শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বগুড়ার আইএইচটির অধ্যক্ষকে বদলি

আমায়াত-উল-হাসিন। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজির (আইএইচটি) অধ্যক্ষ আমায়াত-উল-হাসিনকে বদলি করা হয়েছে।

আজ সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ রুহুল কুদ্দুসের সই করা আদেশ এ তথ্য জানানো হয়।

চিঠিতে বলা হয়, আইএইচটির অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) ডা. আমায়াত-উল-হাসিনকে বাগেরহাটের ম্যাটসের সিনিয়র লেকচারার হিসেবে বদলি করা হলো। একইসঙ্গে মাদারিপুরের ম্যাটসে সংযুক্ত করা হয়েছে তাকে। একইসঙ্গে আইএইচটির সিনিয়র লেকচারার মো. ওমর ফারুক মীরকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হলো।

বদলির ওই আদেশে আরও বলা হয়, আমায়াত-উল-হাসিনকে আগামী সাত দিনের মধ্যে বদলিকৃত স্থানে যোগদান করতে হবে। না হলে আট কার্যদিবসে তিনি স্ট্যান্ড রিলিজ হিসেবে গণ্য হবেন।

গত ১৩ দিন ধরে বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক সজল ঘোষকে গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন করছেন আইএইচটি শিক্ষার্থীরা।

তাদের অভিযোগ, গত ১২ বছর ধরে সজল ঘোষ এই প্রতিষ্ঠানের হলের একটি কক্ষ দখল করে মাদক সেবনসহ শিক্ষার্থীদের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে আসছে। অধ্যক্ষ আমায়াত-উল-হাসিনর এর সঙ্গে সরাসরি জড়িত বলেও দাবি করেন তারা।

আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা ৩ দফা দাবির কথা জানান। সেগুলো হলো—বহিরাগত সন্ত্রাসীকে আশ্রয় ও প্রশ্রয়দানকারী অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত-উল-হাসিনের অপসারণ; সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, ইভটিজিংকারী সজল ঘোষের গ্রেপ্তার ও শাস্তি এবং সব শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ।

বদলির বিষয়ে জানতে চাইলে ডা. আমায়াত-উল-হাসিন বলেন, 'একজন আসামি এখনো বাইরে, তাকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশকে কেন জিজ্ঞেস করছেন না?'

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আপনি উপস্থিত ছিলেন কি না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আমিও ছিলাম। আমি আমার রুমে ছিলাম সেই সময়।'

এই ঘটনায় স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের গঠিত তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি আজ আইএইচটিতে এসেছে। কমিটির সদস্যরা দিনব্যাপী প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। সেই সময় ১১ জন শিক্ষার্থীর অভিযোগ গ্রহণ করে তদন্ত কমিটি।

তদন্ত কমিটির সভাপতি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা অধিদপ্তরের অল্টারনেটিভ মেডিসিন বিভাগের উপপরিচালক গউসুল আজিম চৌধুরী। অন্য দুই জন হলেন—ঢাকা আইএইচটির সহকারী অধ্যাপক ডা. হাবিবুর রহমান ও বগুড়া আইএইচটির জুনিয়র প্রভাষক ডা. আব্দুল কাদের।

গউসুল আজিম চৌধুরী বলেন, তদন্ত চলমান রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের সঙ্গে কথা বলেছি। আমাদের সাক্ষাৎকার এখনো চলমান। প্রাপ্ত তথ্যগুলো বিশ্লেষণ করার পর এ বিষয়ে মতামত দিতে পারব। আমরা চাই এখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ ফিরে আসুক, শিক্ষার্থীরা স্বাভাবিক শিক্ষাকার্যক্রম চালু রাখুক। সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে আমরা তদন্ত কার্যক্রম চালাচ্ছি। তদন্ত যেন বিলম্বিত না হয়, আমরা খুব শিগগিরই প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেবো। আমাদের মতামত পাওয়ার পরপরই উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষার্থী ও হোস্টেলের মিল ম্যানেজার আমিনুল ইসলামকে মারধর করেন সজল কুমার ঘোষ। এই মারধরকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে সড়ক অবরোধ করেন। সেই সময় শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের ক্ষোভের বিষয়টি সামনে আসে। প্রায় দুই ঘণ্টা সড়ক অবরোধ রাখার পর তারা কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন।

সবশেষ রোববার দুপুর ১২টা থেকে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারসহ ৩ দফা দাবিতে ১০ ঘণ্টা রাস্তা অবরোধ করে রাখে আইএইচটির শতাধিক শিক্ষার্থী। পরে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের আশ্বাসে গতকাল রাত ১০টার দিকে অবরোধ তুলে নেয় তারা।

Comments

The Daily Star  | English
Khaleda Zia acquitted in Cumilla arson cases

Khaleda to contest polls from Feni: Abdul Awal Mintoo

The BNP vice chairman is hopeful of early election depending on court ruling on caretaker system

13m ago