দুর্গোৎসব: আলফাডাঙ্গার মণ্ডপে একান্ন সতীপীঠ

ফরিদপুরের একটি মণ্ডপ। ছবি: সংগৃহীত

আজ থেকে শুরু হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। ফরিদপুরে প্রতিবছরই জাকজমকভাবে এই উৎসব উদযাপিত হয়। এবছরও তার ব্যত্যয় নেই।

অন্যান্য বারের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন জেলা শহর থেকে প্রতিমা দর্শনে এসেছেন ভক্তরা। পূজার প্রস্তুতি নিতে কয়েক মাস আগে থেকেই চলে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ।

ফরিদপুরে এবারের দুর্গাপূজায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে আলফাডাঙ্গা পৌরসভার কুসুমদী গ্রামের শ্রী শ্রী হরি মন্দিরের মণ্ডপ। এখানে পৌরাণিক কাহিনী অবলম্বনে সতীর ৫১টি পীঠের তাৎপর্য তুলে ধরে ১৫১টি প্রতিমা বানানো হয়েছে।

ভারত থেকে আসা পাঁচজন প্রতিমা শিল্পী প্রতিমাগুলো নির্মাণ করেছেন। এর পাশাপাশি তিনটি ডিজিটাল প্রতিমা করা হয়েছে। যা নির্মাণে তিন মাস সময় লেগেছে।

আলফাডাঙ্গার মণ্ডপে একান্ন সতীপীঠ। ছবি: সংগৃহীত

শ্রী শ্রী হরি মন্দিরের উপদেষ্টা কার্তিক চন্দ্র দাস বলেন, শিব ও দুর্গার বিয়ের পর দুর্গার বাবা দক্ষ রাজা একটি যজ্ঞের আয়োজন করেন। সে অনুষ্ঠানে শিবকে অপমানিত করা হয়। এ অপমান সহ্য হতে দেখে নিজেই যজ্ঞের আগুনে আত্মহুতি দেন। এ ঘটনায় ক্রোধে উন্মত্ত শিব দেবীর মৃতদেহ নিয়ে প্রলয় নৃত্য শুরু করেন। পৃথিবীর ভারসাম্য রক্ষা করার জন্য ভগবান বিষ্ণু সুদর্শনচক্র দিয়ে দেবীর দেহকে ৫১ খণ্ডে বিভক্ত করে দেন। যে যে স্থানে দেবীর দেহের অংশ পড়েছিল সেই স্থানগুলোই শক্তিপীঠ বা সতীপীঠ নামে পরিচিত।

তিনি বলেন, সতীপীঠগুলো বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তিব্বত ও ভুটানসহ বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে আছে। প্রতিটি জায়গায় গিয়ে ভক্তদের সে পীঠ দেখা সম্ভব নয়। এ জন্য এক ক্যানভাসে সতীপীঠের প্রতিমা দেখার জন্য আমাদের এ আয়োজন।

ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন কমিটি সূত্রে জানা যায়, ফরিদপুরে এ বছর ৭৫৯ মণ্ডপে দুর্গাপূজার আয়োজন করা হয়েছে। এরমধ্যে সদর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ১৯৮টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন করা হয়েছে। এরপর মধুখালীতে ১৫৭ ও  বোয়ালমারীতে ১২২টি।

আজ সন্ধ্যায় বেলতলায় ৬ষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে দূর্গা উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। সপ্তমী, অষ্টমী, নবমীর পরে ২ অক্টোবর রাতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হবে।

ফরিদপুর শহরের আকর্ষণীর পূজামণ্ডপের মধ্যে রয়েছে ফরিদপুর বাসস্ট্যান্ডে বাস মালিক গ্রুপ ও মিনিবাস মালিক সমিতির পূজা। এছাড়া টেপাখোলায় শরৎ সাহার বাড়ির মন্ডপ, নিলটুলী সার্বজনীন পূজামণ্ডপ, শোভারামপুর সাহাপাড়ার পূজামণ্ডপ, বান্ধবপল্লীর পূজামণ্ডপ, লক্ষ্মীপুর পাল পাড়া, কাঁসারি পট্টির পূজামণ্ডপ, পূর্ব খাবাসপুর পূজামণ্ডপ, ওয়াস্টার্নপাড়ার পূজামণ্ডপ অন্যতম।

ফরিদপুরের পুলিশ সুপার এম এ জলিল বলেন,  সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় করেন এইবারের দূর্গা উৎসব নির্বিঘ্নে পালনের জন্য আমরা বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করেছি। প্রত্যেক মণ্ডপে সিসি ক্যামেরাসহ পুলিশ প্রশাসন সতর্ক থাকবে। আমাদের গোয়েন্দা তথ্যে কোনো শঙ্কার তথ্য নেই।

Comments

The Daily Star  | English

Shibli Rubayat, Reaz Islam banned for life in market over scam

In 2022, asset management firm LR Global invested Tk 23.6 crore to acquire a 51 percent stake in Padma Printers, a delisted company, from six mutual funds it manages

2h ago