ইসরায়েলের ওপর পুরোপুরি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিলো স্পেন

ইসরায়েলের প্রভাবমুক্ত হওয়ার ঘোষণার প্রায় ১০ দিন পর তেল আবিবের ওপর পুরোপুরি অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দিয়েছে স্পেন।
গতকাল মঙ্গলবার স্পেনের মন্ত্রিসভা এই নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন দেয়। পাশাপাশি, গাজায় হত্যাযজ্ঞের কারণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সতর্ক করে মাদ্রিদ।
স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম এল পাইসের বরাত দিয়ে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এ তথ্য জানায়। এর বরাত দিয়ে লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল মনিটর বলে—অর্থমন্ত্রী কার্লোস কুয়েরপো মনে করেন যে এই সিদ্ধান্তটি ছিল 'সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছার আরেক উদাহরণ, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্পেনের নেতৃত্ব ও মানবাধিকারের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা'র বহিঃপ্রকাশ।
স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ আগেই এই নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছিলেন। পরে আংশিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। সেই নিষেধাজ্ঞার মধ্যে ছিল অস্ত্র রপ্তানি, জ্বালানি সরবরাহ ও ইসরায়েল অধিকৃত অঞ্চলের পণ্য আমদানি বন্ধ করা।
স্পেন সরকারের শরিক বামপন্থি দল সুমার এক বার্তায় বলে, 'স্লোভেনিয়া, বেলজিয়াম ও নেদারল্যান্ডের মতো স্পেন ইতোমধ্যে আংশিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু, এই ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রথম দেশ হিসেবে আমরা অস্ত্র রপ্তানি, জ্বালানি সরবরাহ ও পণ্য আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করছি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই পথ অনুসরণ করতে পারে।'
তবে অপর বামপন্থি রাজনৈতিক দল পোদেমোসের নেতা আয়ন বেলারা এর সমালোচনা করে বলেছেন যে এই ব্যবস্থা নিতে অনেক দেরি হয়ে গেছে। তার ভাষ্য, 'যুদ্ধাপরাধ ঘটানোর আগেই অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা দেওয়া উচিত ছিল। এর জন্য ৬০ হাজার নিরপরাধ মানুষের জীবন দেওয়ার দরকার ছিল না।'
রক্ষণশীল বিরোধীদল পিপলস পার্টি এই নিষেধাজ্ঞার প্রতি সমর্থন তুলে নিয়েছে। দলটি রাজকীয় ডিক্রির ভাষায় কী বলা হচ্ছে তা দেখার অপেক্ষায় আছে।
এই নিষেধাজ্ঞার ফলে সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলোর প্রতি ইঙ্গিত দিয়ে পিপলস পার্টির এক মুখপাত্র এস্তার মুনোজ আশঙ্কা করে বলেছেন যে, স্পেনের সামরিক বাহিনী যেসব নিরাপত্তা উপকরণ ব্যবহার করে এর অনেকগুলোই ইসরায়েলে তৈরি।
সরকারের মুখপাত্র ও শিক্ষামন্ত্রী পিলার আলেগরিয়া ফিলিস্তিনকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতির ক্ষেত্রে স্পেনের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, 'স্পেন শুরু থেকেই দুই রাষ্ট্র সমাধানের ধারণাকে সমর্থন দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।'
গত ৯ সেপ্টেম্বর স্পেন নয় দফা নিষেধাজ্ঞার কথা প্রকাশ করে। আইনি ও কৌশলগত কারণে পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার অনুমোদন পেতে গতকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে বলে সংবাদ প্রতিবেদনে জানানো হয়।
Comments