গণমাধ্যমকর্মীদের নীতিমালা প্রত্যাখ্যান করল আরএফইডি, ইসিকে সংশোধনের আহ্বান

নির্বাচন কমিশনের জারি করা সাংবাদিক-গণমাধ্যমকর্মীদের নীতিমালা-২০২৫ প্রত্যাখ্যান করেছে রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)। একইসঙ্গে এই নীতিমালা সংশোধনে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অংশগ্রহণে যৌক্তিক ও বাস্তবসম্মত আলোচনার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

গতকাল রোববার যৌথ বিবৃতিতে আরএফইডি সভাপতি কাজী জেবেল ও সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী এই আহ্বান জানান।

তারা বলেন, 'এই নীতিমালা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও নাগরিকের নির্বাচনী তথ্য জানার অধিকারকে সংকুচিত করবে। বিশেষ করে নির্বাচনকেন্দ্রিক সংবাদ সংগ্রহে গণমাধ্যমকর্মীদের অবাধ চলাচল, পর্যবেক্ষণ ও তথ্য প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।'

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, 'এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যম সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের সঙ্গে কোনো আলোচনা না করাটা গণতান্ত্রিক চর্চার পরিপন্থী।'

'নীতিমালাটিতে সাংবাদিকদের নিরাপদ, স্বাধীন ও বাধাহীন কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করার কোনো সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা নেই। বিশেষ করে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে অপ্রয়োজনীয় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, যা সংবাদ সংগ্রহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিঘ্ন ঘটাবে। এই নীতিমালায় বিগত নির্বাচন কমিশনগুলোর মতোই প্রিজাইডিং কর্মকর্তাকে অবহিত করে ছবি তোলা ও তথ্য সংগ্রহের শর্ত রাখা হয়েছে, যা বাস্তবতার নিরিখে সাংবাদিকতার স্বাধীনতা ও গতি-উভয়ের সঙ্গেই সাংঘর্ষিক।'

বিবৃতিতে তারা আরও বলেন, 'এ ছাড়া একই ভোট কক্ষে একাধিক সাংবাদিকের প্রবেশ ও ১০ মিনিটের বেশি সময় অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা সংবাদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে অযৌক্তিক সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে। এতে গণমাধ্যমকর্মীদের কার্যপরিধি সংকুচিত হবে এবং নির্বাচনী অনিয়মের স্বতঃস্ফূর্ত ও নির্ভরযোগ্য পর্যবেক্ষণ বাধাগ্রস্ত হতে পারে।'

'এদিকে নীতিমালায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলেও, তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালনে বাধাদানকারী কোনো নির্বাচন কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বা অন্য কারো বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে—সে বিষয়ে কোনো উল্লেখ নেই। যা একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতিমালার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ঘাটতি' বিবৃতিতে যোগ করেন তারা।

নীতিমালায় আরও বলা হয়, সাংবাদিকরা ভোটকক্ষে কোনো নির্বাচনী কর্মকর্তা, এজেন্ট বা ভোটারের সাক্ষাৎকার গ্রহণ করতে পারবেন না এবং ভোট কক্ষ থেকে সরাসরি সম্প্রচারও করা যাবে না। যা অবাধ তথ্যপ্রবাহ, জবাবদিহিতা ও নির্বাচনী অনিয়মের তাৎক্ষণিক চিত্র উপস্থাপনের ক্ষেত্রে বড় বাধা সৃষ্টি করবে। এই ধরনের বিধিনিষেধ সাংবাদিকতার মৌলিক নীতিমালার পরিপন্থী এবং গণতন্ত্রচর্চাকে বাধাগ্রস্ত করবে।

আরএফইডি নেতারা গণমাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সক্রিয় অংশগ্রহণের ভিত্তিতে একটি যুগোপযোগী, গণমাধ্যমবান্ধব ও বাস্তবসম্মত নীতিমালা প্রণয়ন করতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

এদিকে, ইসি গত ২৩ জুলাই 'নির্বাচনী সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য নীতিমালা-২০২৫' শীর্ষক  নতুন নীতিমালা জারি করে।

Comments

The Daily Star  | English

Inside the July uprising: Women led, the nation followed

With clenched fists and fierce voices, a group of fearless women stood before the locked gates of their residential halls on the night of July 14, 2024. There were no commands, no central leader -- only rage and a deep sense of injustice. They broke through the gates and poured into the streets.

15h ago