ইনসাফের বাংলাদেশ গড়তে চায় জামায়াত: হামিদুর
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে 'স্টার নির্বাচনী সংলাপ' অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আজাদ ইনসাফের বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ আয়োজন শুরু হয়।
বক্তব্যে হামিদুর বলেন, 'আজকে আমাদের দলের পক্ষ থেকে যে ভিশন আমরা নিয়েছি—একটি ইনসাফের বাংলাদেশ, একটি মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠার বাংলাদেশ আমরা করতে চাই। একটি আত্মমর্যাদাশীল জাতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার জন্যে আমরা যে বাংলাদেশ চাই। অর্থনৈতিক মুক্তি, সুশাসন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা—এই মিশন নিয়ে আমরা কাজ করতে চাই।'
দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করা ইচ্ছার কথা জানান এ রাজনীতিক। বলেন, 'যে দুর্নীতি আজকের বাংলাদেশকে পিছিয়ে দিয়েছে, সেটাকে ভাঙতে চাই। আমরা গড়তে চাই ইনসাফের বাংলাদেশ। এটাই আমাদের লক্ষ্য।'
'আমরা বাংলাদেশকে এমন ভাবে গড়তে চাই যেখানে দুর্নীতি চিরবিদায় হবে। যেখানে দুর্বৃত্তায়ন বিদায় হবে, সন্ত্রাস বিদায় হবে। আইন-শৃঙ্খলাকে আমরা নতুনভাবে ঢেলে সাজাতে চাই। মায়ের কোলে যেমন শিশু নিরাপদ, বাংলাদেশের নাগরিক যেন, আগামী প্রজন্ম সেরকম নিরাপদ বাংলাদেশ গড়তে পারে।'
শিক্ষাখাত নিয়ে হামিদুর বলেন, 'আমরা শিক্ষাকে ঢেলে সাজাতে চাই। শিক্ষার ক্ষেত্রে আমরা সর্বস্তরে অবৈতনিক শিক্ষাকে গুরুত্ব দিচ্ছি। প্রযুক্তি ও জ্ঞান নির্ভর শিক্ষা দিয়ে একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চাই। গবেষণা ও শিক্ষাখাতে বাজেট বরাদ্দ নিয়ে আমাদের চিন্তা আছে।
'বর্তমানে জিডিপির ১ দশমিক ৬৯ শতাংশ বরাদ্দ রয়েছে শিক্ষায়। সেটা আমরা পর্যায়ক্রমে ৬ শতাংশে উন্নীত করতে চাই। কারিগরি শিক্ষাকে অবৈতনিক করবো আমরা। দুর্নীতিমুক্ত করতে হলে অবশ্যই শিক্ষা ক্ষেত্রে নৈতিকতার উপর গুরুত্ব দিতে হবে।'
তিনি আরও বলেন, 'আমাদের মেধাগুলো পাচার হচ্ছে। এই মেধা পাচার রোধ করতে হলে দেশের ভিতরে সুযোগ বাড়াতে হবে। বাংলাদেশের সন্তানরা বিদেশে গিয়ে অন্য রাষ্ট্রে অবদান রেখে এগিয়ে দিতে পারে। তাহলে বাংলাদেশ কেন পিছিয়ে থাকবে?'
অর্থনীতি প্রসঙ্গে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, 'অর্থনৈতিক বিবেচনায় আমাদের পদে পদে বাধা তৈরি করেছে দুর্নীতি। সেই জায়গায় আমরা যদি জিরো পয়েন্টে আসতে পারি তাহলে তা সম্ভব। এটার জন্য আমাদেরকে সব ক্ষেত্রে সুবিধা বাড়াতে হবে।'
অনেক দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে। রপ্তানিখাতে বস্ত্রশিল্প আমাদের বেশিরভাগ জায়গা দখল করে রেখেছে। রপ্তানিখাতকে যদি আমরা বৈচিত্র্যময় ও বহুমুখীকরণ করতে পারি এবং কর দুর্নীতি দূর করতে পারি তাহলেই এগিয়ে যাওয়া সম্ভব।'
'বাণিজ্যবান্ধব অর্থনীতি ও ভারসাম্য তৈরি করতে পারলে আমরা প্রতি তিন বছর অন্তর করের ক্ষেত্রে রিলিফের ব্যবস্থা আমরা নিয়ে আসছি। তিন বছর পর তাদেরকে স্বীকৃতি, সম্মান, সুযোগ তৈরি করে দিয়ে ইনসেন্টিভ দেবো। শতভাগ না অর্ধেক কর দিয়ে তিনি উৎসাহ বোধ করবেন। এভাবে বিনিয়োগে উদ্বুদ্ধ করা হবে।'
অন্যান্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'নারী শিক্ষার প্রসার ও নারীর অধিকারগুলো সমুন্নত করার ক্ষেত্রেও আমাদের ব্যাপক পরিকল্পনা আছে। মাতৃত্বকালীন রেশন, কৃষকদের জন্য নতুন কার্ড সিস্টেম, রেশন সিস্টেম চালু করার পরিকল্পনা আছে। মাছ আহরণ বন্ধের সময় মৎস্যজীবীদের যে ৩০ কেজি চাল দেওয়া হয় মাসে, সেটা আমরা তিন গুণ বাড়াবো।'
'এভাবে কৃষক, দিনমজুর, শ্রমিক এবং ছোট-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুযোগ সুবিধা বাড়িয়ে আমরা দেশের অর্থনীতিকে জনগণের উপযোগী করে গড়ে তুলবো। আমরা বেকারত্বকে শূন্যে নামিয়ে আনতে পরিকল্পনা নিয়েছি।'

Comments