‘সার-ডিজেলের দাম বাড়লেও ধানের দাম বাড়ে নাই’

কৃষক
লালমনিরহাট সদর উপজেলায় দুড়াকুটি হাটে এসে হতাশ হন কৃষক জহির উদ্দিন। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

কৃষক জহির উদ্দিন (৬৩) হাটে এসে খুব হতাশ ও নির্বাক হয়েছিলেন। লালমনিরহাট সদর উপজেলায় দুড়াকুটি হাটে ৩ মণ ধান বিক্রির জন্য এনেছিলেন তিনি। প্রতিমণ ধান ৯৫০ টাকা দরে ২ হাজার ৮৫০ টাকায় বিক্রি করেন।

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের কৃষক জহির উদ্দিনের মতো হাটে আসা অন্য কৃষকদেরও গতকাল শনিবার বিকালে হতাশ দেখা গেছে।

জহির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সার ও ডিজেলের দাম বেড়েছে অস্বাভাবিকভাবে। আমাদের উৎপাদিত ধানের দাম বাড়ে নাই। এখনো কম দামে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে।'

'একমাস আগে যে ধান প্রতিমণ এক হাজার টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম তা এখন বিক্রি করতে হচ্ছে ৯৫০ টাকা দরে। জমিতে ফসল উৎপাদন করলেই ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে,' যোগ করেন তিনি।

ধান বিক্রি করতে হাটে আসা লালমনিরহাট সদর উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের কৃষক গিয়াস উদ্দিন (৬২) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সার ও ডিজেলের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় আমরা হতাশ ও নির্বাক।'

কৃষক
ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

তিনি জানান, গত শুক্রবার প্রতিবিঘা জমি পাওয়া টিলার দিয়ে চাষ করতে খরচ হয়েছে ৩০০ টাকা। পরের দিন খরচ হয়েছে ৪০০ টাকা।

বলেন, 'সার, ডিজেল, কীটনাশকের দাম বেড়েছে। কৃষি শ্রমিকের মজুরি বেড়েছে। কিন্তু, আমাদের উৎপাদিত ফসলের দাম বাড়েনি। কৃষিকাজ ছেড়ে দিতে হবে। এভাবে আর কুলাতে পারছি না।'

হাটে আসা লালমনিরহাট সদর উপজেলার কৃষক বিশ্বনাথ বর্মণ (৫৮) ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাটে ৫০০ মণ ধান এনেছি বিক্রির জন্য। দেড় ঘণ্টা অপেক্ষার পর অবশেষে কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হয়েছি। প্রতিমণ ধান ৯৪৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি। আমরা অসহায়, বাকহীন। আমাদের কথা কেউ ভাবেন না।'

দুড়াকুটি হাটে ধান ক্রেতা পাইকার জোহর আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ ধান ৯৩০-৯৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ধানের দাম আগের তুলনায় কিছুটা কমেছে। কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে তা মহাজনদের কাছে বিক্রি করি। প্রতিমণ ধানে ১০-১৫ টাকা লাভ করতে পারি।'

লালমনিরহাটে ধান-চালের মহাজন আব্দুল মজিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গুদামে পর্যাপ্ত ধান মজুদ আছে। এ ছাড়া, বিদেশ থেকে চাল আমদানি করা হচ্ছে। আগের তুলনায় বাজারে ধানের দাম কিছুটা কম।'

Comments

The Daily Star  | English

Govt publishes gazette of 1,558 injured July fighters

Of them, 210 have been enlisted in the critically injured "B" category, while the rest fall under the "C" category of injured fighters

5h ago