জুলাইয়ে মারণাস্ত্র দিয়ে ৩ লাখ ৫ হাজার রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছিল: ট্রাইব্যুনালে তদন্ত কর্মকর্তা

১৯ জুলাই রাজধানীর মালিবাগ মোড়ে হাঁটু গেড়ে বসে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে গুলি করতে থাকা পাঁচ পুলিশ সদস্য। তাদের হাতে ৯ মিমি রিভলবার। ছবি: এমরান হোসেন/স্টার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় বিভিন্ন মারণাস্ত্র ব্যবহার করে ঢাকায় ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড ও সারাদেশে মোট তিন লাখ পাঁচ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছিল।

আজ সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ সাক্ষ্য দিতে গিয়ে এই তথ্য জানান শেখ হাসিনা ও তার শীর্ষ ২ সহযোগীর বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলমগীর। এই মামলার ৫৪ নম্বর সাক্ষী হিসেবে তিনি সাক্ষ্য দিয়েছেন।

তিনি বলেন, পুলিশের সদর দপ্তর ঢাকা থেকে পাওয়া ২১৫ পৃষ্ঠার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, আন্দোলন দমনে এলএমজি, এসএমজি, চাইনিজ রাইফেল, শটগান, রিভলভার, পিস্তলসহ বিভিন্ন মারণাস্ত্র ব্যবহার করে শুধু ঢাকায় ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড এবং সারাদেশে ৩ লাখ ৫ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছিল।

'তদন্তকালে সংগৃহীত আলামত, পত্রপত্রিকা, ভিডিও ফুটেজ, অডিও ক্লিপ, বই, বিশেষজ্ঞ মতামত, বিভিন্ন প্রতিবেদন, শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত ও প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষীদের জবানবন্দি এবং আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি পর্যালোচনায় উঠে এসেছে যে, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল এবং তৎকালীন পুলিশের আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন জুলাই গণঅভ্যুত্থান তথা 'জুলাই ৩৬'-এর সময় ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে পরিকল্পিতভাবে মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটন করেছে।'

আলমগীর আরও জানান, ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে নিরীহ, নিরস্ত্র ও শান্তিপূর্ণ ছাত্র-জনতার ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করার নির্দেশ, প্ররোচনা, উসকানি ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেড় হাজারেরও বেশি মানুষকে হত্যা, হত্যাচেষ্টা, হাজার হাজারকে গুরুতর জখম ও অঙ্গহানি, নির্বিচারে আটক, নির্যাতন, অপহরণ, মিথ্যা মামলা দায়ের, জীবিত ও মৃত ব্যক্তিকে পুড়িয়ে দেওয়া, চিকিৎসা ও জানাজা-দাফনে বাধা, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ পরিবর্তনে বাধ্য করা, নিহতদের মরদেহ পরিবারকে না দিয়ে বেওয়ারিশ পরিচয়ে তড়িঘড়ি করে দাফন, জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়, হাসপাতালে আহতদের ওপর পুনরায় হামলা এবং আন্দোলনরত ছাত্রীদের যৌন নিপীড়নের মতো ভয়াবহ অপরাধ সংঘটিত হয়।

Comments

The Daily Star  | English

Farewell

Nation grieves as Khaleda Zia departs, leaving a legacy of unbreakable spirit

8h ago