লক্ষ্মীপুরে দরজায় তালা দিয়ে বিএনপি নেতার ঘরে আগুন, ঘুমন্ত শিশুর মৃত্যু
লক্ষ্মীপুরে দরজায় তালা দিয়ে ও পেট্রল ঢেলে বিএনপির এক নেতার ঘরে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে তার সাত বছর বয়সী এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। আগুনে ওই নেতাসহ তার আরও দুই মেয়ে দগ্ধ হয়েছেন।
গতকাল শুক্রবার গভীর রাতে সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চর পশ্চিম চর মনসা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আহত বেলাল হোসেন ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক।
এ ঘটনায় বেলালের মেয়ে আয়েশা আক্তার (৭) আগুনে পুড়ে মারা যায় এবং বেলাল ও তার অপর দুই মেয়ে সালমা আক্তার (১৬) ও সামিয়া আক্তার (১৪) গুরুতর দগ্ধ হন।
বেলালকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এবং সালমা ও সামিয়াকে ঢাকায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে।
বেলালের মা হাজেরা বেগম বলেন, দুর্বৃত্তরা টিনশেড ঘরের দুটি দরজায় তালা দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।
তিনি জানান, গতরাতে তিনি নিজের ঘরে ঘুমাচ্ছিলেন। রাত ১টার দিকে ঘুম ভেঙে গেলে জানালা দিয়ে ছেলের ঘরে আগুন জ্বলতে দেখেন। তখন বাইরে এসে দেখেন ঘরের দুই দরজায় তালা ঝুলছে। পরে বেলাল তার স্ত্রী ও দুই ছেলে আবির ও হাবিবকে নিয়ে দরজা ভেঙে বেরিয়ে আসতে পারলেও অপর কক্ষে তিন মেয়ে ঘুমাচ্ছিল। তাদের মধ্যে সালমা ও সামিয়াকে দগ্ধ অবস্থায় বের করে আনা সম্ভব হয়। কিন্তু ছোট মেয়ে আয়েশা ঘরের মধ্যেই পুড়ে মারা যায়।
বেলালের স্বজন জেসমিন আক্তার বলেন, 'আগুনের বিষয়টি টের পেয়ে চিৎকার করি। আশপাশের লোকজন এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিস আসে।'
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রনজিত কুমার দাস জানান, খবর পেয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নিহত এক শিশু ও দগ্ধ তিনজনকে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. অরুপ পাল বলেন, 'রাত ২টার দিকে দগ্ধ অবস্থায় দুই কিশোরী ও তাদের বাবাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আনা হয়। তাদের মধ্যে বেলাল হোসেনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং দুই কিশোরীকে গুরুতর অবস্থায় জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। তাদের শরীরের ৫০-৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে।'
এ ঘটনার জড়িত অপরাধীদের শনাক্ত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপির যুগ্ম-আহবায়ক হাসিবুর রহমান।
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ওয়াহিদ পারভেজ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। কারা কী কারণে এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।'


Comments