কুষ্টিয়া

জাতীয় মহাসড়ক সড়ক পরিণত হচ্ছে হেরিংবনে

সড়কে বিটুমিনের কার্পেটিং উঠে যাওয়ায় জাতীয় মহাসড়ক পরিণত হয়েছে ইটের হেরিংবনে। ছবি: আনিস মণ্ডল/স্টার

দেশের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ জাতীয় মহাসড়কে ব্যাপক খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। এতে সড়কে কমছে যানবাহনের গতি, প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।

এ অবস্থায় কার্পেটিং করা জাতীয় মহাসড়কটি এখন হেরিংবন সড়কে পরিণত হচ্ছে। ইতোমধ্যে লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে প্রায় আড়াই কিলোমিটার হেরিংবনে রূপ নিয়েছে। এ ছাড়া সড়কটির কুষ্টিয়া অংশের ২৫ কিলোমিটারের মধ্যে ১০ কিলোমিটার বর্তমানে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। কিছু কিছু জায়গা একেবারেই চলাচলের অনুপযোগী।

সরেজমিনে কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর গেট থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ঘুরে দেখা যায়, ভাদালিয়া থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় অংশে জায়গায় জায়গায় খানাখন্দ ও উঁচু-নিচু ঢিবি তৈরি হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অংশটি হলো লক্ষ্মীপুর বাজার থেকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত। এ অংশে ধীরে ধীরে বিটুমিন উঠে গিয়ে সড়ক হেরিংবনে পরিণত হচ্ছে।

সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী গড়াই পরিবহন বাসের চালক মো. রশিদ বলেন, 'গত এক বছরে রাস্তা সবচেয়ে বেশি ভেঙেছে। আগের এক ঘণ্টার পথ এখন যেতে লাগে দুই ঘণ্টা। ভাঙাচুরায় গাড়ি খুব দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।'

সড়কটিতে নিয়মিত চলাচল করেন প্রকৌশলী মাহমুদ আল হাফিজ। হেরিংবন সংস্কারের তীব্র সমালোচনা করে তিনি বলেন, 'একটা জাতীয় মহাসড়ক হেরিংবনে পরিণত হওয়া লজ্জার। জন্মের পর থেকেই এটা কার্পেটিং করা সড়ক হিসেবে দেখছি। এখন কী এমন অভাব হলো যে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটিকে হেরিংবন করা হচ্ছে? জাতীয় মহাসড়ক কখনো এমন হতে পারে না। দ্রুত নতুন প্রকল্প নিয়ে সড়কটিকে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনা উচিত।'

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মো. নজিবুল হক বলেন, 'দেশের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের যোগাযোগে গুরুত্বপূর্ণ এই জাতীয় মহাসড়কটি এমন অযত্ন-অবহেলায় থাকতে পারে না। বর্ষাকালে হঠাৎ হেরিংবন শুরু করলেন, এটা সাময়িক না স্থায়ী বুঝতে পারছি না। তবে এভাবে চলতে পারে না। যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, দুর্ঘটনা ঘটছে। শহর থেকে ক্যাম্পাসে পৌঁছাতে আমাদের প্রতিদিন ভোগান্তি পোহাতে হয়।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মুহাম্মদ মনজুরুল করিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সড়কটির কুষ্টিয়া অংশ প্রায় ২৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লক্ষ্মীপুর পর্যন্ত ৫ কিলোমিটার বেশি ক্ষতিগ্রস্ত। ক্ষতিগ্রস্ত অংশে অস্থায়ীভাবে হেরিংবন করা হয়েছে।'

এই সড়ক সংস্কারে কোনো বরাদ্দ নেই জানিয়ে তিনি বলেন, 'বিভিন্ন সড়ক মেরামতের জন্য আমাদের যে ইট থাকে, তা দিয়েই হেরিংবন করা হচ্ছে। ৭-৮ বছর আগে সড়কটি পুনর্নির্মাণ করা হয়েছিল। এখন নতুন প্রকল্পের আবেদন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে এখনো উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।'

Comments

The Daily Star  | English

Ocean of mourners gather to pay tribute to Khaleda Zia

People from all walks of life arrive by bus, train and other modes of transport

2h ago