এপস্টেইনের সঙ্গে সম্পর্ক, যুক্তরাষ্ট্রে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত ম্যান্ডেলসনকে বরখাস্ত

যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত পিটার ম্যান্ডেলসনকে বরখাস্ত করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
ইমেইল ও অন্যান্য চিঠিপত্রে যৌন নির্যাতনে দোষী সাব্যস্ত জেফরি এপস্টাইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা সামনে আসার পর এ সিদ্ধান্ত নেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার।
দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রী স্টিফেন ডাউটি পার্লামেন্ট সদস্যদের জানিয়েছেন, রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সময় ম্যান্ডেলসন শিশু যৌন নির্যাতনকারী এপস্টাইনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা জানাননি।
সরকারের বিবৃতিতে বলা হয়, ইমেইলগুলো থেকে বোঝা যাচ্ছে যে জেফরি এপস্টেইনের সঙ্গে পিটার ম্যান্ডেলসনের সম্পর্কের গভীরতা ও ব্যাপ্তি তার নিয়োগের সময় যেসব তথ্য দেওয়া হয়েছিল তার থেকে ভিন্ন।
'এই প্রেক্ষাপটে এবং এপস্টেইনের নির্মম অপরাধের শিকার যারা হয়েছে তাদের কথা মাথায় রেখে তাৎক্ষণিকভাবে ম্যান্ডেলসনকে রাষ্ট্রদূতের পদ থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর আগে থেকে কিছু জানত না।
গত সপ্তাহে ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী অ্যাঞ্জেলা রেনারের পদত্যাগ নিয়ে জটিলতার মধ্যেই এ ধরনের খবরে প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের জন্য বড় ধরনের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর সংক্রান্ত জটিলতায় পদত্যাগ করেছিলেন রেনার।
ফাঁস হওয়া ইমেইলে এপস্টাইনকে দ্রুত মুক্তির জন্য ম্যান্ডেলসনকে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন বলে গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকারি সূত্র জানায়, বুধবার রাতে এপস্টেইনের পক্ষে ম্যান্ডেলসনের লেখা ইমেইলের তথ্য পর্যালোচনার পর বৃহস্পতিবার সকালে পররাষ্ট্রসচিব ইয়েভেট কুপারের সঙ্গে বৈঠকে স্টারমার এই সিদ্ধান্ত নেন। ধারণা করা হচ্ছে, ২০০৮ সালে লেখা ওই ইমেইলগুলো ম্যান্ডেলসনের বহু আগেই মুছে ফেলা একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এসেছে, তাই ফাঁস হওয়ার আগে তিনি নিজেও এগুলো দেখতে পারেননি।
ম্যান্ডেলসনের বিদায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের জন্য কঠিন সময়ে এলো, কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফরের প্রস্তুতি নিচ্ছে দেশটি। এদিকে এপস্টেইনের সঙ্গে ট্রাম্পের সম্পর্ক নিয়েও নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। এ অবস্থায় ওয়াশিংটনে ডেপুটি হেড অব মিশন জেমস রসকো অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করবেন এবং রাষ্ট্রীয় সফর তদারকি করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিয়োগের জন্য এর আগে সাবেক লেবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড মিলিব্যান্ড ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সাবেক কমিশনার ক্যাথি অ্যাশটনের নাম সংক্ষিপ্ত তালিকায় ছিল। ম্যান্ডেলসনের আগের দায়িত্বপ্রাপ্ত কারেন পিয়ার্সকেও পুনরায় দায়িত্ব দেওয়ার জন্য বিবেচনা করা হতে পারে।
Comments