ফরিদপুর জেলা কারাগার: ধারণক্ষমতা ৪২০, বন্দি ৯১৪, নেই কোনো চিকিৎসক

কারাগার
ফরিদপুর জেলা কারাগার। ছবি: সংগৃহীত

ফরিদপুর জেলা কারাগারে সার্বক্ষণিক চিকিৎসক না থাকায় পর্যাপ্ত সেবা পাচ্ছেন না বন্দিরা। প্রাচীন এই কারাগারে টিনসেড ঘরের একটি কক্ষ অসুস্থ বন্দিদের জন্য বরাদ্দ রাখা হলেও তা ব্যবহারের অনুপযোগী।

১৮২৫ সালে ৩৪ একর জায়গা নিয়ে শহরের প্রাণকেন্দ্র মূল সড়কের (মুজিব সড়ক) ঝিলটুলী এলাকাতে প্রতিষ্ঠিত হয় এই কারাগার। এর ৯ একর জায়গায় বন্দিদের থাকার জন্য স্থাপনা নির্মিত হয়েছে। বাকি ২৫ একর জায়গাজুড়ে রয়েছে পুকুর ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আবাসিক ভবন।

ফরিদপুর কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানিয়েছেন, প্রাচীন এই বন্দিশালার ধারণক্ষমতা ৪২০ জনের। বর্তমানে এখানে ৮৯৭ জন পুরুষ ও ১৭ নারী বন্দি অবস্থান করছেন। যদিও প্রতিদিন বন্দিসংখ্যা কম-বেশি ওঠানামা করে। এখানকার সহকারি সার্জনের পদটি ১ যুগেরও বেশি সময় ধরে শূন্য আছে।

আব্দুল্লাহ-আল-মামুন বলেন, 'বন্দিদের কেউ অসুস্থ হলে আমরা ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করি। এছাড়া জেলা সিভিল সার্জন অফিস একজন চিকিৎসককে এখানে প্রেষনে দায়িত্ব দিয়েছে। তিনি মাঝে মধ্যে এখানে আসেন। এর বাইরে আমাদের একজন সিনিয়র ফার্মাসিস্ট আছেন।'

তার ভাষ্য, কারাগারে যে জনবল আছে তাতে একজন বন্দি রোগীকে বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠালে তার পেছনে তিনজন ফোর্স দিতে হয়। এতে অন্য কাজের ব্যাঘাত সৃষ্টি হয়।

ফরিদপুর কারাগারের প্রাথমিক চিকিৎসাসেবার দায়িত্বে থাকা ফার্মাসিস্ট আশরাফুল আলম জানান, কম করে হলেও কারাগারে বন্দিদের জন্য ২ থেকে ৩ জন চিকিৎসক দরকার। এছাড়া অসুস্থ বন্দিদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য পৃথক একটি হাসপাতাল, ৩ থেকে ৪ জন নার্স ও প্যাথলজি পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা দরকার।

জেলা কারাগার সূত্রে জানা গেছে, গত ৩ মাসে এখান থেকে ১ হাজার ৫০ জন বন্দি বাইরের হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। বর্তমানে ২ জন বন্দি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এছাড়া গত এক মাসে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ১ বন্দি।

জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক জানান, আশপাশের অন্য জেলার কারাগারগুলো থেকেও অসুস্থ বন্দিরা ফরিদপুর কারাগারে আসেন। কারাবিধি অনুসারে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য কারারক্ষীদের প্রহরায় সরকারি হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ফরিদপুর কারাগারের বেসরকারি কারা পরিদর্শক কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকী জানান, ফরিদপুরের কারাগারের ধারণ ক্ষমতার চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বন্দি রয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই বন্দিদের নানাবিধ সমস্যা হয়।

কবিরুল ইসলাম বলেন, 'কারাগারে বন্দি ধারণ ক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিতে হবে। 

এ ব্যাপারে প্রসঙ্গে ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, 'জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে একজন চিকিৎসককে কারাগারে সংযুক্ত করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিয়মিত কারাগার পরিদর্শন করা হয়। বন্দিদের সুবিধা-অসুবিধার খোঁজ নেওয়া হয়। বড় কোনো সমস্যা সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিকভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।'

Comments

The Daily Star  | English

Shibir-backed candidates Shadik, Farhad leading in top two Ducsu posts

Counting going on till 6:00am; turnout 78% in polls marked by festivities

3h ago