ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরির অভিযোগে কারাগারে ১, ইউপি চেয়ারম্যান-সচিবকে শোকজ
নেত্রকোণার মোহনগঞ্জে ভুয়া জন্মনিবন্ধন তৈরির অভিযোগে একজনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
অভিযুক্ত মো. মওদুদ আহমেদ শাওন (৩৫) মোহনগঞ্জের টেংগাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তার স্ত্রী কাজী ঝর্না আক্তার স্থানীয় গাগলাজুর ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তা।
গাগলাজুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও সচিবের সই-সিল নকল করে শাওন ভুয়া কাগজ তৈরি করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
আজ শুক্রবার মোহনগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাফিজুল ইসলাম হারুন দ্য ডেইলি স্টারকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, গত বুধবার বিকেলে মোহনগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সামনের একটি দোকান থেকে শাওনকে আটক করা হয়। পরে গাগলাজুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব রাজিব মিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলা করেন।
ওসি বলেন, 'ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নকল সিল ও সই ব্যবহার করে ১৩ জনের জন্মনিবন্ধন তৈরি করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তারা রোহিঙ্গা।'
পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের বরাতে জানা যায়, প্রায় ৪-৫ বছর আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে টেকনিশিয়ান পদে আবেদন করেছিলেন শাওন। চাকরি না পেলেও তিনি ধীরে ধীরে ইউএনও কার্যালয়ের বিভিন্ন অনলাইন কার্যক্রমে যুক্ত হন।
একপর্যায়ে টিসিবি কার্ড অন্তর্ভুক্তি ও যাচাই, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনসংক্রান্ত সরকারি ওয়েবসাইটগুলোর ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ডের নিয়ন্ত্রণ নেন তিনি। ইউএনও কার্যালয়ের প্রভাব খাটিয়ে তিনি উপজেলার আরও ৭টি ইউনিয়নের জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যক্রমও নিয়ন্ত্রণে নেন।
বুধবার আটকের পর গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শাওনকে আদালতে হাজির করা হয়। তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়ে আদালত আগামী রোববার শুনানির দিন নির্ধারণ করেছেন বলে জানান ওসি হারুন।
এ ঘটনায় গাগলাজুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইমরান মিয়া ও সচিব রাজিব মিয়াকে শোকজ নোটিশ দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
এ তথ্য নিশ্চিত করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আমেনা খাতুন ডেইলি স্টারকে জানান, সংশ্লিষ্টদের আগামী ৩ কার্যদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। জাবাব পেলে জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠানো হবে। পরে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
এ বিষয়ে গাগলাজুর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইমরান মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে সচিব রাজিব মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই জবাব দেবেন বলে জানিয়েছেন। রাজিব দাবি করেন, ঘটনার সঙ্গে তিনি জড়িত নন এবং শাওন নিজেই সিল ও সই নকল করেছে।
জানতে চাইলে নেত্রকোণার জেলা প্রশাসক মো. সাইফুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বিষয়টি জানার পর ইউএনওকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে জেলার কোথাও যেন এ ধরনের অনিয়ম না ঘটে, সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।'


Comments