আশুলিয়ায় নতুন মজুরি প্রত্যাখ্যান করে শ্রমিকদের বিক্ষোভ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

পুলিশের ধাওয়া। ছবি: স্টার

দেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা সর্বনিন্ম মজুরির সরকারি সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ করেছেন আশুলিয়ার কয়েকটি কারখানার শ্রমিকরা।

আজ বুধবার সকাল ১১টা ও দুপুর আড়াইটার পর দুই দফায় এই অসন্তুষ্ট শ্রমিকরা আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

এ সময় পুলিশ কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। তাদের আচরণও ছিল মারমুখী। বিপরীতে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।

গতকাল মঙ্গলবার মূল মজুরি ৫৬ দশমিক ২৫ শতাংশ বাড়িয়ে পোশাক শ্রমিকদের জন্য সাড়ে ১২ হাজার টাকা সর্বনিম্ন মজুরি নির্ধারণ করে সরকার, যা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে।

এদিন শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান মঙ্গলবার সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে পোশাক শ্রমিকদের নতুন মজুরি ঘোষণা করেন। তার আগে শ্রম ভবনে পোশাক শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে গঠিত বোর্ডের ষষ্ঠ সভায় এই মজুরি চূড়ান্ত করা হয়।

নতুন করে সর্বনিন্ম মজুরি ঘোষণার পরপরই এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে তা পুর্নবিবেচনার দাবি জানায় এ নিয়ে আন্দোলনরত শ্রমিকদের একটি জোট।

আশুলিয়ায় আজকের বিক্ষোভ নিয়ে কয়েকটি কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সকালে এখানকার বেশিরভাগ কারখানায় শিডিউল অনুযায়ী কাজ শুরু হয়। তবে কিছু কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ রাখেন। অনেকে বেরিয়ে আসেন। কিছু কারখানায় ছুটি দেওয়া হয়।

বেলা পৌনে ১১টার দিকে নরসিংহপুর এলাকার একটি কারখানার শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হয়ে বাইপাইল-আবদুল্লাহপুর সড়কে নেমে বিক্ষোভ করতে চাইলে পুলিশ শ্রমিকদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। দেয়। বেলা সাড়ে ১২টা থেকে ২টা পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেও আড়াইটার পর আবারও সড়কে জড়ো হন আরেকটি কারখানার শ্রমিকরা। তখন পুলিশ আবারও শ্রমিকদের ওপর চড়াও হয়। এ সময় টিয়ার শেল ছোড়ার পাশাপাশি কয়েকজন শ্রমিককে মারধরের ঘটনাও ঘটে।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শ্রমিকদের ভাষ্য, নতুন নির্ধারিত মজুরিতে কাজ করতে রাজি নন তারা। তাই তারা কারখানা থেকে বের হয়ে এসেছিলেন। তাদের অভিযোগ, কারখানা থেকে বের হওয়ার সময়েই পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।

এ বিষয়ে আশুলিয়ার শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহমুদ নাসের জনি বলেন, 'শ্রমিকেরা আজ সকালে যথাসময়ে কাজে যোগ দেন। কিছু কিছু কারখানা ছুটি দেওয়া হলে শ্রমিকরা বের হয়ে যান। কিছু শ্রমিক সড়কে জড়ো হতে চাইলে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া কয়েকটি কারখানায় সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়।'

সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহিদুল ইসলামের ভাষ্য, কয়েকটি জায়গায় শ্রমিকরা জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। তবে মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

Comments

The Daily Star  | English

Hasina can’t evade responsibility for Khaleda Zia’s death: Nazrul

In 2018, Khaleda walked into jail, but came out seriously ill, he says

4h ago