এস আলমের বিরুদ্ধে ১৯৪৩ কোটি টাকা আত্মসাতের মামলা

ছবি: সংগৃহীত

জনতা ব্যাংক থেকে প্রায় এক হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মো. সাইফুল আলমসহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।  

আজ রোববার দুদকের চট্টগ্রাম জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে মামলাটি করেন সংস্থাটির উপপরিচালক মোহাম্মদ সিরাজুল হক।

মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন—এস আলম ট্রেডিং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ওসমান গণি, গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাশেদুল আলম, পরিচালক ফারজানা বেগম, পরিচালক মোহাম্মদ আবদুস ছবুর, সোনালী ট্রেডার্সের প্রোপ্রাইটর মো. শহিদুল আলম, জনতা ব্যাংকের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক মো. সিরাজুল করিম মজুমদার ও সাবেক মহাব্যবস্থাপক মো. কামরুল আহছান।  

এজাহারে বলা হয়েছে, জনতা ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও এস আলম গ্রুপের বিরুদ্ধে অবৈধ এবং নিয়মবহির্ভূতভাবে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানে গত বছরের ১৭ ডিসেম্বর দুদক প্রধান কার্যালয় থেকে একটি অনুসন্ধান দল গঠন করা হয়। মাঠপর্যায়ের তদন্তে ব্যাংকের নথি, হিসাব বিবরণী ও সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য সংগ্রহ করা হয়।

অনুসন্ধানে উঠে আসে, এস আলম গ্রুপভুক্ত এস আলম ট্রেডিং কোম্পানি প্রাইভেট লিমিটেড ২০০৫ সালে জনতা ব্যাংকের আগ্রাবাদ করপোরেট শাখায় হিসাব খুলে। পরে ধাপে ধাপে এলসি, এলটিআর ও সিসি (হাইপো) ঋণ অনুমোদন, নবায়ন ও বর্ধিতকরণ করা হয়। মূলত ২০২০ সাল থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এ অর্থ আত্মসাৎ করা হয় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।।

দুদকের অনুসন্ধানে অভিযোগ করা হয়েছে, শাখা ও বিভাগীয় পর্যায়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা পরস্পর যোগসাজশে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপর্যাপ্ত জামানতের বিপরীতে ঋণ বর্ধিতকরণ ও নবায়নের সুপারিশ করেন, যা আত্মসাতের পথ সহজ করে।

দুদক জানায়, জনতা ব্যাংকের ক্রেডিট কমিটি ও পরিচালনা পর্ষদ চাইলে প্রস্তাবটি নাকচ করতে পারত বা বাংলাদেশ ব্যাংকে অনাপত্তির জন্য পাঠাতে পারত। কিন্তু তা না করায় ঋণ নবায়ন এবং আত্মসাতে সহায়তা হয়। 

অনুসন্ধানে আরও জানা যায়, মঞ্জুরিপত্রের শর্ত ভেঙে এস আলম গ্রুপভুক্ত অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে।

গ্লোবাল ট্রেডিং করপোরেশন লিমিটেডের অনুকূলে ২৬টি লোকাল এলসির বিপরীতে ২৬টি পে-অর্ডার, সোনালী ট্রেডার্সের অনুকূলে ২৩টি লোকাল এলসির বিপরীতে ২৩টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

দুদক মনে করছে, ২০০৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে ঋণ নবায়ন ও বর্ধিতকরণের নামে ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে, যা রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ঝুঁকি তৈরি করেছে।

এ ঘটনায় দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২-এর সংশ্লিষ্ট ধারা অনুযায়ী মামলা করা হয়েছে।

 

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

2h ago