সিএমপিতে ডগ স্কোয়াড

ডগ স্কোয়াড
সিএমপির ‘ডগ স্কোয়াড’-এ প্রশিক্ষিত কুকুরগুলো নেদারল্যান্ডস থেকে আনা হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত

বিস্ফোরক ও মাদক শনাক্ত করতে সক্ষম প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে ডগ স্কোয়াডের যাত্রা শুরু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশে (সিএমপি)।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই স্কোয়াডের উদ্বোধন করবেন সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায়।

সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম বিভাগের তত্ত্বাবধানে নয়টি কুকুরকে রাখা হয়েছে নগরীর মনছুরাবাদে নগর পুলিশ লাইনে নব নির্মিত ভবনটিতে।

নেদারল্যান্ডস থেকে আনা এই কুকুরগুলোর মধ্যে চারটি বিস্ফোরক ও পাঁচটি মাদক শনাক্তে বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।

সিএমপি সূত্রে জানা গেছে, সিএমপি কে-নাইন ইউনিটে বিভিন্ন পদমর্যাদার ১৮ পুলিশ সদস্য যুক্ত করা হয়েছে। এই ইউনিটের প্রধান হিসেবে থাকবেন কাউন্টার টেররিজম বিভাগের এক সহকারী কমিশনার।

২০১৪ সালে সিএমপির সাবেক কমিশনার আব্দুল জলিল মন্ডলের সময়ে ডগ স্কোয়াড গঠনের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, কিন্তু বারবার চেষ্টা করেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।

এরপর ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর পুলিশ সদরদপ্তরে সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (প্রশাসন ও অর্থ) সানা শামীমুর রহমানের সই করা চিঠিতে আটটি কারণে ডগ স্কোয়াড গঠনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হয়।

এর মধ্যে ছিল—চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, হযরত শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, মাদকবিরোধী অভিযান জোরদার করা, ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, বিস্ফোরক শনাক্ত করা, তারকাবিশিষ্ট হোটেলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি স্টেডিয়াম, আন্তর্জাতিক ইভেন্ট ও গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।

সেই প্রস্তাবে নতুন কে-৯ ইউনিটকে (ডগ স্কোয়াড) সিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম (সিটি) বিভাগের অধীনে গঠন করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়। এর জন্য সিএমপি দুটি ভিন্ন প্রজাতির ২০টি প্রশিক্ষিত কুকুর চেয়েছিল, যার মধ্যে আটটি ছিল জার্মান শেফার্ড৷

প্রস্তাবে জনবল হিসাবে ইউনিট পরিচালনার জন্য ৩৮ পুলিশসহ মোট ৪০ কর্মচারীর প্রয়োজন হবে বলে জানানো হয়।

গত বছর নেদারল্যান্ডস থেকে কুকুরের ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনার ওপর ১৫ দিনের প্রশিক্ষণ নেন সিএমপির আট সদস্য।

একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা দ্য ডেইলি স্টারকে বলছেন, চট্টগ্রামে চালু হওয়া শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ও ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের নিরাপত্তা তাদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ।

তারা জানান, এই নগরী মাদক পাচারের অন্যতম রুট হিসেবে প্রায়ই গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। প্রায় উদ্ধার ও জব্দ করা হয় আইস, ইয়াবা ও অন্যান্য মাদক। এ ছাড়াও, জঙ্গিবাদের ঘটনা এই নগরে নতুন নয়৷

কর্মকর্তারা আরও জানান—বাসস্টপ, রেল স্টেশন ও বিমানবন্দরে যানবাহন ও ব্যাগে গণহারে তল্লাশির বিষয় থাকে। এ ক্ষেত্রে একজন মানুষ বা একটি যন্ত্র দিয়ে পুরো যানবাহন বা বিশাল এলাকা তল্লাশি করা বা সন্দেহভাজনের ব্যাগের সব মালপত্র দেখা সময়সাপেক্ষ ও চ্যালেঞ্জিং। এ ছাড়াও, তল্লাশির সময় পুলিশের বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগ উঠে।

পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে এই ডগ স্কোয়াড মূলত মাদকদ্রব্য, অস্ত্র, বিস্ফোরকদ্রব্য উদ্ধারে কাজ করবে।

সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (এডিসি) আসিফ মহিউদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'প্রশিক্ষিত কুকুরগুলো নেদারল্যান্ডস থেকে আনা হয়েছে। এগুলো এত দিন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে যুক্ত ছিল। গত ২০ ডিসেম্বর নয়টি কুকুর সিএমপিতে পাঠানো হয়।'

'লুকিয়ে রাখা বিস্ফোরক কিংবা মাদক খুঁজে বের করতে বা জঙ্গি আস্তানায় বোম ডিস্পোজাল ইউনিটের সদস্যরা যেখানে পৌঁছাতে পারেন না সে সব জায়গায় তল্লাশির জন্য দ্রুততম সময়ে এই কাজ করতে সক্ষম এই বিশেষ কে-নাইন বা ডগ স্কোয়াড।'

Comments

The Daily Star  | English

Tug-of-war over water lily continues

The Election Commission and National Citizen Party remain locked in a heated debate over the party’s choice of electoral symbol, the water lily -- a dispute that began in June.

6h ago