মিরপুরের ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার

মিরপুর-১০ নম্বর গোল চত্বরের ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

রাজধানীর মিরপুরের সব এলাকাতেই ফুটপাতে জমে উঠেছে ঈদ বাজার। মূলত নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরাই ভিড় করছেন এসব দোকানগুলোতে।

গতকাল ও আজ বৃহস্পতিবার রাত ৯টা থেকে ১০টার মধ্যে মিরপুর ১, মিরপুর ১০ ও ১১ এর কয়েকটি এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, ফুটপাতের দোকানগুলোতে ব্যাপক ভিড়।

সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা গেছে মিরপুর-১০ এর হোপ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সামনের ফুটপাতে। সেখানে কয়েকশ দোকান ফুটপাতের অলিতে গলিতে পসরা সাজিয়ে বসেছে। বেশিরভাগ দোকানেই বিক্রি হচ্ছে নারীদের সালোয়ার কামিজ, কসমেটিকস, বাচ্চাদের পোশাক।

এখানকার ক্রেতাদের অধিকাংশই এ কারণে নারী। ফুটপাতে বিক্রি হওয়া সালোয়ার কামিজের দাম ৫০০-৮০০ টাকার মধ্যে। কোনো কোনো দোকানে হাজারের বেশি দামের সালোয়ার কামিজও আছে।

ফুটপাতে কেনাকাটা করতে আসা মনোয়ারা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি ১০ বছর ধরে ফুটপাত থেকেই নিয়মিত কেনাকাটা করছি। এখানে দাম তুলনামূলক কম। আমি দুটো বিছানার চাদর কিনেছি। আরও কিছু কেনাকাটা করার ইচ্ছা আছে।'

মিরপুর ১ নম্বরের ফুটপাতের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

সরেজমিনে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে সাজিয়ে রাখা সালোয়ার কামিজ ও শাড়িতে 'ইন্ডিয়ান', 'পাকিস্তানি', 'ইরানি' ইত্যাদি লেখা। যদিও কাপড়গুলোর ডিজাইন কিছুটা পুরোনো।

পোশাক বিক্রেতা ইসমাইল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে অনেক কাপড় এনেছি। এতদিন থ্রি পিস বিক্রি করেছি ৭০০ টাকায়। এখন যে কাপড়গুলো বাকি আছে সেগুলো কম দামে দিয়ে দিচ্ছি। কাপড় থেকে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তাই লাভ কম হলেও বিক্রি করে দিচ্ছি।'

মিরপুর ১০ গোলচত্বর এলাকায় ফুটপাতের অধিকাংশ দোকানে পাওয়া যাচ্ছে ছেলেদের পোশাক। অধিকাংশ দোকানেই বিক্রি হচ্ছে প্যান্ট, শার্ট, টিশার্ট ও পাঞ্জাবি। সেখানকার দোকানগুলোতে ভিড় করছেন বিভিন্ন বয়সী পুরুষ ক্রেতারা।

ফুটপাতের দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, একেকটি প্যান্ট ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, পাঞ্জাবি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, টিশার্ট ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে।

মিরপুর ১০ নম্বরের ফুটপাতে একটি শার্টের দোকান। ছবি: শাহীন মোল্লা/স্টার

রূপনগর থেকে সেখানে প্যান্ট কিনতে এসেছেন প্রাইভেটকার চালক ইউনুস শেখ (২৬)। তিনি ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সাধারণত ফুটপাত থেকেই কেনাকাটা করি। কিন্তু এ বছর কাপড়-চোপড়ের দাম বেশি মনে হচ্ছে। যে প্যান্ট গত বছর সাড়ে ৪০০ টাকা দিয়ে কিনেছিলাম, এবার তার দাম চাইছে ৯০০ টাকা।'

এছাড়া মিরপুর-১ এর ফুটপাতের দোকানগুলোতে বিক্রি হচ্ছে বাচ্চাদের পোশাক, সালোয়ার কামিজ, শাড়ি, জুতা ইত্যাদি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ৫ থেকে ১০ বছর বয়সী বাচ্চাদের জিন্সের প্যান্ট ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা ও মেয়েদের ফ্রক ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জুতাও পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন দামে।

মিরপুর-১১ লালমাটিতে কসমেটিকসের দোকানগুলোতে ব্যাপক বেচাকেনা চলছে। আছে। পাশের বাউনিয়াবাদ বস্তির বাসিন্দারাই মূলত সেখানকার ক্রেতা। বিভিন্ন বয়সী নারীরা সেখানে কেনাকাটা করছেন। কম দামে অলঙ্কার, স্যান্ডেল, বাচ্চাদের পোশাক কিনছেন।

বিক্রি সম্পর্কে জানতে চাইলে কো-অপারেটিভ মার্কেটের সামনে পোশাক বিক্রেতা মো. আলাউদ্দিন বলেন, 'ক্রেতারা অনেক সময় নিয়ে দামাদামি করেন। অনেক কাপড় দেখেন। তাদেরকে কাপড় দেখাতে দেখাতেই আমরা হয়রান হয়ে যাই। কিন্তু সেই তুলনায় তেমন বিক্রি নাই। ভিড় এজন্য বেশি মনে হয়। কিন্তু যত দেখা যায় তত বিক্রি না।'

 

Comments

The Daily Star  | English
bangladesh bank buys dollar

BB asks female employees not to wear short sleeves at work

The Bangladesh Bank has issued a dress code for its officials and employees, suggesting female workers refrain from wearing short-sleeved and short-length dresses, and leggings while on duty.

4h ago