পীত সাগরে মার্কিন নৌঘাঁটির কাছে উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা

ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা পরিদর্শন করছেন কিম জং উন ও তার মেয়ে। ছবি: কেসিএনএ
ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা পরিদর্শন করছেন কিম জং উন ও তার মেয়ে। ছবি: কেসিএনএ

উত্তর কোরিয়া পীত সাগরে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত একটি দক্ষিণ কোরীয় বিমানঘাঁটির কাছাকাছি জায়গায় অন্তত ৬টি স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে আগামী কয়েক সপ্তাহ ২ কোরিয়ার মাঝে সামরিক শক্তিমত্তার প্রদর্শনী শুরু হতে পারে।

আজ মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মাঝামাঝি অবস্থিত অসামরিক জোনে এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলো নিক্ষেপ করে পিয়ং ইয়ং।

শুক্রবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যম রোদং সিনমুন কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে  উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনকে দেশটির পশ্চিম ফ্রন্টে হোয়াসং কামান ইউনিটের মহড়ায় অংশ নিতে দেখা গেছে।

রোদং জানায়, 'কিম জং উন অষ্টম ফায়ার অ্যাসল্ট কোম্পানির যুদ্ধ প্রস্তুতি নিরীক্ষা করেন।'

সংবাদমাধ্যমটি আরও জানায়, এই কামান ইউনিটের দায়িত্ব 'প্রয়োজনবোধে পশ্চিম ফ্রন্টে অবস্থিত শত্রুপক্ষের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালানো'। 

দক্ষিণ কোরিয়া ২টি বিমানঘাঁটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। ওসান ও কুনসানে অবস্থিত এই ২ বিমানঘাঁটিতে অন্তত ২৮ হাজার মার্কিন সেনা রয়েছেন। কুনসানের ঘাঁটির অবস্থান পীত সাগরের উপকূলে।

ক্ষেপণাস্ত্রগুলোর পীত সাগরে নিক্ষিপ্ত হয়।

কিমের বরাত দিয়ে রোদং জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়তে সক্ষম কামান ইউনিট ২টি অভিযানের জন্য সদা-প্রস্তুত থাকবে।

প্রথমত, যুদ্ধ প্রতিহত করা এবং দ্বিতীয়ত, নিয়মিত ভাবে প্রকৃত যুদ্ধাবস্থার অনুকরণে সামরিক মহড়ার আয়োজন করা।

রোদং এই ক্ষেপণাস্ত্র মহড়ার বেশ কিছু ছবি প্রকাশ করেছে, যেখানে কিম জং উনের সঙ্গে তার মেয়ে জু আয়ে ও উত্তর কোরিয়ার সামরিক কর্মকর্তাদের দেখা গেছে।

উত্তর কোরিয়া পীত সাগরে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত একটি দক্ষিণ কোরীয় বিমানঘাঁটির কাছাকাছি জায়গায় অন্তত ৬টি স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ছবি: কেসিএনএ
উত্তর কোরিয়া পীত সাগরে যুক্তরাষ্ট্র পরিচালিত একটি দক্ষিণ কোরীয় বিমানঘাঁটির কাছাকাছি জায়গায় অন্তত ৬টি স্বল্প পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ছবি: কেসিএনএ

সোমবার থেকে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাতিসংঘের কমান্ড বাহিনী কোরীয় উপদ্বীপে ১১ দিনব্যাপী 'ফ্রিডম শিল্ড' (স্বাধীনতার ঢাল) সম্মিলিত সামরিক মহড়া শুরু করবে।

আকাশপথে মহড়ার পাশাপাশি স্থলবাহিনীও ওয়ারিয়র শিল্ড নামে একই ধরনের মহড়ায় অংশ নেবে।

ইতোমধ্যে, যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার বিমানবাহিনী নিয়মিত যৌথ মহড়ায় অংশ নিচ্ছে।

২০২২ সালে রেকর্ড সংখ্যক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালানোর পর এ বছর কিছুটা ধীরে চলছে পিয়ং ইয়ং। তবে এখনো কোরীয় উপদ্বীপে অস্থিরতা বজায় রয়েছে।

বিশ্লেষকদের মতে, নিকট ভবিষ্যতে পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক লেইফ এরিক ইজলি বৃহস্পতিবারের ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিষয়ে বলেন, 'এটা খুব সম্ভবত উত্তর কোরিয়ার বেশ কয়েক দফা উসকানিমূলক পরীক্ষার শুরু'।

'নিশ্চিতভাবেই, পিয়ং ইয়ং যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়ার বড় আকারের প্রতিরক্ষা মহড়া এবং একইসঙ্গে জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ইউনের আসন্ন সম্মেলনের আগ্রাসী প্রত্যুত্তর দিতে আগ্রহী হবে'।

ইজলি আশংকা প্রকাশ করেন, 'কিম প্রশাসন হয়তো আরও দূর পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়বে, গোয়েন্দা উপগ্রহ পাঠানোর চেষ্টা করবে, সলিড ফুয়েল ইঞ্জিনের প্রদর্শনী করবে অথবা, এমন কী, পারমাণবিক অস্ত্রও পরীক্ষা করবে'।

Comments

The Daily Star  | English

Victory day today: A nation born out of blood and grit

The tide of war had turned by mid-December in 1971. The promise of freedom was no longer a dream. It had hardened into tangible certainty.

10h ago