আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে এটা অপহরণ না-ও হতে পারে: পিবিআই

sp_khulna.jpg
ছবি: দীপঙ্কর রায়/স্টার

খুলনার দৌলতপুর থেকে রহিমা বেগমের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাটি অপহরণ না-ও হতে পারে বলে মনে করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

আজ রোববার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান এ কথা বলেন।

এটা অপহরণ বলে মনে হচ্ছে কি না জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, আমরা এখনো মামলা তদন্ত করছি। তার কাছে সাদা রঙের একটি শপিং ব্যাগ উদ্ধার করা হয়েছে। যার মধ্যে ওড়না, হিজাব, আয়না, শাড়ি, আই ড্রপ, ওষুধ, সালোয়ার কামিজ এবং ছোট একটি অর্নামেন্টাল পার্টস ছিল। সাধারণত, একজনকে অপহরণ করে নিয়ে গেলে এই জিনিসগুলো থাকার কথা না। যেহেতু আমরা তদন্তের প্রাথমিক পর্যায়ে আছি, তদন্ত শেষে আমরা বিস্তারিত জানাবো। আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে, অপহরণ না-ও হতে পারে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগেও আমরা এখানে জমি সংক্রান্ত একটি মামলা তদন্ত করেছি। সেখানে উনার প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিরোধ আছে। সেই বিরোধকে ঘিরে এই ঘটনা ঘটছে কি না তা আমরা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না।

মুশফিক বলেন, গতকাল রাতে ফরিদপুরের বোয়ালমারী থানাধীন সৈয়দপুর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। আজ সকাল ১১টার দিকে কেএমপি তাকে রিসিভ করে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাকে উদ্ধার করার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি তেমন কোনো কথা-বার্তা বলছেন না। তাকে একটু নার্ভাস মনে হচ্ছে। তবে রহিমা বেগম সুস্থ আছেন। আশা করছি, জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে আমরা সম্পূর্ণ রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হবো।

তিনি এতদিন কোথায় ছিলেন বা আত্মগোপনে ছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন থেকে নিখোঁজ হওয়ার পরে তিনি বান্দরবানে গিয়েছিলেন। সেখানে কয়েকদিন ছিলেন। তারপর চট্টগ্রামে কয়েকদিন ছিলেন। সেখান থেকে মকসেদপুর হয়ে তিনি আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে যান।

প্রশ্ন আসতে পারে, আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতে কীভাবে গেলেন? রহিমা বেগম যে বাসা থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন, ওখানে ২৮ বছর আগে আব্দুল কুদ্দুস ভাড়া থাকতেন। তিনি সোনালী জুট মিলে চাকরি করতেন। সেই সুবাদে তাদের পরিচয় ছিল। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে তিনি ২৮ বছর পরে আব্দুল কুদ্দুসের বাড়ি খুঁজে বের করেন এবং ১৭ সেপ্টেম্বর তিনি সেখানে অবস্থান করেন। রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা পর্যন্ত তিনি আব্দুল কুদ্দুসের বাড়িতেই ছিলেন—বলেন মুশফিক।

রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, মরিয়ম মান্নানের সঙ্গে আমার গতকাল কথা হয়েছে। যখন আমরা নিশ্চিত হয়েছি, রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়েছে তখন আমি মামলার বাদী আদরী বেগমকে ফোন করি। কথা বলার এক পর্যায়ে আদরী মরিয়ম মান্নানকে দেয়। খুব সম্ভবত তখন মরিয়ম মান্নান ঢাকায় ছিলেন। মরিয়ম মান্নান বেশি কিছু পোস্ট ফেসবুকে দিয়েছেন। তিনি এভাবে পোস্ট দিয়ে আমাদের কিছুটা বিভ্রান্ত করেছেন। আমি জানি না তিনি কেন এটা করেছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে মুশফিক বলেন, আমরা এটিকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। তার মাকে পাওয়া যাচ্ছিল না জন্য হয়তো তিনি এ রকম রিঅ্যাক্ট করেছেন।

এই মামলায় দৌলতপুর থানা পুলিশ ও র‌্যাব মোট ৬ জনকে আটক করে। আমরা তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবো। ইতোমধ্যে রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বলা যাবে তারা অপরাধী কি না, আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন পিবিআই পুলিশ সুপার।

পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে মুশফিক বলেন, যেহেতু আদালতে মামলা চলমান তাই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজই রহিমা বেগমকে আদালতে তোলা হবে। পরবর্তী সিদ্ধান্ত আদালত দেবেন।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

35m ago