গুম: ১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন শুনানি মঙ্গলবার
গুমের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) ১২ সেনা কর্মকর্তাসহ ১৭ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানির তারিখ পিছিয়ে আগামী ২৩ ডিসেম্বর মঙ্গলবার নির্ধারণ করা হয়েছে।
আজ রোববার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ তারিখ নির্ধারণ করেন। আদেশ অনুযায়ী, ২৩ ডিসেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন বা অব্যাহতি দেওয়া হবে কি না, তা জানা যাবে।
আওয়ামী লীগ শাসনামলে সংঘটিত গুমের ঘটনায় অভিযুক্ত র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র্যাব) দায়িত্ব পালন করা সেনাবাহিনী থেকে প্রেষণে থাকা ১০ সেনা কর্মকর্তা ট্রাইব্যুনালে হাজির হন।
মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৭ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠনের আদেশ আজ স্থগিত করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আজ তিন সেনা কর্মকর্তার পক্ষের আইনজীবীর যুক্তিতর্ক শোনেন ট্রাইব্যুনাল। পরে মুলতবির আদেশ দেন।
এর আগে মামলার অন্য আসামিদের পক্ষের আইনজীবীদের অব্যাহতির আবেদনের শুনানি করেন ট্রাইব্যুনাল।
আদালতে হাজির হন—ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তাফা সরওয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, কর্নেল এ কে এম আজাদ, কর্নেল আব্দুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান জুয়েল ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সাইফুল ইসলাম সুমন।
মামলার অভিযোগ অনুযায়ী, ২০১৬ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে র্যাবের টাস্কফোর্স ইন্টাররোগেশন (টিএফআই) সেলে ১৪ জনকে গুম, গোপন আটক ও নির্যাতন করা হয়।
প্রসিকিউশনের দাবি, 'আয়নাঘর' নামে পরিচিত তিনটি গোপন আটককেন্দ্র—যার মধ্যে আধা-ভূগর্ভস্থ টিএফআই সেলও রয়েছে—বেআইনি আটক কাজে ব্যবহৃত হতো।
এসব স্থাপনায় তদন্তকারী দলকে লক্ষ্য করে টাইম বোমা পুঁতে রাখার অভিযোগও আনা হয়েছে।
এদিকে, জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় রামপুরায় ২৮ জন নিহতের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় আজ আরও দুই সেনা কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। এ মামলায় আসামিপক্ষ অব্যাহতির আবেদন উপস্থাপন করে।
এই মামলার আসামিরা হলেন—বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাবেক কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদওয়ানুল ইসলাম, মেজর মো. রাফাত বিন আলম মুন এবং দুই পুলিশ কর্মকর্তা।
শুনানি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী সাংবাদিকদের জানান, সেনাবাহিনী ও বিজিবির গঠিত তদন্ত আদালতের প্রতিবেদনে অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের গুলিতে বা কার্যক্রমে কোনো হতাহতের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
কিন্তু, প্রসিকিউশনের আনুষ্ঠানিক অভিযোগপত্রে ২৮ জন নিহত হওয়ার কথা বলা হয়েছে।
আসামিপক্ষের দাবি, এসব মৃত্যুর জন্য অভিযুক্ত কর্মকর্তারা দায়ী নন।
রামপুরা মামলায় অভিযোগ গঠন হবে নাকি, আসামিদের অব্যাহতি দেওয়া হবে—সে বিষয়ে আদেশ দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনাল আগামী ২৪ ডিসেম্বর তারিখ ধার্য করেছেন।


Comments