এনসিপি নেতাকে আ. লীগের কর্মী সাজিয়ে গ্রেপ্তারের অভিযোগ, ওসিকে তলব
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতাসহ দুজনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল হাসিমকে তলব করেছেন আদালত। একই সঙ্গে গ্রেপ্তার ওই দুজনকে জামিন দেওয়া হয়েছে।
গত রোববার কিশোরগঞ্জের জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বিশেষ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আদেশে আজ ২৩ ডিসেম্বরের মধ্যে ওসিকে সশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারার অপব্যবহারের অভিযোগ তোলা হয়েছে।
জামিন পাওয়া দুজন হলেন এনসিপির ইটনা উপজেলা শাখার সদস্য মুরাদ আহমেদ ও মো. সাজ্জাদ মিয়া। মুরাদ আহমেদকে গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
আদালতের আদেশে বলা হয়, ২০২৫ সালে সংশোধিত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুযায়ী, সাত বছরের বেশি সাজাযোগ্য অপরাধে কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলে পুলিশের কাছে বিশ্বাসযোগ্য তথ্য থাকতে হবে। শুধু সন্দেহের ভিত্তিতে এ ধরনের গ্রেপ্তার আইনসম্মত নয়। মামলার নথি পর্যালোচনায় আদালত দেখেছেন, ইটনা থানার ওসি বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ধারায় কেবল সন্দেহের বশবর্তী হয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার দেখিয়েছেন। গ্রেপ্তারের পক্ষে কোনো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বা যাচাই-বাছাইয়ের প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করা হয়নি।
শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জানান, মুরাদ আহমেদ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন এবং তিনি এনসিপির অনুমোদিত কমিটির সদস্য। অপর আসামি সাজ্জাদ মিয়ার পরিবারও আন্দোলনে যুক্ত ছিল। তার মেয়ে জুলাই আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন বলে আদালতকে জানানো হয়। আইনজীবীরা বলেন, যাচাই-বাছাই ছাড়া তাদেরকে আওয়ামী লীগের কর্মী সাজিয়ে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ইটনা উপজেলা শাখার সমন্বয় কমিটির যুগ্ম সমন্বয়কারী আফজাল হোসাইন বলেন, মুরাদ আহমেদ উপজেলা এনসিপির সমন্বয় কমিটির সদস্য। তাকে প্রথমে পারিবারিক বিরোধের ঘটনায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তিনি কখনোই আওয়ামী লীগের কোনো পদে ছিলেন না।
কিশোরগঞ্জ জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, অন্য একটি দলের প্রভাবেই পুলিশ এ কাজটি করেছে।
এ বিষয়ে ইটনা থানার ওসি মোহাম্মদ আবুল হাসিম বলেন, 'মুরাদ আহমেদ যুবলীগের নেতা ছিলেন। নিজেকে বাঁচাতে পরে এনসিপিতে যোগ দেন। আদালতের নির্দেশনার কাগজ পেলে আইনগতভাবে তা মোকাবিলা করব।'
উল্লেখ্য, মুরাদ আহমেদকে গত ১৮ ডিসেম্বর রাতে ইটনা পুরাতন বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পুলিশের প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তিনি ও তার সহযোগীরা অস্ত্র ও বিস্ফোরক নিয়ে মিছিলে হামলা করেছিলেন।

Comments