নেই দুই হাত, পায়ের স্বাক্ষরেই এনআইডি পাচ্ছেন জসিম

জসিমকে এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

জন্ম থেকেই দুই হাত নেই জসিম মাতুব্বরের। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। পা দিয়ে লিখেই মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের গণ্ডি পেরিয়ে এখন তিনি ফরিদপুর সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী।

কিন্তু, পড়াশুনাসহ দেশের সরকারি–বেসরকারি নানা সেবা পেতে যেখানে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) জরুরি, এমনকি বাধ্যতামূলক, সেখানেই আটকে যান জসিম।

তার সেই ভোগান্তির অবসান হতে চলেছে। ২৬ বছর বয়সী জসিমের পা দিয়ে স্বাক্ষর করার পরই এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

ফরিদপুরের নগরকান্দা উপজেলার কদমতলী গ্রামের হানিফ মাতুব্বর ও তসিরন বেগমের ছেলে জসিম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দবির উদ্দিনের উদ্যোগে আজ বুধবার তাকে নিয়ে আসা হয় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে। সেখানে তিনি পা দিয়ে নথিতে স্বাক্ষর করেন এবং চোখের আইরিশ নেওয়া হয়।

ইউএনও দবির উদ্দিন বলেন, 'জসিমের চোখের আইরিশ ও স্বাক্ষর নিয়ে এর সঙ্গে প্রত্যায়নপত্র সংযুক্ত করে তাৎক্ষণিকভাবে নির্বাচন কমিশনে কাগজপত্র পাঠানো হয়।'

তিনি প্রত্যাশা করছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যেই জসিম এনআইডি পেয়ে যাবেন।

২০২৩ সাল থেকে এনআইডির জন্য নির্বাচন অফিসে ধর্না দিয়ে আসছিলেন জসিম। কিন্তু কাজ হয়নি। এক পর্যায়ে তিনি হাল ছেড়ে দেন।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ নিয়ে খবর প্রকাশিত হলে এগিয়ে আসেন নগরকান্দার ইউএনও এবং জসিমের পা দিয়ে করা স্বাক্ষর দিয়েই এনআইডি দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে জসিম বলেন, 'গতকাল রাত ১১টার দিকে ইউএনও স্যার আমাকে ফোন করে আজ সকালে তার অফিসে যেতে বলেন। তিনি বলেন, "তুমি কি একা আসতে পারবে, নাকি আমি গাড়ি পাঠাবো।" পরে আমি একাই ওনার অফিসে গিয়ে দেখা করি।'

তিনি বলেন, 'আমি সত্যিই খুব আনন্দিত। জন্ম থেকে হাত না থাকার কারণে অনেক কষ্ট করেছি, অনেক জায়গায় ঘুরেছি, কিন্তু এনআইডি পাইনি। পড়াশোনা ও নানান কাজে সমস্যায় পড়তে হয়েছে আমাকে। এখন আর এই সমস্যা থাকবে না।'

Comments