জি২০ সম্মেলন: বানরের উৎপাত ঠেকাতে অভিনব কৌশল

নয়াদিল্লিতে লেঙ্গুরের কাটআউট। ছবি: রয়টার্স
নয়াদিল্লিতে লেঙ্গুরের কাটআউট। ছবি: রয়টার্স

বিশ্বের শিল্পোন্নত ২০ দেশের জোট জি২০'র এবারের বার্ষিক সম্মেলন আগামী ৭ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

ইতোমধ্যে চীনের নেতা শি জিনপিং এতে অংশ নেবেন না বলে জানিয়েছেন। তবে সব কিছু ছাপিয়ে আলোচনায় স্থান পাচ্ছে 'বানরের সম্ভাব্য উৎপাত'। এর থেকে রক্ষা পেতে ভারত এক অভিনব কৌশল নিয়েছে।

গত কয়েক দিন ধরে সোনালি বানর বা লেঙ্গুরের ছবি সম্বলিত বড় বড় কাটআউটে ছেয়ে গেছে নয়াদিল্লির বিভিন্ন অংশ। প্রতিবেদন রয়টার্সের।

কর্মকর্তাদের ভাষ্য, এই বড় আকারের, ভয়ংকর দেখতে লেঙ্গুরের রাগি চেহারা দেখে ছোট আকারের রেসাস বানর ভয় পাবে আর জি২০ সম্মেলনের সময় ঝামেলা পাকাবে না।

ভয়ংকর দর্শন ও বড় আকারের বানর লেঙ্গুরকে অন্যান্য বানর বেশ ভয় পায়। ছবি: সংগৃহীত
ভয়ংকর দর্শন ও বড় আকারের বানর লেঙ্গুরকে অন্যান্য বানর বেশ ভয় পায়। ছবি: সংগৃহীত

ভারতের কেন্দ্রীয় রাজধানী নয়াদিল্লির বিভিন্ন অংশে রেসাস বানর ব্যস্ত সড়কগুলোতে ঘোরাঘুরি করে। বানরগুলো নিজেরাও ঝুঁকিতে থাকে এবং অনেক সময় তাদের কারণে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটে। কখনো কখনো পথচারীদের বা ঘরেও ঢুকেও মানুষের ওপর হামলা চালায় এরা।

কালো মুখের লেঙ্গুর এক ধরনের বড় আকারের বানর, সাধারণত ছোট বানরদের ভয় দেখাতে এদের ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তাদের নেওয়া ব্যবস্থা ইতোমধ্যে ফল দিতে শুরু করেছে।

ধর্মীয় কারণে ভারতে বানরদের ওপর কোনো ধরনের হামলা বা আঘাতের বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর।

নয়াদিল্লিতে গাড়ির ছাদে বসে কমলা খাচ্ছে একটি বানর। ছবি: এএফপি
নয়াদিল্লিতে গাড়ির ছাদে বসে কমলা খাচ্ছে একটি বানর। ছবি: এএফপি

নয়াদিল্লি মিউনিসিপাল কাউন্সিলের (এনডিএমসি) সহসভাপতি সতীশ উপাধ্যায় বলেন, 'আমরা তাদের (বানরদের) আহত করতে বা সরাতে পারবো না, তাই আমাদের একমাত্র বিকল্প হচ্ছে তাদের বিচরণ এলাকার (বন-জঙ্গল) মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা।'

এনডিএমসি শহরের বড় সড়ক ও যেসব জায়গায় বানরের সমাগম বেশি, সেখানে লেঙ্গুরর বড় বড় কাটআউট বসানোর পাশাপাশি সংস্থাটি ৩০-৪০ জন মানুষ নিয়োগ দিয়েছে, যারা লেঙ্গুরের ডাক অনুকরণ করতে পারেন—তারা কাটআউটের আশেপাশে থেকে শব্দ তৈরি করছেন, ফলে ছোট বানররা ভাবছে কাটআউটগুলো জীবন্ত।

নয়াদিল্লির পথচারীদের দিকে চেয়ে আছে একদল রেসাস বানর, বাঁদরামির সুযোগের অপেক্ষায়। ছবি: এএফপি
নয়াদিল্লির পথচারীদের দিকে চেয়ে আছে একদল রেসাস বানর, বাঁদরামির সুযোগের অপেক্ষায়। ছবি: এএফপি

কর্তৃপক্ষ বনাঞ্চলে বানরদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছে, যাতে তারা তাদের আবাস ছেড়ে শহরের দিকে না আসে।

সতীশ বলেন, 'আমরা প্রায় ১ সপ্তাহ ধরে সারা শহরজুড়ে কাটআউটগুলো বসিয়েছি এবং ইতোমধ্যে ইতিবাচক প্রভাবে দেখা যাচ্ছে। যেসব জায়গায় এগুলো বসানো হয়েছে, সেখানে বানরের আনাগোনা চোখে পড়ছে না।'

নয়াদিল্লির ব্যস্ত সড়কে গাড়ির পাশাপাশি বানরও পরিচিত মুখ। ছবি: এএফপি
নয়াদিল্লির ব্যস্ত সড়কে গাড়ির পাশাপাশি বানরও পরিচিত মুখ। ছবি: এএফপি

এর আগেও, ২০১০ সালে কমনওয়েলথ গেমসের সময় লেঙ্গুর ভাড়া করে এ ধরনের কাজে নিয়োজিত করা হয়েছিল। তবে এবার প্রকৃত বানর নয়, কাটআউট দিয়েই ভালো ফল পাওয়া যাচ্ছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

 

Comments

The Daily Star  | English

UN urges probe after protesters killed in Nepal

The United Nations on Monday demanded a swift and transparent investigation after Nepal police were accused of opening fire on protesters

42m ago