নিরাপত্তা চেয়ে ১ মাস আগে জিডি করেছিলেন এনসিপি নেতা রুমি

জান্নাতারা রুমী। ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

মৃত্যুর প্রায় এক মাস আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতা জান্নাত আরা রুমি (৩০) নিরাপত্তা চেয়ে ধানমন্ডি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন।

আজ বৃহস্পতিবার ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকেকে এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, 'জিডির পর থেকে বিষয়টি তদন্তাধীন ছিল এবং অভিযুক্তদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছিল পুলিশ।'

আজ সকালে রাজধানীর হাজারীবাগ থানার জিগাতলা এলাকার একটি হোস্টেল থেকে রুমির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

তিনি এনসিপির ধানমন্ডি থানার যুগ্ম সমন্বয়ক ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

এনসিপির ধানমন্ডি থানার সদস্যরা জানান, গত ১৩ নভেম্বর কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের হরতাল চলাকালে ধানমন্ডি-৩২ এ রুমি কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতাকে পুলিশের হাতে সোপর্দ করেছিলেন। 

সে সময় রুমি পাইপ দিয়ে এক নারীকে মারধর করেন। ওই ঘটনার একটি ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়।

এনসিপি নেতারা জানান, ওই ঘটনার পর থেকে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফোন নম্বর থেকে রুমিকে ধর্ষণ ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছিল। 

এমনকি তার পরিবারের সদস্যদের ফোন নম্বরসহ বিস্তারিত তথ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয় এবং বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের হুমকি দেওয়া হয়।

চরম নিরাপত্তাহীনতার কথা উল্লেখ করে ১৩ নভেম্বর রাতে রুমি থানায় জিডি করেন। 

জিডিতে বলা হয়, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আইনের আওতায় আনার কারণে রুমিকে টার্গেট করা হচ্ছে।

এনসিপির এক কর্মী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দ্য ডেইলি স্টারকে  বলেন, 'জিডি করার পরও তাকে হুমকি দেওয়া বন্ধ হয়নি এবং পুলিশ থেকে কোনো কার্যকর সহায়তা পাওয়া যায়নি। এতে তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিলেন। একপর্যায়ে তিনি মনোরোগ বিশেষজ্ঞেরও পরামর্শ নিচ্ছিলেন।'

তবে গত রোববার রুমি আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন।

এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব তারেক রেজার দাবি, নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের ধর্ষণ, হত্যা ও সাইবার বুলিংয়ের হুমকির কারণেই জান্নাত আরা রুমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।

এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন আজ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তিনিও আওয়ামী লীগের থেকে হুমকি পাচ্ছেন এবং এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।

সামান্তা বলেন, 'আমরা শাহাদাতকে ভয় পাই না। কিন্তু তার মানে এই নয় রাষ্ট্রের ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্বলতা মেনে নেব। একইসঙ্গে (রুমির) ময়নাতদন্ত ও পুলিশের তদন্ত কীভাবে চলবে, সেটার দিকেও আমরা সজাগ দৃষ্টি রাখব। কোনোভাবেই যেন কোনো তথ্য গোপন করা না হয়, কোনো কিছু যেন আড়াল না করা হয়, আমরা সেগুলো দেখব। আমরা একত্র আছি।'

পুলিশ জানিয়েছে, রুমির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা, তা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।

Comments