পশ্চিমাদের সঙ্গে ‘সর্বাত্মক যুদ্ধে’ জড়িয়ে পড়ছি: ইরানের প্রেসিডেন্ট

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। ছবি: এএফপি

ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ ও ইসরায়েলের সঙ্গে এক নজিরবিহীন 'সর্বাত্মক যুদ্ধে' জড়িয়ে পড়েছে তেহরান।

আগামীকাল সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে। ওই বৈঠকে ইরান ইস্যুতে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। এর মধ্যেই শনিবার তিনি এ মন্তব্য করেছেন।

বার্তাসংস্থা এপি আজ রোববার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সংবাদমাধ্যম ফিনান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, ইরানের সামরিক বাহিনী আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় 'আরও প্রস্তুত' রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন পেজেশকিয়ান। তিনি বলেন, নতুন যে কোনো আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হবে।

শনিবার দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে পেজেশকিয়ান বলেন, এই যুদ্ধ ১৯৮০-এর দশকে ইরান ও ইরাকের মধ্যে হওয়া প্রাণঘাতী যুদ্ধের চেয়েও ভয়াবহ হতে যাচ্ছে।

ওই যুদ্ধে উভয় পক্ষ মিলিয়ে এক মিলিয়নেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল বলে জানিয়েছে এপি।

ফিনান্সিয়াল টাইমস বলছে, ট্রাম্পের কাছ থেকে নেতানিয়াহু আবারও ইরানে হামলার সবুজ সংকেত পেতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন অনেক ইরানি।

জুন মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিয়ে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। এরপর থেকেই নতুন সংঘাতের আশঙ্কা দেশটির অর্থনীতি ও স্থানীয়দের মানসিক অবস্থার ওপর চাপ সৃষ্টি করছে।

পেজেশকিয়ান বলেন, ইসলামী প্রজাতন্ত্রে জনঅসন্তোষকে কাজে লাগিয়েছে ইরানের চরম শত্রুরা।

তার দাবি, যুদ্ধের সময় তাদের পরিকল্পনা ছিল সরকার পরিবর্তন ঘটানো—যা এখন বদলে গিয়েছে। তবে একই লক্ষ্য অর্জনের জন্য '৩৬ মাসের মধ্যে' নতুন এক ষড়যন্ত্র হতে পারে।

তিনি এ বিষয়ে আর বিস্তারিত কিছু বলেননি। তবে দেশের সামরিক বাহিনী সক্ষমতা জোরদার করতে এবং হুমকি প্রতিহত করতে কঠোর পরিশ্রম করছে বলে জানান।

পেজেশকিয়ান স্বীকার করেন, রাজস্ব কমে যাওয়ায় তার সরকার চাপে রয়েছে। সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, বৈশ্বিক তেলের দামের পতনও ইরানের আয়ে বড় ধাক্কা দিয়েছে।

ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি চুক্তি এবং পশ্চিমা কিছু নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের লক্ষ্যে চলমান আলোচনা জুনের যুদ্ধের সময় হঠাৎ করেই স্থগিত হয়ে যায়। উভয় পক্ষের মধ্যে গভীর মতপার্থক্য এখনো রয়ে গেছে।

তেহরানের শক্ত অবস্থান হলো, যুক্তরাষ্ট্রের দাবি অনুযায়ী তারা ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ শূন্যে নামিয়ে আনবে না।

এপির দেওয়া তথ্য অনুসারে, জুন মাসে ১২ দিনের আকাশযুদ্ধ চলাকালে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিরোধী হামলায় প্রায় ১ হাজার ১০০ ইরানি নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ছিলেন শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ও পারমাণবিক বিজ্ঞানীরা। এর জবাবে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলে ২৮ জন নিহত হন।

Comments

The Daily Star  | English

A tender mother and an unbreakable leader: Tarique remembers Khaleda Zia

He pays tribute in Facebook post, recalling personal loss and her national role

1h ago