বেন-গভির ও স্মৎরিচের ওপর স্পেনের নিষেধাজ্ঞা

ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ইতামার বেন-গভির ও অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মৎরিচের বিরুদ্ধে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে স্পেন।
আজ বৃহস্পতিবার লন্ডনভিত্তিক মিডল ইস্ট আইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসে মানুয়েল আলবারেস এই ঘোষণা দেন।
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা বন্ধের লক্ষ্যে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ নয় দফা ব্যবস্থা ঘোষণার একদিন পর ইসরায়েলি মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে এই নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত জানানো হলো।
এসব ব্যবস্থার মধ্যে আছে ইসরায়েলের ওপর পুরোপুরি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা ও গণহত্যায় জড়িত থাকতে পারে দেশটির এমন কর্মকর্তাদের স্পেনে প্রবেশের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ।
পররাষ্ট্র আলবারেস বলেন, বেন-গভির ও স্মৎরিচসহ ১৩ ইসরায়েলি সেটলারের ওপর এই নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। তারা স্পেনের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে পারবেন না।
তাদের ভ্রমণ তথ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তা ও সীমান্ত ব্যবস্থাপনা তথা শেনগেন তথ্য ব্যবস্থায় অন্তর্ভূক্ত করা হবে।
স্পেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, দুই-রাষ্ট্র সমাধানে বাধা সৃষ্টিকারীদের নাম এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে।
ফিলিস্তিনে ক্রমাগত সন্ত্রাস ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে সম্প্রতি যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড ও নরওয়ে বেন-গভির ও স্মৎরিচের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।
সংবাদ প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, দ্য হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের প্রধান কৌঁসুলি জাতিগত বিদ্বেষের অভিযোগে বেন-গভির ও স্মৎরিচের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়ার আবেদন প্রস্তুত করছেন।
এ দিকে, গতকাল স্পেনের পার্লামেন্টে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পুরোপুরি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার প্রস্তাব পাস হয়েছে। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৭৮ জন ও বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ১৬৯ জন।
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ৯ ব্যবস্থা
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে স্প্যানিশ সরকারের নয় ব্যবস্থার মধ্যে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি আছে ইসরায়েলি সেনাদের জন্য বহন করা জ্বালানি স্পেনের বন্দরে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা ও স্পেনের আকাশসীমায় ইসরায়েলি উড়োজাহাজের সামরিক সরঞ্জাম বহন করায় নিষেধাজ্ঞা।
এতে আরও আছে—গণহত্যায় জড়িতদের স্পেনে প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা এবং পশ্চিমতীর ও গাজাসহ ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চল থেকে পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা।
এ ছাড়াও আছে—ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষকে সহায়তা বাড়ানো, গাজার রাফা সীমান্তে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশনে স্প্যানিশ কর্মকর্তাদের সংখ্যা বাড়ানো এবং নতুন নতুন সহযোগিতা প্রকল্প নেওয়া।
এই নয় ব্যবস্থার মধ্যে আছে ফিলিস্তিনের শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের তহবিলে ১০ মিলিয়ন ইউরো সহযোগিতা ও আগামী বছরের মধ্যে গাজায় মানবিক সহায়তা বাড়িয়ে ১৫০ মিলিয়ন করা।
স্পেনের এমন ব্যবস্থার নিন্দা করে ইসরায়েল একে 'ইহুদিবিদ্বেষ' হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। জবাবে স্পেন সেই অভিযোগকে 'ডাহা মিথ্যা' বলে অভিহিত করেছে।
গত দুই বছরে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ৬৭ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের বেশিরভাগই শিশু ও নারী।
Comments