সূত্রাপুরে গুলিতে নিহত ব্যক্তি শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন: পুলিশ

রাজধানীর সূত্রাপুরে আজ সোমবার সকালে গুলি করে যাকে হত্যা করা হয়েছে, তিনি 'শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন'। তার নামে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ সকাল ১১টার দিকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কাছে মামুনের বুকে গুলি করে অজ্ঞাত কিছু ব্যক্তি। এতে তিনি গুরুতর আহত হন এবং ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ জোনের ডেপুটি কমিশনার (ডিসি) আহসান উদ্দিন সামি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'নিহত মামুন একজন তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী।'

তিনি আরও বলে, 'যারা গুলি চালিয়েছে আমরা তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।'

নিহতের পূর্ব পরিচিত ফাইজুল হক অপু জানান, আজ সকালে মামুনের ফোন থেকে তাকে কল করে ঘটনাটি জানানো হয়। এরপর তিনি কাকরাইল থেকে ঢাকা মেডিকেলে এসে মামুনের পরিচয় শনাক্ত করেন।

তিনি বলেন, 'নিহতের নাম তারিক সাইফ মামুন (৫৫)। ব্যবসায়ী তিনি। এর আগে গাজীপুরে আমাদের পরিচয় হয়েছিল।'

নিহতের জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে জানা যায়, মামুনের বাবার নাম এসএম ইকবাল। তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মোবারক কলোনি এলাকায়।

ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, আজ সকাল ১১টার দিকে তাদের হাসপাতালের সামনের গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। শব্দ শুনে হাসপাতালের মেইন গেটের সামনের এসে একজনকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন তারা।

তিনি আরও জানান, সঙ্গে সঙ্গে তাকে উদ্ধার করে নিজেদের হাসপাতালে নিয়ে যান। অবস্থার অবনতি দেখে সেখান থেকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসেন। তবে চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের স্ত্রী দীপা জানান, তাদের বাসা আফতাবনগর এফ ব্লকে। ২ মেয়ে নিয়ে সেখানে থাকেন। মিরপুরে গার্মেন্টস ব্যবসা রয়েছে মামুনের।

তিনি বলেন, ২ দিন পর আজ সকাল ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়েছিলেন মামুন। যাবেন জজকোর্টে একটি মামলার হাজিরা দিতে। এরপরই তার মৃত্যুর খবর আসে ফোনে।

তিনি বলেন, কারা আমার স্বামীকে খুন করছে জানি না। তবে ইমন ছাড়া কেউ এই কাজ করে নাই। কয়েকদিন আগে ইমনই লোক দিয়ে মামুনকে মারধর করেছিল। তবে ইমন কে, সে বিষয়টি বলতে তাৎক্ষণিক রাজি হননি তিনি।

এর আগে ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে অভিনেতা সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার সন্দেহভাজন আসামি মামুনকে লক্ষ্য করে হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। তখন ভুবন চন্দ্র শীল নামে একজন আইনজীবী মোটরসাইকেলে করে ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিলেন, তখন তার মাথায় একটি গুলি লাগে। পরে তিনি মারা যান।

ওই হামলার প্রায় তিন মাস আগে জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন মামুন। তিনি ২৬ বছর ধরে কারাগারে ছিলেন। সূত্র জানায়, মামুন মগবাজারের একটি বার থেকে তার টোলারবাগের বাড়িতে ফিরছিলেন। তিনি যে গাড়িতে ছিলেন, সেই গাড়িটি বিজি প্রেস এলাকায় পৌঁছালে মোটরসাইকেলে করে সাত থেকে আটজন গাড়িটির গতিরোধ করে।

গুলির শব্দে মামুন গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু দুর্বৃত্তরা তাকে ধাওয়া করে ঘাড়ে ও পিঠে ছুরিকাঘাত করে। পুলিশ কর্মকর্তারা তখন বলেছিলেন, হামলাকারীরা শীর্ষ তালিকাভুক্ত অপরাধী সানজিদুল হাসান ইমনের অনুসারী। তিনি ১৭ বছরের সাজা ভোগ করছেন এবং সোহেল চৌধুরী হত্যা মামলার একজন আসামি।

মামুন একসময় ইমনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সহযোগী ছিলেন। পুলিশ কর্মকর্তারা আরও বলেন, মামুন বেরিয়ে আসার পর তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল।

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia’s body being taken to Manik Mia Avenue for janaza

Janaza will be held at Manik Mia Avenue at 2pm

2h ago

Farewell

10h ago