পাক-সৌদি প্রতিরক্ষা জোটে ইরানেরও যোগ দেওয়া উচিৎ: খামেনির উপদেষ্টা

সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল ইয়াহিয়া রহিম সাফাভি'র সঙ্গে খামেনি। ফাইল ছবি: খামেনির ওয়েবসাইট
সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল ইয়াহিয়া রহিম সাফাভি'র সঙ্গে খামেনি। ফাইল ছবি: খামেনির ওয়েবসাইট

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির এক শীর্ষ সামরিক উপদেষ্টা সৌদি আরব ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক প্রতিরক্ষা চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। মত দিয়েছেন, ইরানেরও এতে যোগ দেওয়া উচিৎ।

আজ সোমবার ইরানের সরকারি গণমাধ্যম তেহরান টাইমসে এই তথ্য জানানো হয়।

শনিবার টিভিতে প্রচারিত সাক্ষাৎকারে খামেনির সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল ইয়াহিয়া রহিম সাফাভি বলেন, রিয়াদ ও ইসলামাবাদের 'কৌশলগত পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি' একটি গঠনমূলক উদ্যোগ। এটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি বলেন, 'আমাদের বিশ্লেষণ হলো, এই চুক্তি ইতিবাচক। পাকিস্তান জানিয়েছে, অন্যান্য দেশও এতে যোগ দিতে পারে। আমি সুপারিশ করছি, ইরানেরও এতে অংশ নেওয়া উচিৎ।'

'ইরান, সৌদি আরব, পাকিস্তান ও ইরাক সমষ্টিগত জোট গঠন করে এগিয়ে যেতে পারে। যদিও আমার ধারণা যুক্তরাষ্ট্রের আশির্বাদ ছাড়া ইসলামাবাদ-রিয়াদ এ ধরনের চুক্তিতে যেতে পারত না, তবুও বলছি—একটি আঞ্চলিক পরাশক্তি হিসেবে আমাদের উচিৎ এই জোটে যোগ দেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া এবং প্রস্তুতি শেষ হলে তা জানিয়ে ঘোষণা দেওয়া। এটা আমাদের সামরিক কূটনীতি ও পররাষ্ট্রনীতির বিষয়। এটা আঞ্চলিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা চুক্তির ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা নেওয়ার বিষয়', যোগ করেন তিনি।

১৭ সেপ্টেম্বর সৌদি আরব ও পাকিস্তানের পক্ষে ওই চুক্তিতে সই দেন যথাক্রমে যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান ও প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। চুক্তির শর্ত মতে, এক দেশকে তৃতীয় কোনো দেশ আক্রমণ করলে অপর দেশ তাদের সুরক্ষা দেবে। উভয় পক্ষই এই চুক্তিকে একটি বিশেষ মাইলফলকের আখ্যা দেয়।

চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বাঁ থেকে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন সালমান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। ছবি: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর/এক্স
চুক্তি সই অনুষ্ঠানে বাঁ থেকে সৌদি আরবের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খালিদ বিন সালমান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। ছবি: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর/এক্স

ওই চুক্তি সইয়ের একদিন আগেই দোহায় একটি জরুরি আরব-ইসলামিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের বিরুদ্ধে পরিচালিত ইসরায়েলের প্রাণঘাতী হামলার প্রেক্ষাপটে ওই সম্মেলন আয়োজিত হয়।

ওই হামলার পর থেকে ইরান ও পাকিস্তানসহ বেশ কয়েকটি মুসলিম দেশ বিদেশি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জোটবদ্ধ হওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছে।

পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ মত দেন, মার্কিনিদের সম্মতি ছাড়া দোহায় হামলা করার সাহস পেত না ইসরায়েল। তিনি মুসলিম দেশগুলোকে পশ্চিমাদের ন্যাটো জোটের মতো একটি ইসলামিক জোট গঠনের আহ্বান জানান।

সশস্ত্রবাহিনী প্রধান মেজর জেনারেল আবদোলরহিম মৌসাভি ও সেনাবাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ মেজর জেনারেল আমির হাতামির ভাষ্য, তেহরান যেকোনো সামগ্রিক নিরাপত্তা অবকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার বিষয়টি খোলা মনে বিবেচনা করবে। পাশাপাশি, তারা নিজেদের সামরিক ও প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর দিকেও নজর দেবে।

সাফাভির সঙ্গে সুর মিলিয়ে তারা এই বক্তব্য দেন।

 

Comments

The Daily Star  | English
Number of International Observers Bangladesh election

Growing global focus on February 12 vote

The number of foreign observers preparing to monitor the February 12 polls has already exceeded those of the last three national elections

10h ago