‘অর্থনৈতিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে ইসরায়েল’

গাজায় গণহত্যা চলছেই। থামার কোনো লক্ষণ নেই। এই ছোট্ট উপত্যকায় গত দুই বছরের যুদ্ধে অন্তত ৬৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। তাদের অধিকাংশই শিশু ও নারী। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে খাবারের চরম সংকট। কিন্তু, কোনোদিকেই যেন ভ্রুক্ষেপ নেই তেল আবিবের। কিন্তু, এভাবে আর কতদিন?
আজ মঙ্গলবার সিএনএন জানিয়েছে—গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল পড়েছে দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতায়। এ কথা অবশেষে স্বীকার করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গাজায় প্রায় দুই বছর ধরে যুদ্ধ চালানোয় ইসরায়েলের ওপর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ক্ষোভ ক্রমাগত বাড়ছে। সে কথা অবশেষে স্বীকার করলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।
গতকাল ইসরায়েলের অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সম্মেলনে বক্তৃতায় নেতানিয়াহু সতর্ক করে বলেন, ইসরায়েল 'এক ধরনের বিচ্ছিন্নতায়' পড়েছে। এই বিচ্ছিন্নতা বহু বছর ধরে চলতে পারে বলেও মনে করেন তিনি।
এমন পরিস্থিতিতে তিনি পরনির্ভরশীলতা কমানোর ওপর জোর দিয়েছেন।
ইসরায়েলের যেসব প্রধান শিল্পপ্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ক্রমশ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে এর মধ্যে আছে অস্ত্র শিল্প। এর ফলে বিদেশি অস্ত্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমতে পারে বলেও আশা করেন তিনি।
নেতানিয়াহুর এমন স্বীকারোক্তির ফলে ধরে নেওয়া যেতে পারে যে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা ও গাজা ধ্বংসযজ্ঞকে আর সমর্থন দিতে চাচ্ছে না। জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বারবার সতর্ক করার পরও নেতানিয়াহু কোনকিছুকেই যেন গুরুত্ব দিচ্ছেন না।
ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য ও স্পেন গাজা যুদ্ধকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলের ওপর পুরোপুরো বা আংশিক অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এ ছাড়াও, ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশ ইসরায়েলি পণ্য আমদানি কমিয়েছে।
ইসরায়েলের জনগণ, জিম্মিদের পরিবার ও এমনকি সেনাদের অনেকে যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানাচ্ছে, যাতে জিম্মিদের ফিরিয়ে আনা যায়। কিন্তু, নেতানিয়াহুর একগুঁয়েমির কারণে যুদ্ধ বন্ধ করা যাচ্ছে না।
সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়—যে ইসরায়েলকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী ভাবা হতো এবং উচ্চমানের প্রযুক্তির জন্য দেশটির খ্যাতি আকাশচুম্বী হয়েছিল গাজা যুদ্ধের কারণে তা প্রভাবিত হচ্ছে। এই যুদ্ধ চালাতে গিয়ে ইসরায়েল এর ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি অর্থ খরচ করায় দেশটির অর্থনীতিতে ক্ষয় লেগেছে।
নেতানিয়াহুর এমন স্বীকারোক্তিতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দেশটির বিরোধীদলের নেতা ইয়ার লাপিদ। সমাজমাধ্যম এক্স-এ তিনি বলেন, 'আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া আমাদের ভবিতব্য নয়। এটি নেতানিয়াহুর ভুল ও ব্যর্থ নীতির কারণে হয়েছে।'
Comments