অনুষ্ঠানে সামনের সারিতে জুলাই যোদ্ধাদের থাকার কথা ছিল: সারজিস

সারজিস আলম। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার একটা জুলাই সনদ স্বাক্ষরিত করবে, সেই অনুষ্ঠানে এনসিপির কথা বাদই দিলাম, সেখানে তো প্রধান অতিথিদের কাতারে বা সামনের সারিতে জুলাই যোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের থাকার কথা ছিল।

তিনি আরও বলেন, কিন্তু আমরা দেখলাম রাজনৈতিক দলের একটা চুক্তির মতো, যেমন মিলনমেলা হয়, ওইরকম মিলনমেলা হয়েছে। না এখানে জুলাই যোদ্ধা বা শহীদ পরিবারের জন্য  কোনো মর্যাদার আসন আছে, না কোনো ব্যবস্থা আছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে পঞ্চগড় সদর উপজেলার শহীদ জিয়াউর রহমান ডিগ্রি কলেজ মাঠে 'টুনির হাট ফুটবল গোল্ডকাপের' চতুর্থ দিনের ফুটবল ম্যাচ উদ্বোধন করেন সারজিস আলম। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, এমন পরিস্থিতিতে যদি তাদের (জুলাই যোদ্ধাদের) ক্ষোভ তৈরি হয়, ওই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ আমাদের মনে হচ্ছে সেখানে দেখিয়েছে। কিন্তু এটাকেও অন্তর্বর্তী সরকার প্রশাসনের মাধ্যমে হোক বা নিজেরাই বলেন, অন্যভাবে ডিল করতে পারতো। কিন্তু তারা যেভাবে সেখানে লাঠিচার্জ করেছে, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুঁড়েছে— এগুলো আসলে খুবই অপ্রত্যাশিত এবং দুঃখজনক। জুলাই যোদ্ধাদের সঙ্গে এই কালচারগুলো কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।

তিনি বলেন, জুলাই সনদ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে আবারও দায়সারা ভাব দেখা গেছে। সেফ এক্সিট মানে যে, দেশ ছেড়ে পালাতে হবে এ রকম না। এখানে যে সেফ এক্সিটটা দেখা গেছে, কোনো মতে জুলাই সনদ নামকাওয়াস্তে স্বাক্ষর করে নির্বাচনের দিকে যেতে পারলেই হলো। এতে সংস্কার হোক আর না হোক, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি থাকুক আর না থাকুক, পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার এসে সেটা বাস্তবায়ন করুক আর না করুক।

এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক বলেন, আমরা বলেছিলাম, বিএনপি বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ছয়-সাতটা 'নোট অব ডিসেন্ট' (আপত্তি) দিয়ে রেখেছে। এগুলো এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে যেগুলোতে দেয়নি এ রকম ৫০টা না হয়ে পাঁচটা হওয়া বেশি প্রয়োজনীয়। এগুলো তো অন্তর্বর্তী সরকারকে ক্লিয়ার করতে হবে। গণভোটে যদি জুলাই সনদের পক্ষে রায় যায়, তাহলে ওই নোট অব ডিসেন্টগুলোর কার্যকারিতা থাকবে কি না। তখন তো এটা থাকার প্রশ্ন আসে না।

তিনি আরও বলেন, কোনো একটা দল ক্ষমতায় গিয়ে যদি বলে এই বিষয়গুলোতে আমাদের নোট অব ডিসেন্ট ছিল, আমরা এগুলো বাস্তবায়ন করব না, সে ক্ষেত্রে অবস্থানটা কী হবে, আইনি ভিত্তিটা কী হবে, ব্যবস্থাটা কী হবে, এগুলো ক্লিয়ার করা হয়নি।

'আমরা আমাদের জায়গা থেকে একদম স্পষ্ট অবস্থান জানিয়েছি। আমাদের আহ্বায়ক আগে বলেছিলেন, আমরা অনেক ছাড় দিয়েছি। ৫ আগস্টের পর থেকে ঘোষণাপত্র ছাড় দিয়েছে। কিন্তু দেখি ঘোষণাপত্র নামকাওয়াস্তে একটা লিখিত কাগজ হয়ে বসে আছে। কোনো কার্যকারিতা দেখছি না, আমাদের জায়গায় থেকে' যোগ করেন তিনি।

এনসিপির এ নেতা বলেন, এ রকম সনদের ক্ষেত্রে যদি হয়, তাহলে কিছুদিন পরে দেখা যাবে, অভ্যুত্থানটাই নেই। আবার কিছুদিন পরে দেখা যাবে, এই অভ্যুত্থানের যারা যোদ্ধা ছিলেন, রাজপথে নেমেছিল। তাদের বিভিন্নভাবে বিভিন্ন কায়দায় অভিযুক্ত করে একেকজনকে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দেওয়া হবে। বিভিন্নভাবে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই কাজগুলো করবে, আজকে থেকে ৫, ১০, ১৫ বছর পরে। আমাদের ওই জায়গাটা স্পষ্ট লাগবে। তখনই আমরা আমাদের এই জুলাই সনদে স্বাক্ষর বা এই কথাটা চিন্তা করব। যেহেতু অন্তর্বর্তী সরকার আবারও দায়সারা ভাব দেখিয়েছে, এ জন্য আমরা সেখানে অংশগ্রহণ করিনি।

Comments

The Daily Star  | English

Tribunal sends 15 army officers to jail

Chief prosecutor says government and jail authorities will decide where to house the accused

3h ago