চরদখলে ৫ খুন: মামলায় আসামি ৩০, গ্রেপ্তার নেই কেউ
নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় চর দখল নিয়ে গত মঙ্গলবার সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হওয়ার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত কাউকে আটক করা যায়নি।
হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল আলম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, নিহত মোবারক হোসেনের চাচা আবুল বাসার বাদী হয়ে ৩০ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। লিখিত অভিযোগটি হত্যা মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করা হয়েছে। তবে বিকেল পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
একই ঘটনায় গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন নিহত হওয়ায় হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের ৬ ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডসংলগ্ন জাগলার চর এলাকায় প্রান্তিক কৃষক ও ওই চরের গবাদিপশু খামারিদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সুখচর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. বাকের উদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করলেও তিনি কখনো জাগলার চরে যাননি।
তার ভাষ্য অনুযায়ী, প্রায় ৫০ থেকে ৬০ বছর আগে মেঘনা নদীর পানি কমে এ চরের সৃষ্টি হয়। সেখানে স্থায়ী কোনো জনবসতি নেই। তবে কৃষকেরা শুকনো মৌসুমে ধানসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি চাষ করে থাকেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন-অর্থ) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ঘটনার পর থেকে মঙ্গলবার রাত থেকেই যৌথবাহিনী অপরাধীদের ধরতে অভিযান চালাচ্ছে। তবে গ্রেপ্তার এড়াতে তারা এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ায় ধরতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।'
এর আগে নিহত আলা উদ্দিনের বাবা মহি উদ্দিন বলেন, 'জাগলার চরে ৩–৪টি বাহিনী সক্রিয় রয়েছে। গত ৪–৫ মাস ধরে তারা সেখানে আস্তানা গেড়েছে। চর নিয়ে তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। একটি পক্ষ চট্টগ্রাম থেকে আলা উদ্দিনকে ডেকে এনে গুলি করে হত্যা করেছে।'
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার সকালে আলা উদ্দিন ও কোপা সামছু বাহিনীর লোকজন চর ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে বৈঠকে বসে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সংঘর্ষ ও গোলাগুলি শুরু হয়। এতে গুলি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে পাঁচজন নিহত হন।
নিহতরা হলেন—সুখচর ইউনিয়নের আলা উদ্দিন (৩৫), সামছু ডাকাতের ছেলে মোবারক হোসেন (২৩), হাতিয়া পৌরসভার লক্ষীদিয়া মহল্লার হক সাব (৫৫), সুবর্ণচর উপজেলার দক্ষিণচর মজিদ গ্রামের আবুল কাশেম (৬৩) এবং চানন্দী ইউনিয়নের আশ্রয়ন প্রকল্প এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিন (৫০)।

Comments