১০ দিনের সফরে পাকিস্তানে ধর্ম উপদেষ্টা

পাকিস্তানে ১০ দিনের সফরে গেছেন ধর্মবিষয়ক উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) এর দেড় হাজারতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সিরাতুন্নবী আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে গত ৩ সেপ্টেম্বর তিনি পাকিস্তানে যান।
খালিদ হোসেনের ব্যক্তিগত সচিব সাদেক আহমেদের স্বাক্ষরিত সফরসূচিতে জানানো হয়েছে, ৪ সেপ্টেম্বর ইসলামাবাদে বাংলাদেশ হাইকমিশন ও কিং ফয়সল মসজিদ পরিদর্শন; ৫–৬ সেপ্টেম্বর সিরাতুন্নবী সম্মেলনের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন; ৭ সেপ্টেম্বর কুলসুম নওয়াজ, মুহাম্মদ শরিফ ও আব্বাস শরিফের কবর জিয়ারত; ৮ সেপ্টেম্বর সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ, আল্লামা মুসা রুহানি বাজি ও আল্লামা ইকবালের মাজার জিয়ারত এবং জামিয়া আশরাফিয়া পরিদর্শন; ৯ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজের সঙ্গে ও ১০–১১ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে সাক্ষাৎ কথা রয়েছে ধর্ম উপদেষ্টার।
আগামী ১২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলেছেন, কোনো রাষ্ট্রীয় চুক্তি বা আলোচনা ছাড়া অন্তর্বর্তী সরকারের একজন মন্ত্রী পর্যায়ের কর্মকর্তার এমন দীর্ঘ সফর 'অভূতপূর্ব'। সূত্র জানিয়েছে, অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো মন্ত্রী এখনো প্রতিবেশী দেশে এত দীর্ঘ সরকারি সফরে যাননি।
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ুন কবীর বলেন, 'অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের একজন সদস্যের এ সময়ে টানা ১০ দিন দেশের বাইরে থাকা যৌক্তিক মনে হয় না। রাষ্ট্রীয় গুরুত্বের বাইরে পাকিস্তানে এমন দীর্ঘ সফর অনেকে ইতিবাচকভাবে নাও দেখতে পারেন।'
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খালিদ হোসেন বলেন, 'পাকিস্তান সরকার আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সব খরচ আয়োজকরা বহন করছে। এ নিয়ে সমালোচনার কোনো কারণ দেখি না।'
দুই দিনের সম্মেলনে যোগ দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রী পর্যায়ের একজন কর্মকর্তার ১০ দিনের সফরে যাওয়ার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, 'কিছু মানুষ আছেন, পাকিস্তানের নাম শুনলেই তাদের গা জ্বলে।'
'ভারত সরকার আমন্ত্রণ জানালেও আমি যেতাম। আমরা নোংরা রাজনীতিতে নেই; আমরা রাজনীতির ঊর্ধ্বে। দয়া করে এমন কোনো সংবাদ করবেন না যা ক্ষতির কারণ হয়। আমি সবাইকে সমানভাবে দেখি। কোনো ধর্মের প্রতি পক্ষপাতিত্ব করি না,' বলেন তিনি।
সফরের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে খালিদ বলেন, 'কোনো দেশে ইচ্ছামতো যাওয়া যায় না; পারস্পরিক সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের জন্য বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ হবে। এখানে রাষ্ট্রেরও স্বার্থ আছে। তাছাড়া আমি আমাদের প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীকে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে সমবেদনা জানিয়ে একটি চিঠি পৌঁছে দেবো।'
বাংলাদেশও কি হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দেড় হাজারতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে বড় আকারে বিশেষ কোনো অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারতো কি না জানতে চাইলে ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, 'এটি সত্যি, তবে সময় এখনো ফুরিয়ে যায়নি। এ সফর শেষে ফিরে এসে আমি দেখব এ বিষয়ে (সিরাতুন্নবী) আর কী করা যায়।'
Comments