৩ দাবিতে আন্দোলন

শাহবাগে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ-জলকামান

আন্দোলনরত শিক্ষকদের ওপর পুলিশের লাঠিচার্জ। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

দশম গ্রেডে বেতনসহ ৩ দাবিতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ অভিযমুখে যাওয়া প্রাথমিকের শিক্ষকদের লাঠিচার্জ করে, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে ছত্রভঙ্গ করেছে পুলিশ।

আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে শাহবাগ ও টিএসসির মধ্যবর্তী সড়কে এ ঘটনা ঘটে।

এতে অন্তত ১০০ শিক্ষক আহত হন। আহত শিক্ষকদের উদ্ধার করে রিকশায় তুলে বা কাঁধে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তাদের ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

পুলিশের ব্যারিকেডের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষকরা। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

পুলিশের ধাওয়ায় আন্দোলনরত শিক্ষকদের ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক-সেদিক ছুটতে দেখা যায়।

পুলিশ জানিয়েছে, আন্দোলনরত শিক্ষকরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করে।

এক শিক্ষক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমাদের শিক্ষকদের গায়ে হাত দিয়েছে পুলিশ, লাঠিচার্জ করেছে। আমার কাপড় ছিঁড়ে গেছে। আমরা এই সরকারের পুলিশের কাছে এ ধরনের আচরণ আশা করিনি।'

পুলিশের লাঠিচার্জে আহত আরেক শিক্ষক বলেন, 'পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে, আমি সামনে দাঁড়ানো ছিলাম। আমরা শিক্ষক, আমরা কোনো ঝামেলায় জড়াতে চাই না। আমার রক্ত যখন গেছে, দশম গ্রেড নিয়ে ফিরব।'

আন্দোলনরত অপর এক শিক্ষক বলেন, 'আমরা শান্তভাবে ছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের গায়ে হাত তুলেছে। আমরা যে শিক্ষক, আমাদের সেই মূল্য দেওয়া হলো না।'

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ১০০ জনের বেশি প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এখন পর্যন্ত কেউ গুরুতর আহত হননি। তাদের বেশিরভাগের হাঁটুর নিচে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে এবং কেউ কেউ সাউন্ড গ্রেনেডের আঘাতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।'

বিকেল সোয়া ৪টার দিকে ঘটনাস্থলে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্যকে দেখা গেছে। তারা সড়ক থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালনকারী ডিএমপি রমনা বিভাগের ডেপুটি কমিশনার মাসুদ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'শিক্ষকদের মধ্যে পক্ষ আছে। একটা পক্ষ আমাদের জানাল যে তারা শহীদ মিনারে ফিরে যাবেন। কিন্তু আরেকটা পক্ষকে দেখলাম পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগের দিকে চলে যাচ্ছে। তখনই আমরা অ্যাকশনে যাই। তার আগে আমরা কিছু করিনি।'

সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান ও শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি বাস্তবায়ন।

'প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ'-এর ব্যানারে চারটি সংগঠন এ আন্দোলন পরিচালনা করছে বলে জানা গেছে। সংগঠনগুলো হলো—বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (কাশেম-শাহিন), বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতি, বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি (শাহিন-লিপি) এবং সহকারী শিক্ষক দশম গ্রেড বাস্তবায়ন পরিষদ।

দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চলবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।


 

Comments

The Daily Star  | English
inside story of the attack on Daily Star office

Inside a coordinated assault on The Daily Star

Reporter recounts how vandalism, smoke, and security threats shut down the newsroom

2h ago