনকে আহত করেছে।

প্রভাবশালী দ্রুজ ধর্মীয় নেতা হিকমাত আল-হিজরি। ফাইল ছবি: সংগৃহীত
প্রভাবশালী দ্রুজ ধর্মীয় নেতা হিকমাত আল-হিজরি। ফাইল ছবি: সংগৃহীত

প্রতিবেদন মতে, সকালের সংঘাতের পর সরকারী বাহিনী তাল হাদিদের নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে।

ডিসেম্বরে আহমেদ আল শারা'র নেতৃত্বে তৎকালীন শাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। এ ঘটনার পর থেকেই দেশটির সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতা ভুগছেন। সাবেক শাসক বাশার নিজেকে 'সংখ্যালঘুদের রক্ষাকর্তা' হিসেবে উপস্থাপন করতেন।

তবে দেশটির নতুন প্রশাসন বারবার সংখ্যালঘু গোষ্ঠীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের প্রতিশ্রুতি দিলেও উপকূলীয় অঞ্চলে বাশার আল-আসাদের সমর্থনপুষ্ট আলাবি গোত্রের এক হাজার ৪০০ মানুষ নিহতের ঘটনায় তাদের উদ্যোগ প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। পাশাপাশি, সওয়েইদার সহিংসতাকে নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থতাও সমালোচিত হয়েছে।

সরকার জানিয়েছে তারা জুলাইর সহিংসতার ঘটনাগুলোর তদন্ত করবে। এ বিষয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার ওই কমিটি প্রথমবারের মতো বৈঠক করেছে।

Comments

The Daily Star  | English
Yunus, Charter, and Our Future

Yunus, Charter, and Our Future

Can the vision for 'New Bangladesh' ignore the poor, farmers, workers, youth, women, or employment and climate crises?

5h ago