ইতালিতে শ্রমিক আমদানির ক্লিক ডে শেষ হয়েছে, ভিসা প্রদান কবে

রোমের পিয়াজ্জি নোভানো। ফাইল ছবি: রয়টার্স
রোমের পিয়াজ্জি নোভানো। ফাইল ছবি: রয়টার্স

ইতালি সরকার ঘোষিত সাড়ে চার লাখ নতুন শ্রমিক আমদানি প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপের আবেদনগ্রহণ শেষ হয়েছে। তিন দিনের আবেদন তারিখ বা 'ক্লিক ডে' শেষে মোট এক লাখ ৩৬ হাজার শ্রমিকের পদের বিপরীতে আবেদন জমা হয়েছে প্রায় ছয় লাখ আট হাজার।

আবেদন গ্রহণের প্রথম দিন ছিল ২ ডিসেম্বর। স্থানীয় সময় সকাল নয়টা থেকে সন্ধ্যা আটটা পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হয়। প্রথম ক্লিক ডেতে 'নন স্তাজোনালে' বা স্থায়ী শ্রমিকের আবেদন গ্রহণ করা হয়। এই ক্যাটাগরিতে ৫২ হাজার শ্রমিক আমদানি করা হবে। আবেদন জমা হয়েছে আড়াই লাখের বেশি।

দ্বিতীয় ক্লিক ডে ছিল ৪ ডিসেম্বর। এ দিনে গৃহকর্মীর আবেদন গ্রহণ করা হয়। ১০ হাজার শ্রমিকের জন্যে আবেদন জমা হয় প্রায় ৮৬ হাজার।

তৃতীয় ক্লিক ডে, অর্থাৎ ১২ ডিসেম্বরে স্তাজোনালে বা সিজন্যাল শ্রমিকের জন্য আবেদন গ্রহণ করা হয়। এ দিনে সাড়ে ৮২ হাজার শ্রমিকের জন্য আবেদন জমা হয় প্রায় দুই লাখ ৬০ হাজার।

ক্লিক ডের প্রথম দিন, ২ ডিসেম্বর অনলাইনে আবেদন করতে তেমন কোনো অসুবিধা না হলেও দ্বিতীয় দিন ৪ ডিসেম্বর সার্ভার কিছুটা ডাউন হয়ে যায়। ফলে অনেকে চেষ্টা করেও প্রথম পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে আবেদন জমা দিতে পারেননি।

স্থানীয় সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সকাল নয় টায় আবেদন গ্রহণ শুরু হওয়ার মাত্র চার মিনিটের মাথায় ঘোষিত কোটা পরিমাণ আবেদন জমা হয়ে যায়। সুতরাং চার মিনিটের পর যাদের আবেদন জমা হয়েছে তারা নূল্যা ওয়াস্তা বা এনওসি না পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে প্রথম চার মিনিটে কোটা পরিমাণ আবেদন জমা হলেও সব আবেদন গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। আবেদনে গড়মিল বা তথ্য বিভ্রাটের কারণে অনেক আবেদন বাতিল হবে। এই হিসাবে বলা যেতে পারে যাদের আবেদন প্রথম ১০ থেকে ১২ মিনিটের মধ্যে জমা হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে নূল্যা ওয়াস্তা বা ভিসার অনুমোদন পত্র পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। 

কবে নূল্যা ওয়াস্তা বা এনওসি দেয়া হবে?

সরকারি নিয়মানুসারে ২০ কর্মদিবসের মধ্যে আবেদনকারীকে নূল্যা ওয়াস্তার বিষয়ে জানানোর কথা, কিন্তু বাস্তবে তা সম্ভব হবে না। ইতালিসহ ইউরোপ জুড়ে বড় দিন এবং নতুন বছরের উৎসবের লম্বা ছুটি শুরু হবে কদিন পরে। সুতরাং মধ্য জানুয়ারির পরে নূল্যাওয়াস্তা সংক্রান্ত তথ্য পাওয়া যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আবেদন যাচাই

শ্রমিক আমদানির জন্য প্রতিটি আবেদনের রিচেভুতা বা জমা রসিদ দেয়া হয়েছে। রসিদে আবেদনকারীর নাম, শ্রমিকের নাম, আবেদন জমার সময়, তারিখ উল্লেখ রয়েছে। রসিদের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য ভেরিফাই কোড দেয়া আছে। তবে সহজে জানার জন্য আবেদনের ক্ষেত্রে যে 'স্পিড আইডি' ব্যবহার করা হয়েছে সেটা দরকার হবে। অর্থাৎ আপনি যার সহযোগিতা নিয়ে আবেদন জমা করেছেন তার মাধ্যমে আবেদনের বিস্তারিত দেখে নিতে পারেন।

ফেব্রুয়ারিতে আবারও আবেদন জমা নেয়া হবে

পূর্বঘোষনা অনুযায়ী আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের ৫, ৭ ও ১২ তারিখে দ্বিতীয় ধাপের এক লাখ ৫১ হাজার শ্রমিকের আবেদন গ্রহণ করা হবে। এবার যাদের আবেদন পাঠাতে দেরি হয়েছে, তারা ফেব্রুয়ারিতে আবারও আবেদন করতে পারবেন।

সতর্কতা

ইতালি আসতে আগ্রহীদের কাছ থেকে অগ্রিম টাকা নিয়ে প্রতারণা করা, আবেদনের জাল রসিদ তৈরি করাসহ নানা অভিযোগের কথা শোনা যায় ভুক্তভোগীদের মুখে। বিশেষ করে যারা স্তাজোনালে বা সিজন্যাল ভিসায় আসতে আগ্রহী তাদের জন্য ইতালির আইন আরও বলিষ্ঠ করা হচ্ছে। এই ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশিদের প্রায় নয় বছর কালো তালিকাভুক্ত করে রাখা হয়েছিলো। এখনও বিশেষ নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সুতরাং ভিসা হওয়ার আগে লেনদেন না করা এবং ইতালি এসে নয় মাস পরে দেশে ফিরে যেতে বাধ্য হওয়ার বিষয়গুলো ভালো ভাবে জেনেবুঝে, সাবধানে অগ্রসর হওয়া উচিত সবার।

 

Comments

The Daily Star  | English
Dhaka air turns unhealthy even before dry season

Dhaka air turns unhealthy even before dry season

With the dry season approaching, Dhaka city’s air quality has once again slipped to an unhealthy level, underscoring the inadequacy of the limited measures taken by the authorities to curb air pollution.

12h ago