ইসরায়েলকে ১ মাসে ১ লাখ গুলি দিয়েছে ব্রিটেন

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। কোলাজ ছবি: সংগৃহীত
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু ও ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। কোলাজ ছবি: সংগৃহীত

একদিকে সংবাদ আসছে, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে ব্রিটিশ সরকার। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানকে 'গণহত্যা' হিসেবে মেনে নিয়েছে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি। আবার অন্যদিকে, খবর আসছে সেই সরকারই ইসরায়েলকে সহায়তা করছে প্রাণঘাতী অস্ত্র দিয়ে।

গতকাল মঙ্গলবার এমনই এক উদ্বেগজনক সংবাদ দিয়েছে লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট মনিটর। বলছে—এক মাসের ব্যবধানে ইসরায়েলকে এক লাখেরও বেশি গুলি দিয়েছে ব্রিটেন।

তুরস্কের আনাদোলু এজেন্সি চ্যানেল ফোর-এর অনুসন্ধানী প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে মিডল ইস্ট মনিটর জানায়, গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর গণহত্যামূলক আগ্রাসনের মধ্যেই ব্রিটেন থেকে তারা এক লাখ ১০ হাজার গুলি পেয়েছে। ওই গুলিগুলো পুরো আগস্টজুড়ে সরবরাহ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার মুখে শান্তির বুলি আওড়ালেও তার সরকার সামগ্রিকভাবে ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির পরিমাণ বাড়িয়েছে। গুলির চালানের মোট দাম ২০ হাজার পাউন্ড (প্রায় ২৭ হাজার মার্কিন ডলার)।

সামগ্রিকভাবে, গত আগস্টে ইসরায়েলে দেড় লাখ পাউন্ডের অস্ত্র পাঠিয়েছে ব্রিটেন।

২০২২ সালের জানুয়ারির পর এটাই দামের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অস্ত্রের চালান।

প্রতিবেদন অনুসারে, ইসরায়েলের শুল্কনীতি অনুসারে এই চালানকে 'গুলি' হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে।

গাজায় কামানের গোলা ছুঁড়ছে ইসরায়েলি সেনা। ছবি: এএফপি
গাজায় কামানের গোলা ছুঁড়ছে ইসরায়েলি সেনা। ছবি: এএফপি

আগস্টে অস্ত্রের চালানের মধ্যে আছে ট্যাংকের যন্ত্রাংশ, শটগান বা রাইফেলের যন্ত্রাংশ এবং অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র, বিস্ফোরক ও গোলাবারুদ।

প্রতিবেদনটিতে ইসরায়েলি কর কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে জানানো হয়েছে—গত জুনে ইসরায়েলি শুল্ক বিভাগ ব্রিটেন থেকে আসা প্রায় চার লাখ পাউন্ডের অস্ত্র নিয়ে কাজ করেছে।

২০২২ সাল থেকে এসব তথ্য নথিবদ্ধের কাজ শুরু হয়। সে সময় থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত এটাই এক মাসে সর্বোচ্চ অস্ত্র আসার নজির।

২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য সরকার ঘোষণা দেয়—তারা ইসরায়েলে অস্ত্র রপ্তানির ২৯টি লাইসেন্স বাতিল করেছে। কারণ হিসেবে বলা হয়, ডাউনিংস স্ট্রিটের বিশ্বাস, 'তাদের রপ্তানি করা অস্ত্র গুরুতর আকারে আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনে ব্যবহার হয়ে থাকতে পারে।'

তা সত্ত্বেও ইসরায়েলে পণ্য রপ্তানির ৩৫০টি লাইসেন্স এখনো সক্রিয় আছে। তার মধ্যে ১৬০টি 'সামরিক' হিসেবে চিহ্নিত।

ওই সময় যুক্তরাজ্য সরকার জানিয়েছিল—গাজা যুদ্ধে ব্যবহার করা হয় এমন উপকরণ ইসরায়েলের কাছে বিক্রি না করার বিষয়টি তারা নিশ্চিত করবে।

তবে সর্বশেষ এই প্রতিবেদনে ভিন্ন চিত্র ধরা পড়ল।

ইসরায়েলি হামলায় আহত শিশুরা আল-শিফা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ছবি: রয়টার্স
ইসরায়েলি হামলায় আহত শিশুরা আল-শিফা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। ছবি: রয়টার্স

প্রতিবেদন প্রকাশের একদিন আগেই লেবার পার্টির সম্মেলনে দলীয় প্রতিনিধিদের ভোটে গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনকে গণহত্যা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়। এর ফলে ইসরায়েলের ওপর 'পুরোপুরি' অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার দাবি আরও জোরালো হলো।

প্রায় দুই বছরের আগ্রাসনে ৬৬ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। তাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের নিরবচ্ছিন্ন হামলায় গাজার বেশিরভাগ অংশ বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। গাজার জনগোষ্ঠীর বড় অংশ অনাহারে ও অপুষ্টিতে ভুগছে। সেখানে নানা ধরনের রোগ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

17m ago