দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাওয়া সাবেক জাপানি প্রধানমন্ত্রীর মৃত্যু

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তমিচি মুরায়ামা। ফাইল ছবি: এএফপি
জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তমিচি মুরায়ামা। ফাইল ছবি: এএফপি

জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী তমিচি মুরায়ামা আর নেই। আজ শুক্রবার সকাল ১১টা ২৮ মিনিটে জন্মস্থান ওইতা শহরের হাসপাতালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০১ বছর।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চেয়ে বক্তব্য দিয়ে বিখ্যাত হয়েছিলেন মুরায়ামা।

আজ শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।  

১৯৯৫ সালের আগস্টে জাপানের আত্মসমর্পণের ৫০ বছর পূর্তিতে মুরায়ামা সেই ঐতিহাসিক বক্তব্যটি দেন। সেখানে তিনি এশিয়ার মানুষদের ওপর জাপানের অত্যাচারের জন্য গভীর অনুতাপ প্রকাশ করেন। মুরায়ামা বলেছিলেন, 'জাপান তার ঔপনিবেশিক শাসন আর আগ্রাসনের মাধ্যমে অনেক দেশের, বিশেষ করে এশিয়ার দেশগুলোর মানুষের বিরাট ক্ষতি ও দুঃখের কারণ হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'আশা করি ভবিষ্যতে এমন ভুল আর হবে না। আমি বিনীতভাবে এই ঐতিহাসিক সত্যগুলো স্বীকার করছি। আবারও গভীর অনুতাপ প্রকাশ করছি এবং আন্তরিক ক্ষমা চাইছি।'

এই বক্তব্যটি পরবর্তীতে জাপানের যুদ্ধ-সংক্রান্ত ক্ষমাপ্রার্থনার মানদণ্ড হয়ে ওঠে।

"গভীর অনুতাপ" ও "আন্তরিক ক্ষমা" শব্দগুলো পরবর্তী জাপানি প্রধানমন্ত্রীরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ৬০তম এবং ৭০তম বার্ষিকীতেও ব্যবহার করেন।

মুরায়ামা ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত জাপানের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার মেয়াদকালে জাপান বড় দুটি দুর্যোগের মুখোমুখি হয়—১৯৯৫ সালের ভয়াবহ ভূমিকম্প ও টোকিও মেট্রোর সারিন গ্যাস হামলা, যাতে ১২ জনের বেশি নিহত ও প্রায় ৫,৮০০ জন আহত হন।

মুরায়ামা মূলত জাপানের সমাজতান্ত্রিক দলের নেতা ছিলেন। তবে তার নেতৃত্বে গঠিত জোট সরকারে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টিও অংশ নেয়, যা জাপানের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি ছিল।

মুরায়ামা তরুণ বয়সে, ১৯৪৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়, জাপানি সামরিক বাহিনীতে বাধ্যতামূলকভাবে যোগ দেন। পরে তিনি সামরিক জীবনের কঠোর অভিজ্ঞতা নিয়ে বলেন, 'সেনাবাহিনী ছিল ভীতিকর, বিরোধিতা বা প্রশ্ন করার সুযোগ ছিল না।'

তিনি আরও স্মরণ করেন, যুদ্ধের শেষ দিকে খাদ্যের অভাব ছিল তীব্র, অস্ত্রও প্রায় ফুরিয়ে গিয়েছিল। বলেন, 'আমাদের হাতে বাঁশের তৈরি অস্ত্র দেওয়া হয়েছিল। তখনই মনে হয়েছিল, এই অবস্থায় যুদ্ধ চালানো অসম্ভব।'

তমিচি মুরায়ামা তার ঘন ভ্রুর জন্যও পরিচিত ছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s body being taken to Manik Mia Avenue for janaza

Janaza will be held at Manik Mia Avenue at 2pm

2h ago

Farewell

10h ago