কচু কেন খাবেন

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের মানুষের কাছে কচু খুবই পরিচিত একটি সবজি। দামে বেশ সস্তা এবং সহজলভ্য হওয়ায় এটি জনপ্রিয় সবজি।  

কচুর প্রায় সব অংশই খাওয়ার উপযোগী। তবে কিছু কচু আছে যেগুলো আপনা আপনি বিভিন্ন জায়গায় জন্মায়, যেগুলোকে বনকচু বলা হয়ে থাকে। এই বন কচু সবসময় খাওয়ার উপযোগী হয় না বা খাওয়া নিরাপদ নয়।

ইবনে সিনা হাসপাতালের পুষ্টিবিদ জান্নাতুন নেছার কাছ থেকে জেনে নিন কচুর উপকারিতা ও পুষ্টিগুণ।

পুষ্টিবিদ জান্নাতুন নেছা বলেন, কচু খুবই উপকারী একটি সবজি। কচুতে আছে আয়রন, যা রক্তশূন্যতা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে। যাদের রক্তশূন্যতা আছে তারা নিয়মিত কচু খেলে উপকার পাবেন।

এ ছাড়াও কচুতে আছে নানারকম ভিটামিন, যা অন্ত:সত্ত্বা মা ও শিশুর জন্য দারুণ উপকারী। এর মধ্যে আছে ফাইবার, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই। রক্তের কোলেস্টেরল কমাতেও কচু বিশেষ ভূমিকা পালন করে।  

কচুর উপকারিতা

কচু একটি জনপ্রিয় সবজি। এটি বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- ঝিঙে কচু, চিংড়ি কচু, ডাঁটা কচু, কাল কচু, বেগুনি কচু ইত্যাদি।

চোখের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: কচুতে ভিটামিন এ থাকে, যা চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী। ভিটামিন এ চোখের রাতকানা, ছানি, দৃষ্টিশক্তি হ্রাস ইত্যাদি প্রতিরোধে সাহায্য করে।

হজমশক্তি বাড়ায়: কচুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে, যা হজমশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। এ ছাড়াও, কচুতে থাকা পেকটিন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সাহায্য করে।

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে: কচুতে থাকা পটাশিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।

রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: কচুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ওজন কমাতে সাহায্য করে: কচুতে ক্যালরির পরিমাণ কম থাকে এবং ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে। ফলে কচু খেলে পেট ভরে যায় এবং খাবারের পরিমাণ কমে যায়, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে।

ত্বকের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: কচুতে থাকা ভিটামিন এ, সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি ত্বকের বলিরেখা, বয়সের ছাপ, ব্রন, ব্রনের দাগ ইত্যাদি দূর করতে সাহায্য করে।

চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী: কচুতে থাকা ভিটামিন সি এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট চুলের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি চুল পড়া রোধ করে, চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে এবং চুলের উজ্জ্বলতা বাড়ায়।

কচু বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। কচু ভাজি, কচু চচ্চড়ি, কচু ঝোল, কচু মাছের ঝোল, কচু দিয়ে মুরগির মাংসের ঝোল ইত্যাদি রান্না করে খাওয়া যায়। কচু শুকিয়েও খাওয়া যায়। শুকিয়ে গুঁড়ো করে বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করা যায়।

এটি নিয়মিত খেলে শরীরে বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে এবং স্বাস্থ্য ভালো থাকে।

কচু শাক, লতি ও কচুরমুখি

কচু শাক কচু গাছের পাতা থেকে সংগ্রহ করা হয়। কচু শাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ফাইবার ইত্যাদি পুষ্টি উপাদান রয়েছে। কচুর লতি কচু গাছের লতি থেকে সংগ্রহ করা হয়। এটি একটি সুস্বাদু সবজি যা বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়, যেমন- কচুর লতি ভাজি, কচুর লতি চচ্চড়ি, কচুর লতি ঝোল, কচুর লতি মাছের ঝোল, কচুর লতি দিয়ে মুরগির মাংসের ঝোল ইত্যাদি। এটিও পুষ্টিকর সবজি। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ফাইবার রয়েছে।

কচুরমুখি কচু গাছের মুকুল থেকে সংগ্রহ করা হয়। এতেও এ, ভিটামিন বি, ভিটামিন সি, ক্যালসিয়াম, আয়রন, পটাশিয়াম, ফাইবার রয়েছে।

তবে এলার্জির সমস্যা থাকলে কোনো ধরনের কচু না খাওয়াই ভালো।

 

Comments

The Daily Star  | English

BNP sticks to demand for polls by December

In a meeting with Chief Adviser Prof Muhammad Yunus last night, the BNP restated its demands that the next general election be held by December and the government immediately announce a roadmap to that end.

4h ago