লঞ্চের ধাক্কায় বাল্কহেডডুবি, ঘুমিয়ে থাকা ২ কর্মীর মরদেহ উদ্ধার
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় বুড়িগঙ্গা নদীতে যাত্রীবাহী লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যাওয়া বালুবাহী বাল্কহেডের নিখোঁজ দুই লস্করের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
তারা হলেন পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার মো. জহুরুল ইসলাম শাকিল (২৫) ও ঝালকাঠির রাজাপুরের মো. হাসান (২০)।
আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে ৫টার দিকে ইঞ্জিন রুম থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) সহকারী পরিচালক কামরুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ভোর আনুমানিক সোয়া ৬টার দিকে ধর্মগঞ্জ এলাকায় নোঙ্গর করা বাল্কহেডটি ডুবে যায়।
ঘটনার পর উদ্ধারকাজে কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিস ও বিআইডব্লিউটিএর সদস্যরা কাজ শুরু করে বলে জানান কামরুল হাসান।
তিনি বলেন, 'নোঙ্গর করা বাল্কহেডের ইঞ্জিন রুমে ঘুমিয়ে ছিলেন দুজন। লঞ্চের ধাক্কায় ইঞ্জিন রুমটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এ কারণে সেখানে ডুবুরিরা ঢুকতে পারেনি। পরে ইঞ্জিনরুমের প্রবেশপথটি ফ্লোটিং-এক্সক্যাভেটর দিয়ে ভেঙে ভেতরে ঢুকলে দুজনের মরদেহ পাওয়া যায়।'
পাগলা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক আকিবুল ইসলাম বলেন, 'এমভি কাশফা স্নেহা বাল্কহেডটি নদীতে নোঙ্গর করা ছিল। এ সময় ঢাকামুখী সুন্দরবন-১৬ লঞ্চটি বাল্কহেডটিকে ধাক্কা দিলে সেটি ঢুবে যায়। বাল্কহেডের তিন শ্রমিক-কর্মচারী সাঁতরে তীরে উঠতে পারলেও দুজন নিখোঁজ ছিলেন।'
'সকালে ঘন কুয়াশার কারণে এমন দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে ধারণা করছি,' বলেন তিনি।
বাল্কহেডের চালক নান্নু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুর্ঘটনার সময় আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠৎ জোরে শব্দ হওয়ায় আমি উঠে দেখি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছি। কোনোরকমে আমি কাঁচের জানালা ভেঙে বেরিয়ে আসতে পেরেছি।'
'কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে বাল্কহেডটি ডুবে যায়। কোনো কিছু ভাবার সময়ও পাইনি,' যোগ করেন তিনি।
দুর্ঘটনার পর নদীর পাড়ে যান নিহত জহুরুলের ভাই আল-আমিন। তিনি মুঠোফোনে কোনো এক স্বজনকে কাঁদতে কাঁদতে বলছিলেন, 'গেট লক হইয়া গেছিল, খুলতে পারে নাই।'
ঘটনাস্থলে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম ফয়েজউদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, ধাক্কা দেবার পরই লঞ্চটি সেখান থেকে চলে যায়। কিন্তু নৌ-পুলিশ পরে লঞ্চটিকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে।
এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান ইউএনও।
এর আগে, গত ১৪ ডিসেম্বর সকালে ফতুল্লা লঞ্চঘাট এলাকায় বোগদাদিয়া-১৩ লঞ্চের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে বালুবাহী একটি বাল্কহেড ডুবে যায়। তবে, বাল্কহেডের ৫ শ্রমিক সাঁতরে তীরে ওঠেন। ওই ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।


Comments