ভোটের সময় ৮ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে রাখার প্রস্তাব

নির্বাচন কমিশনের আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক প্রাক-প্রস্তুতিমূলক বৈঠক। ছবি: স্টার

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ও পরে মোট ৮ দিন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

আজ সোমবার রাজধানীর নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক প্রাক-প্রস্তুতিমূলক বৈঠক শেষে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, নির্বাচনের সময় দেড় লাখ পুলিশ, ৯০ হাজার থেকে ১ লাখ সেনাসদস্য ও সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় লাখ আনসার সদস্য মোতায়েনের প্রস্তাব করেছে বাহিনীগুলো।

আখতার আহমেদ বলেন, 'এবার ভোটের মাঠে ৫ দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাখার পরিকল্পনা ছিল ইসির। আজকের বৈঠকে ৮ দিন রাখার প্রস্তাব এসেছে। এটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।'

সচিব জানান, ভোটের আগে ৩ দিন, ভোটের দিন ও ভোটের পরের ৪ দিন নিরাপত্তায় থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নির্বাচন ভবনে সকাল সাড়ে দশটা থেকে শুরু হয়ে এই বৈঠক চলে। শেষ হয় দুপুর পৌনে দুইটায়। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এএমএম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে চার নির্বাচন কমিশনার এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। স্বরাষ্ট্র সচিব, ইসি সচিবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন। বৈঠক থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে কোনো ধরনের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়নি বলে জানান ইসি সচিব।

তিনি জানান, এআইয়ের অপব্যবহার রোধ, ড্রোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ও পুলিশের ইউনিফর্মে ক্যামেরা থাকার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

আসন্ন রোজার আগে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন হওয়ার কথা। ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে ইসি তফসিল ঘোষণা করবে বলে জানিয়েছে।

আজকের বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসি সচিব আখতার আহমেদ বলেন, 'ভোটকেন্দ্র, নির্বাচন কর্মকর্তা, নিরাপত্তা, নির্বাচনী এলাকাসহ নির্বাচন সংক্রান্ত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।'

ইসি সচিব আরও জানান, অবৈধ অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ কীভাবে হবে, বিদেশি সাংবাদিক-পর্যবেক্ষকদের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। 

বিগত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনেও ৮ দিনের জন্য মাঠে নেমেছিল সশস্ত্র বাহিনী। তবে যাতায়াতের জন্য আরও পাঁচ দিন সময় নিয়েছিল। এর আগে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ১০ দিন মাঠে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

নির্বাচনে সশস্ত্র বাহিনী সিভিল পাওয়ার নিয়ে উপস্থিত থাকবে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সচিব আখতার বলেন, 'এটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। তারা ইন এইড টু সিভিল পাওয়ার আছে। কিন্তু এটার সঙ্গে আরপিও সাংঘর্ষিক যেন না হয় সেটা আমরা খেয়াল রাখব।'

নির্বাচন নিয়ে কোনো ঝুঁকি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেখছে কিনা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কতটুকু ভোটের উপযোগী, জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, 'নির্বাচনের সময়সীমা হচ্ছে তফসিল ঘোষণা থেকে গেজেট প্রকাশ পর্যন্ত। আমাদের আলোচনার পরিধিটা এটুকু ছিল। বাকিটুকু নিয়ে আলোচনার এই মুহূর্তে সুযোগ নেই এবং আমরা করিওনি। আমি তাদের মধ্যে উদ্বেগ দেখিনি। বরং দেখেছি যে তারা একটা ভালো ইলেকশন করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।'

ইসি সচিব আরও বলেন, 'কেউ আশঙ্কা প্রকাশ করেননি। আশঙ্কা প্রকাশের কোনো কারণ এখানে ছিল না।'

নির্বাচনের পরিবেশ আছে কিনা, জানতে চাইলে আখতার আহমেদ বলেন, 'অবশ্যই নির্বাচন করার মতো পরিবেশ আছে এবং সেটা আরও সংহত করতেই আজকের আলোচনা এবং এটা চলমান থাকবে।'

Comments