পূজামণ্ডপের আশেপাশে মেলা-মদ-গাঁজার আড্ডা বসতে দেওয়া হবে না: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে দেশজুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম। তিনি জানান, এবার পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সার্বিকভাবে সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আনসার, র‍্যাব ও বিজিবি মোতায়েন থাকবে। বিশেষ করে, সীমান্ত এলাকার মণ্ডপগুলোর মূল নিরাপত্তায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দায়িত্ব পালন করবে। একই সাথে, পূজামণ্ডপের আশেপাশে কোনো অবৈধ মেলা, গাঁজার আড্ডা বা মদের আড্ডা বসতে দেওয়া হবে না।

আজ সোমবার শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে আয়োজিত প্রস্তুতি সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, পূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটি নতুন মোবাইল অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। এই অ্যাপের মাধ্যমে যেকোনো অপ্রীতিকর ঘটনার অভিযোগ দেওয়া যাবে এবং দ্রুত প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।

তিনি আরও বলেন, 'আমাদের সব বাহিনী থাকবে—সশস্ত্র বাহিনী, পুলিশ, আনসার, র‍্যাব, বিজিবি। তবে, বর্ডার এলাকার পূজামণ্ডপগুলিতে মূল দায়িত্বটা বিজিবির উপরেই বর্তায়। বিজিবিকে সেখানে আরেকটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আনসার বাহিনী সব জায়গায় থাকবে।

এবার দুর্গাপূজায় মণ্ডপের আশেপাশে কোনো অননুমোদিত কার্যক্রম চলবে না উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এই পূজা উপলক্ষে অনেক সময় আশেপাশে যে মেলাগুলি হয়, তারপর ওখানে গাঁজার আড্ডা বসে, মদের আড্ডা বসে—এগুলি কিন্তু এবার কোনো অবস্থাতেই হবে না। তবে, পূজা কমিটির অনুমতি নিয়ে ছোটখাটো দুই একটা দোকান থাকতে পারে বলে জানান তিনি।

এই বছর সারাদেশে আনুমানিক ৩১,৫৭৬টি পূজামণ্ডপ স্থাপন করা হবে। তিনি বিস্তারিত তথ্য দিয়ে জানান, মেট্রোপলিটন এলাকাগুলিতে মোট ১,২৭০টি মণ্ডপ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এলাকায় ২৫৫টি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) এলাকায় ২৭৬টি, রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) এলাকায় ১০৩টি, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ (কেএমপি) এলাকায় ১১৬টি, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ (বিএমপি) এলাকায় ৮৭টি, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ (এসএমপি) এলাকায় ১৫৬টি, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি) এলাকায় ১২০টি এবং রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি) এলাকায় ১৫০টি মণ্ডপ থাকবে।

রেঞ্জ এলাকাগুলিতে পূজামণ্ডপের সংখ্যা হলো: ঢাকা রেঞ্জে ৭,১৩৬টি, চট্টগ্রাম রেঞ্জে ৪,২৮৮টি, রাজশাহী রেঞ্জে ৩,৪৬০টি, সিলেট রেঞ্জে ২,৪৮০টি, খুলনা রেঞ্জে ৪,৫৩৪টি, রংপুর রেঞ্জে ৫,১৭৫টি, বরিশাল রেঞ্জে ১,৬১৪টি এবং ময়মনসিংহ রেঞ্জে ১,৫৯৯টি।

উপদেষ্টা আয়োজকদের প্রতি বিশেষ অনুরোধ জানিয়ে বলেন, 'অনেক সময় দেখা যায় এই তালিকার বাইরেও অনেক সময় দুই একটা মণ্ডপ করে। যেহেতু আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শুধুমাত্র প্রাপ্ত তালিকার ওপর ভিত্তি করে মোতায়েন করা হয়, তাই আগেই লিস্ট দিয়ে দিবেন যেন সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দিতে পারি।'

পূজা শেষে প্রতিমা বিসর্জনের জন্যও নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, সন্ধ্যা ৭টার আগেই যেন বিসর্জন শেষ করতে পারি। সবাইকে আমরা একই ইন্সট্রাকশন দিছি।

এবারের পূজাকে কেন্দ্র করে কোনো পক্ষ থেকে কোনো ধরনের উদ্বেগ নেই বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

দুষ্কৃতিকারীদের বিষয়ে সতর্ক করে উপদেষ্টা বলেন, যারা দুষ্কৃতিকারী তারা সব জায়গায় দুষ্কর্ম করার চেষ্টা করে। শুধু পূজায় না, সব জায়গায় করার চেষ্টা করবে। এটা প্রতিহত করার দায়িত্ব হলো আমাদের আপনাদের, আমরা সবাই মিলে এটারে প্রতিহত করিব।

Comments

The Daily Star  | English

This victory belongs to the students, not any faction: Shadik Kayem

Newly elected Ducsu VP says they do not want to mark victory with rallies

1h ago