স্টেশন না থাকলেও এখানে থামে ট্রেন, যাত্রী ওঠে-নামে

সেতুতে ওঠার আগে দাঁড়িয়ে রয়েছে একটি ট্রেন। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

লালমনিরহাটের তিস্তা ও কুড়িগ্রামের সিঙ্গারডাবরী রেলস্টেশনের মাঝামাঝি রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়ালডাঙ্গা ইউনিয়নের পাঁচগাছি গ্রাম। এখানে নেই কোনো রেলস্টেশন। তবু ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে প্রতিদিন এখানে থামে ট্রেন। যাত্রীরা এখান থেকে ট্রেনে ওঠেন, নামেন।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, তিস্তা–কুড়িগ্রাম রেলপথে প্রতিদিন এক জোড়া আন্তঃনগর, এক জোড়া মেইল, এক জোড়া কমিউটার ও এক জোড়া লোকাল ট্রেন চলাচল করে।

তিস্তা ও সিঙ্গারডাবরী স্টেশনের মাঝপথে পাঁচগাছিতে ট্রেনের এই  অনানুষ্ঠানিক বিরতি কেবল একটি ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর কারণে।

লোকোমাস্টার আব্দুস সালাম জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই তারা ট্রেন থামিয়ে ধীরগতিতে সেতু পার হন।

তিনি বলেন, 'তিস্তা–কুড়িগ্রাম রুটে সাধারণত ৫৫–৬০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো হয়, কিন্তু এখানে সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটার গতিতে যেতে হয়।'

এখানে রয়েছে দুধখাওয়ার খালের ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের রেলওয়ের পুরনো 'ফোর-জে' সেতু। ২০২৩ সালের আগস্টে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর এটি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে ট্রেন চালকরা সেতুর আগে ট্রেন থামিয়ে গতি সর্বোচ্চ দুই কিলোমিটারে নামিয়ে দেন এবং প্রায় মিনিটখানেক থামার পর খুবই ধীরগতিতে সেতুটি অতিক্রম করেন।

এই রুটের নিয়মিত একজন ট্রেনযাত্রী মজিদুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দিনের চেয়ে রাতে ভয় বেশি লাগে। এখানে রাতে ট্রেন থামলে যাত্রীরা নিরাপত্তা ঝুঁকিতে পড়েন। আর সেতুর কারণে দুর্ঘটনার ভয় তো থাকেই।'

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের প্রকৌশল শাখা জানিয়েছে, প্রায় ৪ কোটি ৬৬ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতুটি পুনর্নির্মাণ করছে রাজশাহীর একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে কার্যাদেশ দেওয়া হলেও কাজ শুরু হয় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে।

সেতুর পুনর্নির্মাণ কাজ চলছে। ছবি: এস দিলীপ রায়/স্টার

তবে স্থানীয়দের অভিযোগ, কাজের গতি খুব ধীর। স্থানীয় বাসিন্দা মজিবর রহমান (৬৭) বলেন, 'প্রায় এক বছর ধরে কাজ চলছে, কিন্তু খুব একটা অগ্রগতি নেই। এর আগে বালুভর্তি বস্তা ফেলে সেতুর পিলার রক্ষা করা হয়েছিল।'

বাড়ির কাছে ট্রেন থামায় স্টেশন পর্যন্ত যেতে হয় না তাদের। এ নিয়ে এই গ্রামের মানুষ খুশি হলেও, নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা তাদের ভেতরেও কাজ করে।

লালমনিরহাট বিভাগীয় রেলওয়ের সহকারী প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, 'প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ। চুক্তি অনুযায়ী এ বছর ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা।'

তিনি বলেন, 'যেহেতু এই রুটে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে, তাই কাজের সময় সতর্ক থাকতে হয়। এর জন্যই সময় বেশি লাগছে।'

Comments

The Daily Star  | English

Ducsu polls: Security measures tightened at Dhaka University

Voting for the long-awaited Ducsu and hall union elections began this morning after a six-year pause

33m ago