সাগর-রুনি হত্যার তদন্তে বিলম্ব বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে উপহাস: হাইকোর্ট

সাগর সারওয়ার ও মেহেরুন রুনি। ছবি: সংগৃহীত

হাইকোর্টের একটি রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠের পর্যবেক্ষণে বলা হয়েছে, সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যা মামলার তদন্ত শেষ করতে এবং বিচার শুরুতে বিলম্ব আমাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার সঙ্গে ক্রমাগত উপহাস এবং এটি বিচার ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বজলুর রহমানের দেওয়া এক আদেশের পূর্ণাঙ্গ এমন পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

গত ১৩ মে দেওয়া ওই রায়ের ৬৫ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ পাঠ আজ মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে।

মাছরাঙা টেলিভিশনের বার্তা সম্পাদক সাগর এবং তার স্ত্রী এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার রুনিকে ২০১২ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর পশ্চিম রাজাবাজারে ভাড়া বাড়িতে হত্যা করা হয়।

গত রোববার পর্যন্ত এ হত্যা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমার সময় ১১১ বার পিছিয়েছে।  

পূর্ণাঙ্গ পাঠে হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গে বলা হয়, 'আমাদের দেশে হত্যার বিচার হতে কখনো কখনো ২০ বছরের বেশি সময় লাগে। এ ধরনের হত্যাকাণ্ডকে যদি কোনো রাজনৈতিক চেহারা দেওয়া হয়, তাহলে এর চেয়েও বেশি সময় লাগতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার এফআইআর দায়ের করা যায়নি ২১ বছরের বেশি সময় ধরে।'

এতে আরও বলা হয়, 'সাগর-রুনি হত্যা মামলার ঘটনার ১২ বছর পেরিয়ে গেলেও তদন্ত এখনো শেষ হয়নি এবং সে কারণে এটি এখনও বিচারের আলো দেখতে পারেনি।'

'দুর্ভাগ্যবশত, এই মামলাটি ক্রমাগত আমাদের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থাকে উপহাস করে চলেছে এবং আমাদের অপ্রস্তুত করে ক্ষতিগ্রস্ত করছে, যা বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা ও আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলা দ্বারা কিছুটা প্রতিকার হয়েছিল,' যোগ করা হয় এতে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত তিন আসামিকে কনডেম সেলে রাখার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বেঞ্চের ১৩ মে'র এক রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠে এসব পর্যবেক্ষণ দেওয়া হয়েছে।   
রায়ে হাইকোর্ট বলেছিলেন, যাদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে কিন্তু আপিল মুলতবি আছে, তাদের অবশ্যই কনডেম সেলে রাখা যাবে না এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এই ধরনের দণ্ডিতদের কনডেম সেল থেকে সাধারণ জেলে স্থানান্তর করতে হবে।

আজ প্রকাশিত রায়ের পূর্ণাঙ্গ পাঠে হাইকোর্ট কারাগারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে কনডেম সেল থেকে বন্দিদের সাধারণ কারাগারে স্থানান্তরের জন্য শিগগির ব্যবস্থা নেওয়ার এবং দুই বছরের মধ্যে এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।

আবেদনকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার জজ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ১৫ মে হাইকোর্টের রায় ২৫ আগস্ট পর্যন্ত স্থগিত করেন এবং হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তার আদালতে লিভ টু আপিল পিটিশন দাখিল করতে বলেছেন। 

Comments

The Daily Star  | English
FY2026 Budget,

How the FY2026 budget can make a difference amid challenges

The FY2026 budget must be more than a mere fiscal statement.

16h ago