রাহুল গান্ধীর পার্লামেন্ট সদস্যপদ খারিজ, বিক্ষোভে মমতা বন্দোপাধ্যায়ের একাত্মতা

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও রাহুল গান্ধী। ছবি: সংগৃহীত

সম্প্রতি ভারতের কংগ্রেস দলের নেতা রাহুল গান্ধীকে পার্লামেন্টের (লোকসভা) সদস্যপদের অযোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছেন লোকসভার স্পিকার। কংগ্রেস এ বিষয়টির তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু করেছে এবং অন্যান্য বিরোধী দলও তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে। এ ঘটনার ধারাবাহিকতায় আজ প্রথমবারের মতো কংগ্রেস আয়োজিত এক কৌশলগত বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা যোগ দেন।

আজ সোমবার ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।

পরবর্তীতে রাহুল গান্ধীর সদস্যপদ বাতিলের প্রতিবাদে আয়োজিত 'কালো' বিক্ষোভেও অংশ নেন তৃণমূলের সদস্যরা।

গত বৃহস্পতিবার গুজরাটের একটি আদালত রাহুল গান্ধীকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়। পরের দিন তাকে পার্লামেন্টের সদস্য পদে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়।

আজ সোমবার কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গের কার্যালয়ে আয়োজিত কৌশলগত বৈঠকে তৃণমূলের প্রসূন বন্দোপাধ্যায় ও জওহর সরকার যোগ দেন। এর মাধ্যমে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের অবস্থানে বড় আকারের পরিবর্তন এসেছে বলে বিশ্লেষকরা ভাবছেন। এতদিন পর্যন্ত দলটি কংগ্রেস ও বিজেপি, উভয় দলের রাজনীতি থেকে দূরে থেকেছে।

তবে তৃণমূল নিশ্চিত করেছে, তাদের সমর্থন শুধু রাহুল গান্ধীর বিক্ষোভে সীমাবদ্ধ থাকবে, কারণ তারা মনে করে এ বিষয়টিতে সব বিরোধী দলের একাত্ম হওয়া প্রয়োজন।

জওহর সরকার জানান, 'প্রথম দিন থেকেই সকল বিক্ষোভ ও ওয়াক আউটের সঙ্গে ছিলাম আমরা। সবগুলো উদ্যোগেই আমরা যোগ দিয়েছি।'

'এটি সবার বিরুদ্ধে সমন্বিত ও অগণতান্ত্রিক আক্রমণের বিরুদ্ধে একাত্মতা প্রকাশের বিশেষ ইঙ্গিত', যোগ করেন তিনি।

তৃণমূলের এই অপ্রত্যাশিত উদ্যোগের প্রতিক্রিয়ায় কংগ্রেস প্রধান খাড়গে জানান, 'গণতন্ত্রের সুরক্ষায়' যারা এগিয়ে আসবে, তাদের সবাইকে কংগ্রেস স্বাগত জানায়।

রাহুল গান্ধীর পার্লামেন্ট সদস্যপদ বাতিল করায় কংগ্রেসের এমপিরা কালো শার্ট পরে পার্লামেন্ট অধিবেশনে যোগ দেন।

কে চন্দ্রশেখর রাওর ভারত রাষ্ট্র সমিতি (বিআরএস) তেলেঙ্গানা প্রদেশে কংগ্রেসের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও তারা কালো শার্ট বিক্ষোভে অংশ নেয়। সঙ্গে শিব সেনাও (উদ্ভব বালাসাহেব থ্যাকারে) অংশ নেয়।

বৈঠকে ভারতের মোট ১৭টি বিরোধী দল অংশ নেয়।

কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের খুব একটা সুসম্পর্ক নেই। তৃণমূল শাসিত পশ্চিম বাংলার মূল বিরোধী দলের মাঝে আছে কংগ্রেস ও বামপন্থী কিছু দল। এতোদিন কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীদলের যেকোনো কৌশলগত বৈঠকে অংশ নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে তৃণমূল।

তৃণমূল নেত্রী ও পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাহুল গান্ধীর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী মোদির নতুন ভারতে বিজেপির মূল লক্ষ্যবস্তু হয়ে উঠেছে বিরোধীদলের নেতারা। একদিকে অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত বিজেপি নেতারা মন্ত্রীসভায় স্থান পাচ্ছেন, আর অপরদিকে বিরোধী দলের নেতারা বক্তব্য দেওয়ার জন্য অযোগ্য ঘোষিত হচ্ছেন। আজ আমরা আমাদের সাংবিধানিক গণতন্ত্রের একেবারে তলানিতে পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি অবলোকন করেছি'।

কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, রাহুল গান্ধী আদানি-হিনডেনবার্গ কেলেঙ্কারির বিষয়ে কঠিন প্রশ্ন করে প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপিকে বিব্রত করেছে। যার ফলে তার কণ্ঠরুদ্ধ করার জন্য তার বিরুদ্ধে 'ষড়যন্ত্র' চলছে'। গত ২ দিন দেশজুড়ে বিক্ষোভে অংশ নিচ্ছে কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরা।

দলের সভাপতি খাড়গে ও শীর্ষ নেতা প্রিয়াংকা গান্ধী ভদ্র সরকারের বিরুদ্ধে 'একজন শহীদের সন্তানের কণ্ঠরুদ্ধ করার' অভিযোগ এনেছেন।

১৪টি বিরোধী দল সুপ্রিম কোর্টের কাছে অভিযোগ এনেছে, সরকার দেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর অপব্যবহার করছে। এ বিষয়ে ৫ এপ্রিল শুনানি হবে।

গত বৃহস্পতিবার গুজরাটের সুরাটের একটি আদালত প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির উপাধি নিয়ে কটূক্তির মামলায় রাহুল গান্ধীকে ২ বছরের কারাদণ্ড দেয়। রাহুল গান্ধীর আইনজীবীরা জানিয়েছেন, তারা উচ্চতর আদালতে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। যদি এই রায় বাতিল না হয়, তাহলে রাহুল গান্ধী আগামী ৮ বছর কোনো নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

 

Comments

The Daily Star  | English
Gunfight

Local BNP leader shot dead in Dhaka’s Badda

When Kamrul was sitting on a chair on the roadside and talking with 2-3 people, two assailants on foot came from behind and shot him before fleeing the scene

3h ago