১১ বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের খোঁজে আবারও অভিযান

হারিয়ে যাওয়া এমএইচ ৩৭০ উড়োজাহাজের ছবি সম্বলিত একটি বোর্ডে সই করছেন এক নারী। ফাইল ছবি: রয়টার্স
হারিয়ে যাওয়া এমএইচ ৩৭০ উড়োজাহাজের ছবি সম্বলিত একটি বোর্ডে সই করছেন এক নারী। ফাইল ছবি: রয়টার্স

আজ থেকে ১১ বছরেরও বেশি সময় আগে মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একটি বোয়িং ৭৭৭ ফ্লাইট ২৩৯ আরোহীসহ 'উধাও' হয়ে যায়।

কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং অভিমুখে যাত্রা করা এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের অন্তর্ধানকে বৈশ্বিক উড্ডয়ন ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যময় ঘটনার অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

২০১৪ সালের ৮ মার্চ রাডার থেকে অদৃশ্য হওয়ার পর ওই উড়োজাহাজটি খুঁজে পেতে ব্যাপক খোঁজাখুঁজি ও উদ্ধার অভিযান চালানো হয়। কিন্তু বড় আকারে পরিচালিত ওই অভিযানে ফল মেলেনি।

দীর্ঘ বিরতির পর আবারও উড়োজাহাজটি খোঁজার অভিযান শুরু করেছে মালয়েশিয়া।

আজ বুধবার বার্তা সংস্থা এএফপির প্রতিবেদনে এ বিষয়টি জানা গেছে।

ওই উড়োজাহাজের যাত্রীদের দুই তৃতীয়াংশই ছিলেন চীনের নাগরিক। বাকিদের মধ্যে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও ফ্রান্সের নাগরিকও ছিলেন।

নতুন করে উদ্ধারকাজ শুরু

এক বিবৃতিতে কুয়ালালামপুর জানায়, '২০২৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্সের এমএইচ৩৭০ ফ্লাইটের ধ্বংসাবশেষ খুঁজে পেতে গভীর সাগরে আবারও অভিযান চালানো হবে।'

বিবৃতি মতে, এই উদ্ধার কাজের দায়িত্বে থাকবে ওশান ইনফিনিটি নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, 'সমুদ্রের যে অংশে উড়োজাহাজটি খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে উজ্জ্বল, সেখানে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে অভিযান চালানো হবে।'

প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে গত এপ্রিলে দক্ষিণ ভারত মহাসাগরে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেও তা শিগগির স্থগিত করা হয়। এখন আবারও একই প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে নতুন করে অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে।

'(উড়োজাহাজের ধ্বংসাবশেষ) খুঁজে না পেলে কোনো পারিশ্রমিক দেওয়া হবে না', এই শর্তে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওশান ইনফিনিটির সঙ্গে মালয়েশিয়া সরকার চুক্তি করেছে।

২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে এমএইচ৩৭০ খুঁজে পাওয়ার অভিযান শুরু হয়েছিল। ফাইল ছবি: এএফপি
২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে এমএইচ৩৭০ খুঁজে পাওয়ার অভিযান শুরু হয়েছিল। ফাইল ছবি: এএফপি

২০১৮ সালেও একই কায়দায় অভিযান চালিয়ে ব্যর্থ হয় ওশান ইনফিনিটি।

এর আগে, দুর্ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার নেতৃত্বে ভারত মহাসাগরের এক লাখ ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার জায়গা জুড়ে উদ্ধার ও খোঁজ অভিযান চালানো হয়। তিন বছরের ওই অভিযানে প্রত্যাশিত ফল মেলেনি।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই মর্মান্তিক ঘটনায় যেসব পরিবার প্রভাবিত হয়েছে, তাদের মনে কিছুটা হলেও শান্তি এনে দিতে হারিয়ে যাওয়া উড়োজাহাজের হদিশ জানা প্রয়োজন এবং এ বিষয়টির প্রতি তারা অঙ্গীকারবদ্ধ।

ফেব্রুয়ারিতে উড়োজাহাজের সঙ্গে হারিয়ে যাওয়া যাত্রীদের পরিবারের সদস্যরা আশাবাদ প্রকাশ করেন, নতুন উদ্ধার অভিযান পরিচালিত হলে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলবে।

উড্ডয়ন খাতের রহস্য

উড়োজাহাজটি হারিয়ে যাওয়া নিয়ে অনেক তত্ত্ব চালু আছে। তবে প্রকৃত সত্য এখনো উদ্ঘাটন হয়নি।

কেউ কেউ বলেন, অভিজ্ঞ পাইলট জাহারি আহমাদ শাহ বিপথগামী হয়েছিলেন। তিনি অন্য কারো প্ররোচনায় এই কাজ করেছেন।

২০১৮ সালে প্রকাশিত চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, এই ঘটনার জয় এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলের ব্যর্থতা দায়ী এবং সেখানে আরও উল্লেখ করা হয়, পাইলট নিজে উড়োজাহাজের কোর্স বদলেছিলেন।

৪৯৫ পাতার প্রতিবেদনে তদন্তকারীরা স্বীকার করেন, তারা এখনো জানেন না কীভাবে উড়োজাহাজটি উধাও হল। এই ঘটনায় পাইলট ছাড়া অন্য কারও দায় আছে কি না, সেটাও তারা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

ফ্লাইটটি হারিয়ে যাওয়ার ১১ তম বার্ষিকীতে বেইজিংয়ের সরকারি কার্যালয় ও মালয়েশিয়ার দূতাবাসের বাইরে ভুক্তভোগীদের পরিবারের সদস্যরা জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ করেন।

তাদের হাতে ছিল, 'আমাদের প্রিয়জনদের ফিরিয়ে দাও' ও '১১ বছরের অপেক্ষার অবসান কবে হবে?' লেখা ব্যানার।

Comments

The Daily Star  | English
Sharif Osman Hadi dies in Singapore

Sharif Osman Hadi no more

Inqilab Moncho spokesperson dies in Singapore hospital

8h ago